এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > অশোকের সিদ্ধান্তে বামফ্রন্টে বিদ্রোহ আসন্ন? ভাঙতে পারে কংগ্রেসের সাথেও? যুক্তির খুঁজে সিপিএম

অশোকের সিদ্ধান্তে বামফ্রন্টে বিদ্রোহ আসন্ন? ভাঙতে পারে কংগ্রেসের সাথেও? যুক্তির খুঁজে সিপিএম


তৃণমূল এবং বিজেপিকে আটকাতে একসাথে চলার সিদ্ধান্ত অনেকদিন আগেই গ্রহণ করেছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসক বসানোয সিদ্ধান্তের পরেই এবার শিলিগুড়ি পৌরসভায় অশোক ভট্টাচার্যের প্রশাসক হওয়ার পর কি সেই বাম এবং কংগ্রেসের সম্পর্কে ফাটল ধরতে চলেছে? রাজনৈতিক মহলে এমন জল্পনা এখন চরমে উঠেছে।

বস্তুত, প্রথমে অশোক ভট্টাচার্যকে শিলিগুড়ি পৌরসভার প্রশাসক করেছিল রাজ্য সরকার। যেখানে প্রশাসক বোর্ডে তৃণমূলের বেশকিছু কাউন্সিলারকেও সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছিল। আর এরপরই রাজ্য সরকারের এই নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেই পদ প্রত্যাখ্যান করার হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় অশোক ভট্টাচার্যকে। যার পরেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সুর নরম করে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনাকে নিজেদের নৈতিক জয় বলে দাবি করে সেই বোর্ডের প্রশাসক হন অশোক ভট্টাচার্য‌। কিন্তু অশোকবাবুর এই সিদ্ধান্ত এখন কিছুটা হলেও বিড়ম্বনায় ফেলেছে সিপিএমকে।

শুধু সিপিএম নয়, বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি এবং বামফ্রন্টের জোটসঙ্গী কংগ্রেসও এই ব্যাপারে কিছুটা ক্ষুব্ধ। একাংশের দাবি, পাঁচ বছর শিলিগুড়ি পৌরসভার বোর্ড চালিয়ে অশোকবাবু যে ভাবমূর্তি লাভ করেছিলেন, তাতে এখন তিনি রাজ্য সরকারের কথা মতই বোর্ডের প্রশাসক হয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে নির্বাচনের সময় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা অনেকটাই তাদের কাছে কঠিন হয়ে উঠবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কেননা কলকাতা পৌরসভায় মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর সেখানকার প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশাসক করার পরেই সিপিএমের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়। তবে সেই সিপিএমের দখলে থাকা শিলিগুড়ি পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেখানকার বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য সেখানে প্রশাসক পদে বসানোর পর, কোনো প্রশ্ন না তোলায় পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কিভাবে সোচ্চার হওয়া যাবে এবং জনসাধারণের মনে এই ব্যাপারে সিপিএমের সম্পর্কে ভুল ধারণা যাবে বলে মনে করছে কংগ্রেস এবং সিপিএমের অন্যান্য শরিকরা। যার ফলে এখন কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যেকার সম্পর্ক ছিন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে একাংশের।

কেন অশোকবাবু এভাবে প্রশাসক পদ নিলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন আরএসপি সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য। আর জোট শরিকদের দাবি অনুযায়ী এখন গোটা ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার বামফ্রন্টের বৈঠক ডেকেছেন চেয়ারম্যান বিমান বসু। অন্যদিকে গত 9 তারিখ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে অশোক ভট্টাচার্যের তরফে দেওয়া একটি চিঠিতে ঘিরেও এখন চরমে উঠেছে বিতর্ক। সেদিক থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেও অশোকবাবু কিছুটা হলেও চাপে পড়েছেন। তাই এই পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে কংগ্রেস এবং সিপিএমের অন্যান্যরা অভ্যন্তরীণ বৈঠকে তুলোধোনা করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর তা যদি হয়, তাহলে হয় অশোকবাবু কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, আর তা না হলে সিপিএমের অন্যান্য শরিক এবং কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক তলানিতে যেতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

যদিও এই ব্যাপারে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমেছেন অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এখন রাজ্য সরকার কোনো পৌরসভায় সরকারি আধিকারিকদের প্রশাসক না করে রাজনৈতিক নিয়োগ করছে। আবার করোনার জন্য এখন ভোটাও সম্ভব নয়। তাহলে আমরা দায়িত্ব প্রত্যাখ্যান করার পরে যদি তৃণমূলের লোকজনকে দিয়ে প্রশাসক বোর্ড করা হত, তখন তো ভোট না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আরও কঠিন অবস্থায় থাকতে হত। কঠিন পরিস্থিতিতেও দায়িত্ব ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। দায়িত্ব ছেড়ে পালাব না বলেই প্রশাসকের দায়িত্ব স্বীকার করেছি।” তবে অশোকবাবু মুখে যে কথাই বলুন না কেন, এখন বামেদের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এই ব্যাপারে কি প্রভাব পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত কি উঠে আসে, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের‌।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!