আয়কর নিয়ে বড়সড় ঘোষণা করতে পারে মোদী সরকার, আশায় বুক বাঁধছে মোদী সরকার জাতীয় November 4, 2019 দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা ফেরাতে আগেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মালা সিতারামন। কিছুদিন ধরেই ভারতবর্ষের অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে, যার অস্তিত্ব এখনো রয়ে গেছে। অর্থনৈতিক মন্দার ফলে দেশের ছোট বড় মাঝারি শিল্প সংস্থা গুলির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। অর্থনৈতিক অবস্থা খারপের ফলে মানুষ এখন ভোগ্য পণ্যের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দেশের দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে নিত্যনতুন পরিকল্পনা করে যাচ্ছেন মোদি সরকার। তবে এখনো অর্থনীতির আকাশ থেকে মন্দার কালো মেঘ কাটে। কারণ দেশের জনগণ ভোগের জন্য কোন ব্যয় করতে রাজি নয়। এমনিতেই ব্যাংকের সুদের হার তলানিতে। ফলে মানুষ আরও বিভিন্ন কারণে বাজারমুখী হচ্ছেন না। তাই এবার মোদি সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নিচ্ছেন মধ্যবিত্তদের আয় বাড়াতে। আর এই আয় বাড়াতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আয়কর কমিয়ে মধ্যবিত্তের হাতে টাকার যোগান দেবেন। অবশ্য আগেই ব্যক্তিগত আয়করের হার সুদে এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলির আয় করের বোঝা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিলেন মোদি সরকার। কিন্তু তাতেও খুব একটা যে ভালো কিছু হয়েছে তা নয়। এবার তাই নতুন করে আয় কমানোর কথা ভাবছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী মোদী সেই রকমই ইঙ্গিত দিলেন রবিবার। প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের আদিত্য বিড়লা গ্রুপের একটি অনুষ্ঠানে এ ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী দাবি জানিয়েছেন, তাঁর সরকার দেশের কর কাঠামোকে আরো জনদরদি করে তুলতে চা্য। দেশের মাটিতে বিদেশী পুঁজির নিয়ে আসা এবং কর্মসংস্থানের বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা। যদিও নতুন শিল্পে বিনিয়োগ করে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর এই মুহূর্তে কোনো সম্ভাবনা নেই। এমনিতেই দীপাবলীর উৎসবেও দেশের মানুষের গাড়ি-বাড়ির প্রতি রয়ে গেছে অনীহা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করেছে ব্যক্তিগত আয়করের ব্যবস্থাকে পুনরায় সংস্কার করা হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে পেশ হবে সাধারণ বাজেট। আর সেখানেই দেশের করদাতাদের জন্য করসীমায় বিপুল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - নতুন কর কাঠামোয় সবচেয়ে বেশি সাশ্রয় হতে পারে সেই সমস্ত করদাতার, যারা বছরে মোট 10 লক্ষ থেকে কুড়ি লক্ষ টাকার মতন আয় করেন। আয়কর দপ্তর এর উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়, বর্তমানে ভারতে ব্যক্তিগত আয়কর এর সর্বোচ্চ কার্যকারী হার 42.70 শতাংশ। এর মধ্যে সেস ও সারচার্জ রয়েছে। বর্তমান করকাঠামোয় যাদের বছরে আয় 10 লক্ষ টাকা তাকে 30 শতাংশ হারে কর দিতে হয়। গত আগস্ট মাসে নতুন প্রত্যক্ষ কর বিধি পেশ করেছেন অখিলেশরঞ্জন কমিটি। তাতে বলা হয়, 10 লক্ষ টাকার বেশি আয় হলে তাকে করহার কমিয়ে কুড়ি শতাংশ করতে হবে এবং বছরে দুই কোটি টাকার বেশি আয় করেন এমন ব্যক্তিদের থেকে 35% প্রান্তিক কর নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত আয় করার ক্ষেত্রে যাবতীয় সারচার্জ তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কর্পোরেট সংস্থাগুলির জন্য বিশাল ভাবে কর হার কমিয়ে দিয়েছিলেন। সাথে অবশ্য আরো অন্যান্য সুবিধা গুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে নজরে রেখে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী বাজেটেও ব্যক্তিগত আয় এর ক্ষেত্রে কর কমানোর পাশাপাশি একাধিক বর্তমান সুবিধা মোদি সরকার তুলে দিতে পারে। তবে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয় উর্ধ্বসীমা দু’লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই লক্ষ টাকা করা হয়েছিল। এবার সেই উর্ধ্বসীমা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিম্নগামী সুদের ফলস্বরূপ অতিরিক্ত ব্যাংক ঋণ নেওয়ার কোনো বিশেষ আর্থিক ক্ষমতা নেই পরিবারের। তাই এবার কর কমিয়ে তাদের হাতে যাতে আরো টাকা আসে সে চেষ্টাই চালানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। বর্তমানে ভারতবর্ষ চরম অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে। যার রেশ এখনো বর্তমান। এই নির্মম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থেকে উঠে দাঁড়াতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশ। তবে এই নিয়ে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার যদি সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে ভারতীয় অর্থনীতিকে দিশা দেখাতে পারে, তাহলে সময় লাগলেও এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে যাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, বর্তমানে অর্থনৈতিক কর নিয়ে যে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে তাতে দেশে ব্যবসার হার যথেষ্ট বাড়বে এবং অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। আপাতত সম্পূর্ণ ব্যাপারটি কার্যকর হওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখছে দেশের অর্থনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -