জমজমাট লোকসভা ভোট, কিন্তু বালুরঘাটে তৃণমূল না বিজেপি কার পাল্লা বেশি ভারী?নাকি ফায়দা লুটবে বাম কংগ্রেস ? উত্তরবঙ্গ রাজ্য March 25, 2019 গত 2011 সাল থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা উত্তরবঙ্গের মধ্যে তৃণমূলের গড় হিসেবে পরিচিত হলেও গত 2016 সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় একাধিক আসনে দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই হারতে হয় শাসক দলের বিধায়কদের। কিন্তু এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে একদিকে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, আর অন্যদিকে গত 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে এখান থেকে জয়ী হওয়া তৃনমূলের বিদায় সাংসদ তথা এবারে ওই বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের কাজকর্ম নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মনে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে এবারে বালুরঘাট লোকসভা আসন দখলে উদ্যোগী হয়েছে গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, এবার এখানে তৃণমূলের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের সাথে মূল লড়াই হতে চলেছে বিজেপি প্রার্থী অধ্যাপক ডঃ সুকান্ত মজুমদারের। প্রসঙ্গত, এই লোকসভা আসনে তৃণমূলের তরফে কে প্রার্থী হবে তা নিয়ে প্রথম থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র বনাম বর্তমান প্রার্থী তথা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ অর্পিতা ঘোষের অনুগামীদের মধ্যে তীব্র বিরোধ শুরু হয়েছিল। পরে অবশ্য বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী হিসেবে অর্পিতা ঘোষের ওপরই আস্থা রাখতে দেখা যায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু তাও সেইভাবে অর্পিতা দেবীকে মেনে না নেওয়ার কথা শোনা যায় বিপ্লববাবুর অনুগামীদের মধ্যে। তবে বর্তমানে সেই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূলের সভাপতি বিপ্লব মিত্র মাঠে ময়দানে নামলেও শেষ পর্যন্ত তলায় তলায় তার অনুগামীরা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে সমর্থন করবেন কিনা সেই ব্যাপারে একটা বড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ফলে এবারের নির্বাচনে এই বালুরঘাট লোকসভা আসনটি তৃণমূলের দখলের জন্য খুব একটা সবুজ সংকেত দিতে পারছে না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও। অন্যদিকে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে যে, তিনি মূলত বালুরঘাটে শাসক দলের যে দুজন নেতাকে নিয়ে ঘোড়েন তাদেরকে মানুষ এইভাবে গ্রহণ করছে না। তাই এক্ষেত্রে দলের ছাত্র, যুবর একদা প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ভোটব্যাঙ্ক বোঝা অনেক মুখ বালুরঘাটে থাকলেও কেন তাদেরকে ব্রাত্য রেখে অর্পিতাদেবী সাধারন মানুষের কিছুটা বিরাগভাজন এই দুই ব্যক্তিকে নিয়ে বালুরঘাট শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। অন্যদিকে বালুরঘাট লোকসভা আসনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই এলাকায় স্বচ্ছ মুখ হিসেবে পরিচিত জেলার ভূমিপুত্র অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদারকে প্রার্থী করে শাসকদলের বিরুদ্ধে জোর প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেইভাবে দেওয়াল লিখন সহ বুথ কমিটি না গড়ে বিজেপিও কতটা এখানে নিজেদের সংগঠনকে চাঙ্গা করে ভোটব্যাঙ্ক দখলে রাখতে পারবে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে সেদিক থেকে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে শাসক দলের অর্পিতা ঘোষ এবং বিরোধী দল বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের মধ্যে লড়াই হলেও কিছুটা পিছিয়ে থাকা বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের টানা চারবারের সাংসদ তথা বাম প্রার্থী রনেন বর্মন এই তৃনমূল বিজেপির ভোট কাটাকাটিতে শেষ হাসি হাসেন কিনা সেই ব্যাপারেও লক্ষ্য রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, শাসক দল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল এবং বিরোধী দল বিজেপির দলীয় সংগঠন এখনও পর্যন্ত সেইভাবে গড়ে না ওঠা – এই দুয়ের জন্য শেষ পর্যন্ত কে বাজিমাত করে, নাকি তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বামেদের রনেন বর্মন কিংবা কংগ্রেসের সাদিক সরকার উঠে আসে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে আগামী 23 মে ভোটবাক্স খোলার পরই। ততক্ষণ অপেক্ষা করতেই হবে আমাদের সকলকে। আপনার মতামত জানান -