বাম-কং জোটের পথে কি বড় বাধা হয়ে উঠতে চলেছে বাম-শরিকরা? আলোচনার আগেই আসন দাবি ঘিরে জটিলতা কংগ্রেস বামফ্রন্ট রাজনীতি রাজ্য January 11, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – হাতে আর মাত্র কয়েকটা মাস বাকি। ইতিমধ্যেই তৃণমূল এবং বিজেপি নিজেদের নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।এই দুই দলের মধ্যেই এবারের বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান লড়াই হবে বলে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই তৃণমূল এবং বিজেপিকে ফাঁকা ময়দান ছেড়ে দিতে নারাজ বাম এবং কংগ্রেস। তাই দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু গত 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলেও, 2019 সালে বেশকিছু আসনে সমস্যা থাকার কারণে তারা ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করতে পারেনি। যার ফল অত্যন্ত শোচনীয় হয়েছে বাম এবং কংগ্রেসের ক্ষেত্রে। আর এই পরিস্থিতিতে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে যাতে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই দিতে পারে, তার জন্য ইতিমধ্যেই দুই পক্ষের তরফ থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাম এবং কংগ্রেসের জোটের ক্ষেত্রে কি সব থেকে বড় অন্তরায় হতে চলেছে বাম শরিকদের বেশকিছু প্রস্তাব! এখন তা নিয়ে রীতিমত আলোড়ন পড়ে গিয়েছে দুই দলের অন্দরমহলে। জানা গেছে, জোট নিয়ে আলোচনার আগেই বামফ্রন্ট শরিক আরএসপির পক্ষ থেকে আলিপুরদুয়ারের চারটি বিধানসভা আসনের লড়াই করার দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার আরএসপি জেলা কমিটির বৈঠকে দলের কর্মীরা এই দাবি তুলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই জোট প্রস্তাব আসার আগেই যদি এইভাবে নিজেদের আসন দখল করার ব্যাপারে তাদের দাবি জানাতে শুরু করেন, তাহলে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যদি এই সমস্ত আসলে লড়াই করার জন্য কোনো ইচ্ছা থাকে, তাহলে তা আগেভাগেই ভেস্তে যেতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 1977 সাল থেকেই আলিপুরদুয়ারে পাঁচটি বিধানসভার মধ্যে চারটি বিধানসভ অর্থাৎ আলিপুরদুয়ার, কালচিনি, কুমারগ্রাম এবং মাদারিহাটে আরএসপির পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। বাকি একটি বিধানসভায় লড়াই করত সিপিএম। কিন্তু 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার আসনে সিপিএমের প্রার্থী নির্মল দাসকে সমর্থন না করে কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বরঞ্জন সরকারকে সমর্থন করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই তখন বামেদের ভোট ভাগাভাগি হওয়ার কারণে তৃণমূল কংগ্রেস এই আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে জয়লাভ করে। আর এবার কংগ্রেসের সঙ্গে যখন জোটের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে বামফ্রন্ট, তখন আগেভাগেই এই জেলার চারটি বিধানসভা আসনের প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হল। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় এখন ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে আরএসপি সর্বভারতীয় সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “আগামী বিধানসভা ভোটে রাজ্যে বাম কংগ্রেসের কে কোথায় কোন আসনে লড়বে, তা নিয়ে কোনো আলোচনা শুরু হয়নি। তবে শনিবার আলিপুরদুয়ারে আমাদের দলের জেলা কমিটির বৈঠকে কর্মীরা আলিপুরদুয়ারের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনে লড়াই করার দাবি তুলেছেন। হয়ত আমাদের চারটি আসনেও হতে পারে। আলিপুরদুয়ারে আমাদের বরাবর চারটি আসনের ঐতিহ্য আছে। সেই ঐতিহ্যের দাবি তুলেছেন কর্মীরা। এটা সকলেরই মত। তৃণমূল এবং বিজেপি দুই সরকার আমাদের প্রধান শত্রু।” পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যদি এভাবেই গোটা পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে যেতে শুরু করে, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। যা বাম এবং কংগ্রেস জোটের ক্ষেত্রে বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেই দাবি একাংশের। কেননা কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও এই সমস্ত আসলেই প্রার্থী দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে। আর যদি কংগ্রেস আরএসপি পক্ষ থেকে দাবি তোলা এই চারটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানায়, তাহলে তা নিয়ে বাম শরিক আরএসপি যে ব্যাপক আপত্তি তুলবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের অনেক জায়গাতেই বামেদের শরিক দলের প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ এবং কংগ্রেসের ইচ্ছা নিয়ে তৈরি হতে পারে দূরত্ব। যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেসের জোটের ক্ষেত্রে প্রধান কাটা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই সমস্যা সমাধান করতে বামফ্রন্ট তাদের শরিক দলকে কতটা ম্যানেজ করতে পারে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই জোট কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -