এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বামেদের খাসতালুকে গেরুয়াঝড় থামিয়ে শেষ হাসি হাসবে তৃণমূলই? মরিয়া প্রস্তুতি ঘাসফুল শিবিরের

বামেদের খাসতালুকে গেরুয়াঝড় থামিয়ে শেষ হাসি হাসবে তৃণমূলই? মরিয়া প্রস্তুতি ঘাসফুল শিবিরের


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিগত বাম সরকারের আমলে বালুরঘাট ছিল বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি দলের শক্ত ঘাঁটি। তবে 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এখানে জয়লাভ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর পাঁচ বছর বেশ ভালো মতো গেলেও, 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিজয়রথ থমকে যায়। যেখানে জয়লাভ করেন আরএসপির বিশ্বনাথ চৌধুরী। বর্তমানে তিনি বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। কিন্তু একদিকে বিজেপির উত্থান এবং অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস মরণপণ চেষ্টা করছে, এবার বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্র দখল করতে। যার কারণে এখানে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট বিধানসভায় বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি চেষ্টা করছে, বালুরঘাট বিধানসভায় ভালো ফল করতে। তবে কোনোমতেই গেরুয়া ঝড়কে প্রভাব বিস্তার করতে দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে আরএসপি এবং অন্যদিকে বিজেপিকে কুপোকাত করতে এখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে জয়লাভ করার জন্য নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি।

তৃণমূলের দাবি, গত পাঁচ বছরে এই কেন্দ্রে তাদের বিধায়ক না থাকলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার উন্নয়নমূলক কর্মসূচি শুরু করেছে। বালুরঘাটের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প হয়েছে। এছাড়াও আত্রেয়ী নদীর ওপর পাগলিগঞ্জ সেতু বানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার বলে দাবি করছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনে তা লিপিবদ্ধ করে নিচ্ছেন তৃণমূলের কর্মীরা।

অর্থাৎ কোনোমতেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্র হাতছাড়া করতে নারাজ ঘাসফুল শিবির। তবে প্রচারে গিয়ে একদিকে যেমন বিজেপির জনবিরোধী নীতির কথা তুলে ধরেছেন তারা, ঠিক তেমনই গত 2016 সালে এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করা বিশ্বনাথ চৌধুরীকে যে কোনভাবেই এলাকায় দেখা যায়নি, সেকথাও বলতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের কর্মীদের।

এদিন এই প্রসঙ্গে চিঙ্গিশপুরের বাসিন্দা তন্ময় মাহাতো বলেন, “আমাদের এলাকায় সেতু করেছে, একাধিক রাস্তা বানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের কেবল ভাওতা দিয়ে যাচ্ছে।” অন্যদিকে চকভৃগুর বাসিন্দা শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার থেকে আমি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়েছি। সেই কার্ড দিয়ে বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে চিকিৎসা করিয়েছে। চিকিৎসার খরচ চার লক্ষ টাকা ছিল। কিন্তু আমার এক টাকাও লাগেনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এখন থেকেই প্রচার করার প্রক্রিয়া শুরু হলেও ঘাসফুল শিবিরকে কটাক্ষ করেছে বাম এবং বিজেপি। এদিন এই প্রসঙ্গে বালুরঘাট বিধানসভার বর্তমান বিধায়ক আরএসপির বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “আমি যথেষ্ট কাজ করেছি। একাধিক শ্মশানের সংস্কার, পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছি। হিলিতে দমকল কেন্দ্র স্থাপনের জন্য একাধিকবার রাজ্যের কাছে দাবি জানিয়েছি। রাজ্য তা করতে দেয়নি। আমি অনেক কাজ করতে চাইলেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি শুভেন্দু সরকার বলেন, “কেন্দ্রের প্রকল্পগুলোকে রাজ্য নিজেদের নামে চালিয়েছে। তৃণমূল নেতারা যেভাবে কাটমানি খেয়েছেন, তা সাধারণ মানুষ জানেন।” তবে বিরোধীদের এই অভিযোগকে অবশ্য সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের দাবি, উন্নয়নের মধ্য দিয়ে গত পাঁচ বছরে বালুরঘাট পরিচালিত হয়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কো অর্ডিনেটর সুভাষ চাকী বলেন, “গত 5 বছরে বালুরঘাট বিধানসভা এলাকায় রাজ্য প্রচুর উন্নয়ন করেছে। লোকসভায় বিজেপি প্রার্থী জেতার পড়ে এখনও পর্যন্ত ওরা কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি‌। শুধু ভাঁওতা দিয়ে গিয়েছে। আমরা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভাওতাবাজি আর আমাদের রাজ্য সরকারের উন্নয়নকে তুলে ধরে মানুষের কাছে ভোট চাইব।”

স্বাভাবিক ভাবেই বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্র এখন শাসক থেকে বিরোধী সকলের কাছে পাখির চোখ হয়ে গিয়েছে। 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এই কেন্দ্রে পরাজিত হওয়ার পর 2019 সালে যেভাবে গেরুয়া ঝড় বইতে শুরু করেছে, তাতে ঘাসফুল শিবির এখন আগামী দিনে এই কেন্দ্র দখলের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে কারা বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে থাকে, তা ভোটবাক্স খোলার পরই পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!