প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দেশজুড়ে কৃষি আন্দোলন এই মুহূর্তে চরমে উঠেছে। বেশ কিছুদিন আগেই তিনটি কৃষি আইন চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই তিনটি কৃষি আইন কৃষকদের পক্ষে অনুপযুক্ত বলে দাবী কৃষকদের। এতিমধ্যেই এই আইন প্রত্যাহারের দাবীতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষকরা পৌঁছে গিয়েছেন দিল্লি সীমান্তে এবং সেখানেই তাঁরা গত একমাস ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। অন্যদিকে রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবার কৃষি আন্দোলনকে হাতিয়ার করে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের যুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে বড়সড় অস্ত্র প্রয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

কৃষি আন্দোলন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার স্বভাবতই চাপে রয়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও কৃষি আইনকে মোটেই প্রত্যাহার করতে রাজি নয় কেন্দ্রীয় সরকার আর সে বার্তা বারংবার দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। কিন্তু কৃষকরা তাঁদের দাবীতে অনর। এদিকে বাংলা থেকেও তৃণমূলের 5 সাংসদ এবার পৌঁছে গেলেন কৃষকদের পাশে। সেখান থেকেই 5 সাংসদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনা করেন কৃষক নেতাদের সঙ্গে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ রাজ্যে গেরুয়া শিবিরকে কোণঠাসা করতে এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতে তুলে নিচ্ছেন কৃষক আন্দোলনের অস্ত্র।

এবং সেই অস্ত্রকে আরও শান দিতে দিল্লি পৌঁছেছেন 5 তৃণমূল সাংসদ। অন্যদিকে রাজ্যের দ্বিতীয় দফায় এসে অমিত শাহ মধ্যাহ্নভোজন সেরেছিলেন এক কৃষকের ঘরে। তাই নিয়েও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছিলেন, গোটা দেশের কৃষক যেখানে আন্দোলন করছে দিল্লির রাজপথে, সেখানে কৃষক পরিবারে মধ্যাহ্নভোজন সারছেন অমিত শাহ। এর জবাবে অবশ্য গেরুয়া শিবির থেকে বিশেষ কিছু প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি। অন্যদিকে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ইতিমধ্যেই রাহুল গান্ধী তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি 2 কোটি মানুষের স্বাক্ষর নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে অভিযান করতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে।

পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনও কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। প্রথম থেকেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদি সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। এই নিয়ে আকালি শিরোমণি দলের নেতৃত্বের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন বলে জানা যায়। তবে রাজ্যজুড়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে যখন তৃণমূল বিজেপির রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে, ঠিক সেইসময় বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলতে কৃষি আন্দোলনকে হাতিয়ার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে গেরুয়া শিবিরও পিছিয়ে থাকার নয়। ইতিমধ্যেই তাঁরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কৃষি আন্দোলনের পক্ষে মিছিল এবং মিটিং চালাচ্ছে। পারতপক্ষে গেরুয়া শিবিরকে আটকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলনকেই ব্যবহার করার দিকে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আপাতত দেখার, দেশের কৃষি আন্দোলন এ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলতে পারে কিনা!