এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বাংলায় ভরাডুবির দায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের? নেতা-কর্মীদের ক্ষোভে ঘরে-বাইরে অস্বস্তি বিজেপির!

বাংলায় ভরাডুবির দায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের? নেতা-কর্মীদের ক্ষোভে ঘরে-বাইরে অস্বস্তি বিজেপির!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে নিজেদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি তারা বলতে শুরু করেছিলেন, রাজ্যে এবার বিজেপি সরকার গঠন করছে। আর হেভিওয়েট শীর্ষ নেতাদের এই কথায় বিশ্বাস করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিলেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জেলা নেতৃত্ব। তবে বাংলা যে শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দখলেই রয়েছে, তা ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

আর এরপর থেকেই বিজেপির অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। কোথাও প্রার্থীও নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন, আবার কোথাও বা নেতাদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন দলের অনেক নেতৃত্ব। আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তথাগত রায়ের মত বর্ষিয়ান নেতা পরোক্ষে রাজ্য নেতাদের পাশাপাশি কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। যা বিজেপির কাছে যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আর এই পরিস্থিতিতে এবার জলপাইগুড়ি জেলায় বৈঠক করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়ে জেলা নেতাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হল বিজেপির রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসুকে। সূত্রের খবর, ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে এদিন জলপাইগুড়িতে আসেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। জলপাইগুড়ি জেলা নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন তিনি। আর সেই বৈঠকেই জেলা নেতাদের পক্ষ থেকে অনেকে ভোটের আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলায় আসা এবং তাদের নানা বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা ভোটের আগে নানা কথা বলে গেলেও এখন তারা কোথায়, তা নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন।

স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে জেলা নেতাদের পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করায় রীতিমত অস্বস্তিতে পড়ে যান রাজ্য বিজেপির নেতা সায়ন্তন বসু। এদিন এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির এক নেতা বলেন, “ভোটের আগে এক নেতা আমাদের বলেছিলেন, দল এমনিতেই ভোটে জিতবে। কারও সাহায্যের প্রয়োজন নেই। সেই নেতা একবার জেলায় আসুন।” স্বাভাবিক ভাবেই ঘরে-বাইরে ভোটের ভরাডুবি হওয়ার পর বিজেপি নেতৃত্বরা যে যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে পড়ে গিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এতদিন রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে দেখা যেত। কিন্তু এবার সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে জেলা নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ওঠায় অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে।কিন্তু ঠিক কোন কোন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে তাদের এই অভিযোগ? এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির এক নেতা বলেন, “আমরা পরিস্কার বলেছি কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন এবং আমাদের রাজ্যের সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর বর্মনকে জেলায় আসতে হবে। ওনারাই প্রার্থী ঠিক করেছেন। কৌশল ঠিক করেছেন। তাই তাদের জেলায় এসে হারের কারণ বলতে হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অর্থাৎ জেলা বিজেপি নেতৃত্বের এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট যে, তাদের কথামত প্রার্থী চয়ন হয়নি। যার কারণে পরাজয় হয়েছে। তাই পরাজয়ের দায়ভার এখন যারা প্রার্থী ঠিক করেছেন, তাদেরকেই নিতে হবে। স্বাভাবিক ভাবেই সায়ন্তন বসুর কাছে এই দাবি জেলা নেতৃত্ব তুলে দেওয়ায় বিজেপির মত সাংগঠনিক এবং শৃঙ্খলাপরায়ন দল কিভাবে নীচুতলার কর্মীদের কথা না শুনে প্রার্থী ঠিক করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে পরিস্থিতি যখন হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে শুরু করেছে, তখন জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে এই কথা শুনে তার রিপোর্ট তিনি রাজ্য নেতৃত্বের হাতে তুলে দেবেন বলে জানিয়েছেন সায়ন্তন বসু।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল থেকে বা অন্যান্য দল থেকে ভোটের আগে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। আর যারা নতুন দলে এসেছিলেন, তাদের অনেককে প্রার্থী করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। যার ফলে যে খুব একটা ভাল হয়নি, তা ফলাফলের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আর তারপরেই বিজেপির অন্দরে যারা প্রার্থী ঠিক করেছেন এবং ভোট প্রচারের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন, তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

আর এবার রাজ্য নেতাদের সামনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়ে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর যদি ঘরে-বাইরে এভাবে চাপে পড়তে হয় রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপিকে, তাহলে তারা কিভাবে তৃণমূলকে চাপে রাখবেন, এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!