প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  গত 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় ভালো ফলাফল করার পরেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রশান্ত কিশোরের উপর। আর প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব নেওয়ার পর একের পর এক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলকে জনসংযোগ করার রাস্তায় হাঁটাতে শুরু করেন। তবে সাম্প্রতিক কালে সেই প্রশান্ত কিশোরের জন্য একের পর এক তৃণমূলের হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধি দলত্যাগ করতে শুরু করেছেন বলে দাবি করেন একাংশ।

ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী সহ একাধিক তৃণমূল বিধায়ক এবং হেভিওয়েট নেতারা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। আর শুভেন্দু অধিকারীর মত তৃনমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা বিজেপিতে যোগদান করায় ঘাসফুল শিবির অনেকটাই চাপে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে এই বড় মাপের যোগদান করিয়ে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

যেখানে আগামীদিনে বিজেপি বাংলা শাসন করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে প্রশান্ত কিশোরকে নির্বাচনী বৈতরণী পার করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রশান্ত কিশোর ফেল হয়ে যাবেন! সাধারণত প্রশান্ত কিশোর তেমনভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন না। কিন্তু এবার বাংলার নির্বাচন নিয়ে টুইট করতে দেখা গেল তাকে।

সূত্রের খবর, এদিন একটি টুইটে প্রশান্ত কিশোর লেখেন, “আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি দুই আসনের অংক পার করতে পারবে না।” পাশাপাশি তাঁর এই টুইট সকলে সেভ করে যাতে রাখেন, তার কথা বলে আগামীদিনে যদি তার এই কথা না মেলে, তাহলে তিনি টুইটার থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন বলেও জানিয়ে দেয় তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশান্ত কিশোরের এইভাবে বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার ঘটনাতে এখন টালমাটাল বঙ্গ রাজনীতি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপির পক্ষ থেকে মুকুল রায় থেকে শুরু করে নানা নেতারা দাবি করছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল দুই অঙ্কের বেশি আসন পাবে না। আর শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পর বিজেপি নেতাদের সেই আত্মপ্রত্যয় আরও দ্বিগুন ভাবে বাড়তে শুরু করেছে। তাদের আশা, এই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে তৃণমূলের বহু কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধিরা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় বিজেপিতে নাম লেখানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তাহলে প্রশান্ত কিশোরকে এনে কি লাভ হল! অবশেষে বিজেপি নেতাদের সেই দাবিতে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির দুই অঙ্কের বেশি আসন পাবে না বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করার পর তৃণমূলের অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, এরপর দল আর কিভাবে সাফল্য পাবে! তবে তৃণমূল কংগ্রেসের সেই সমস্ত কর্মী-সমর্থকদের মনে হতাশা যাতে গ্রাস না করে, তার জন্যই প্রশান্ত কিশোরকে এবার সরাসরি ময়দানে নামতে দেখা গেল। যেখানে তার মত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা কার্যত চ্যালেঞ্জ করে বসলেন ভারতীয় জনতা পার্টিকে।

যেখানে তার কথা না মিললে তিনি কাজ ছেড়ে দেবেন বলেও জানিয়ে দিলেন এই নির্বাচনী রণনীতিকার। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির পক্ষ থেকে যখন বাংলায় সরকার গঠন করার ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয় মনোভাব পোষণ করা হচ্ছে, তখন প্রশান্ত কিশোরের এই ধরনের দাবি নিঃসন্দেহে গুঞ্জন ছড়িয়ে দিল‌। সব মিলিয়ে প্রশান্ত কিশোর তার কথা কতটা রাখতে সক্ষম হন, তা আগামী ভোটবাক্স খোলার পরই প্রমাণিত হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।