বাংলায় সমস্যা আছে বলেই সাত দফায় ভোট, “স্পর্শকাতর” ইস্যুতে বড় বার্তা কমিশনের কলকাতা রাজ্য April 2, 2019 অন্যান্য রাজ্যে এক থেকে দু দফায় লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হলেও বাংলায় কেন সেটাকে সাত দফা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হল, তা নিয়ে ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই সরব হতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর শাসক দলের তরফে এই বক্তব্য শুনে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরাও। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্ররোচনায় গণতন্ত্রকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। আর তাই এবার এই সাত দফায় নির্বাচন ও কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকায় তাদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হওয়াতেই শাসক দলের নেতাকর্মীরা আশঙ্কা থেকেই এই ধরনের কথা বলতে শুরু করেছেন। কিন্তু সত্যিই কেন বাংলায় সাত দফায় নির্বাচন? সোমবার নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে এই প্রসঙ্গে জানান, “পশ্চিমবঙ্গে কিছুটা হলেও সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে এখানে সাত দফায় ভোট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে নির্ভয়ে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হবে।” এদিকে রবিবার কলকাতায় এসে সেদিনই সন্ধ্যায় রাজ্য মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের সমস্ত পরিস্থিতি বুঝে নিয়ে সোমবার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেন কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। সূত্রের খবর, এদিন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে বিবেক দুবের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায় এবং সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী। আর সেখানেই রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, “পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভালো। কিন্তু বিজেপি নেতারা এমন সব কিছু মন্তব্য করছেন যাতে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।” জানা গেছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকদের কাছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং সায়ন্তন বসুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের পর এদিন কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করতে এসে সেখানে উপস্থিত সিইও আরিজ আফতাবকে দেখে সিইও থাকলে তারা কোনো বলবেন না বলে জানিয়ে দেন বিজেপি প্রতিনিধিদলে থাকা মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদাররা। আর এরপর সেখান থেকে সিইও চলে গেলে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করার পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কিছু অফিসারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ করে বিজেপি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একইভাবে সিপিএমের পক্ষ থেকে উপস্থিত রবিন দেব ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও, এসপি, হলদিয়া ও নন্দকুমার থানার দুই অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় তার জন্য তারা কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বলে জানান কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য। তবে এদিন প্রায় সমস্ত বিরোধীদলের গলাতেই রাজ্যের প্রতিটি বুথকে স্পর্শকাতর করার ঘোষনার দাবি তোলা হয়েছে। কিন্তু সমস্ত রাজনৈতিক দলের কথা শোনার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে আমি সন্তুষ্ট। তারা যে যে অভিযোগ করেছে আমি তাদের আশ্বাস দিয়েছি যে, এর বিরুদ্ধে কমিশন নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। আর সব বুথকে স্পর্শকাতর বুথ হিসেবে ঘোষণা করা যায় না। কিছু সাধারন ক্যাটাগরি, কিছু স্পর্শকাতর এবং কিছু অতি স্পর্শকাতর বুথ হয়। কোন বুথ স্পর্শকাতর হবে তার একটা মাপকাঠি আছে। সব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে স্পর্শকাতর এবং অতি স্পর্শকাতর বুথ ঠিক করা হয়।” এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর আরিজ আফতাবকে সাথে নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তর নবান্নে চলে যান কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক। আর এখানেই একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে যে, নির্বাচনের দামামা বেজে যাওয়ার পর এইভাবে রাজ্য প্রশাসনের সদরদপ্তরে যেতে পারেন কি কোনো নির্বাচনী কর্তা? সব মিলিয়ে দিনভর একের পর এক বৈঠকে কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছে উঠে আসা নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এখন এই কেন্দ্রের পুলিশ পর্যবেক্ষক ঠিক কী পদক্ষেপ নেয় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -