এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ভবানীপুরে কি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করতে চলেছেন মমতা? বিরোধীদের ওয়াকওভার দেওয়া নিয়ে জল্পনা!

ভবানীপুরে কি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করতে চলেছেন মমতা? বিরোধীদের ওয়াকওভার দেওয়া নিয়ে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং একসময়কার সতীর্থ তথা বর্তমান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পরাজিত করার জন্য নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়‌। সেদিক থেকে প্রতিবার নিজের ঘরের কেন্দ্র ভবানীপুরে তিনি প্রার্থী হলেও, এবার যে প্রতিপক্ষকে জবাব দেওয়ার জন্যই জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘরে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

অন্যদিকে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসা তৃণমূল নেত্রীকে আগামী 6 মাসের মধ্যে যে কোনো একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করতে হবে। সেদিক থেকে তার অত্যন্ত ভরসার জায়গা এই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র।

সম্প্রতি ভবানীপুরের বিধায়ক তৃণমূলের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন। আর তারপরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, সেই ভবানীপুরে লড়াই করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কাকে প্রার্থী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে কি ভবানীপুরে প্রার্থী দিতে চাইছে না কংগ্রেস? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর একটি প্রস্তাব নিয়ে এখন ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে।

যাকে কেন্দ্র করে অনেকেই বলছেন, আবার নতুন করে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে সখ্যতা তৈরি হতে পারে। অধীর রঞ্জন চৌধুরীর মতো ঘোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী তথা তৃণমূল বিরোধী নেতার এই ধরনের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন। বলা বাহুল্য, এবারের নির্বাচনে বহু চেষ্টা করেও একটি আসনও দখল করতে পারেনি বাম এবং কংগ্রেস। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন, সেখানে তাকে ওয়াকওভার দেওয়া নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই সিদ্ধান্ত এখন রীতিমত আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয়বার বাংলার ক্ষমতা দখল করার পরেই সারাদেশে তৃণমূল নেত্রীর পক্ষে হাওয়া তীব্র হয়েছে। এক্ষেত্রে সমগ্র বিরোধী দলের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদী বিরোধীতার প্রধান মুখ বলে দাবি করা হচ্ছে। অর্থাৎ বাংলা সহ সারা ভারতবর্ষে বিজেপি বিরোধীতার দিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসে গ্রহণযোগ্যতা যে বাড়ছে, তা বলাই যায়। আর এই পরিস্থিতিতে গত বিধানসভা নির্বাচনে সেভাবে কংগ্রেস জোট করেও, কোনো ভালো ফল করতে পারেনি। যা নিয়ে কিছুটা আফসোসের সুর শোনা গেছে তৃণমূলের অনেক নেতার গলাতেও। বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

সেদিক থেকে বাম এবং কংগ্রেস যদি অপেক্ষাকৃত ভালো ফল করত, তাহলে অনেক ভালো হত বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহল। আর এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী না দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস নেতার সিদ্ধান্ত রীতিমত জল্পনা তৈরি করছে। অনেকে বলছেন, অধীর রঞ্জন চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কট্টর বিরোধী। সেদিক থেকে তিনি রাজনৈতিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একচুলও জায়গা ছেড়ে দিতে কোনোকালেই রাজি হননি।

কিন্তু বর্তমান বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পারছেন এই কংগ্রেস নেতা। এক্ষেত্রে ব্যাপক ভরাডুবির পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে তারা যে নিজেদের ক্ষয়িষ্ণু সংগঠনকে আর সামনে নিয়ে আসতে চায় না, আর সেই কারণেই যে তাদের এই সিদ্ধান্ত, তা কিছুটা স্পষ্ট। তবে এখনও পর্যন্ত দলীয় স্তরে এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর এই ভাবনাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা শুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন, তা সুনিশ্চিত। তবে কংগ্রেসের এমন সিদ্ধান্ত বা ভাবনা হয়ে থাকলে, তা অবশ্যই শুভ রাজনৈতিক সংকেত।” কিন্তু তাহলে কি তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত প্রভাবশালীর কাছে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই ওয়াকওভার দিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেসকে?

এদিন এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “এটা কোনো রাজনৈতিক আঁতাত নয়। প্রতিকী একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে না চাইলেও, সামশেরগঞ্জ বা শান্তিপুরের মত আসনে আমরা লড়াই করব।” বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বুঝতে পারছেন, এই সময় যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া হয়, তাহলে তাদের পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত। সেদিক থেকে ভোট কাটাকুটিতে আরও বেশি প্রার্থী দিলে তাদের মুখ পুড়বে। তাই প্রার্থী না দিয়ে নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে চাইছেন অধীরবাবু।

পাশাপাশি এর পেছনে আরও একটি কারণ রয়েছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বারবার দাবি করা হয়েছে, বাম এবং কংগ্রেস ভোট কাটার চেষ্টা করছে এক্ষেত্রে তারা বিজেপির সুবিধা করে দিতে চাইছে। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে ভবানীপুর আসনে লড়াই করছেন, সেখানে যাতে পরবর্তীতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে কোনোরকম কটাক্ষ করার রাস্তা বেছে নেওয়া না হয়, তার জন্যই কার্যত তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে কাউকে প্রার্থী না করে শাসকদলের পালে হাওয়া দেওয়ার চেষ্টা করছে হাত শিবির বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, শেষ পর্যন্ত ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!