এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুকুলের সুরে সুর মিলিয়ে এবার তৃণমূলকে নিয়ে বড়সড় দাবি ভারতী ঘোষের

মুকুলের সুরে সুর মিলিয়ে এবার তৃণমূলকে নিয়ে বড়সড় দাবি ভারতী ঘোষের


 

দুজনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একজন ছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড, অপরজন এসপি অফিসার। একজন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “মা” বলে অভিহিত করতেন, অপরজন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “দিদি” বলে অভিহিত করতেন। কিন্তু সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “মা” বলা ভারতী ঘোষ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “দিদি” বলা মুকুল রায় তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লিখিয়েছেন।

একসময় তাদের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা সব সময় লেগে থাকলেও লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই ভারতী ঘোষ বিজেপিতে যোগ দিয়ে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছেন। তবে তার অবশ্য অনেকদিন আগেই বাংলার রাজনীতির চাণক্য হিসেবে পরিচিত মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়িয়ে বিজেপিতে যোগদান করে গেরুয়া শিবিরের বীজ বপন করতে লেগে পড়েছিলেন।

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে সেই মুকুল রায়ের বুদ্ধিমত্তাকে বাংলায় বিজেপি অভূতপূর্ব ফলাফল করেছে বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। আর এবার নিজের প্রাক্তন দুই ঘনিষ্টের কাছে বিদ্ধ হতে হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে রাজ্যের রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকারের সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যপাল সকল প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি এবং জনপ্রতিনিধিদের ডাকলেও মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়ার জন্য সেই জেলার প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা রাজ্যপালের ডাকা এই বৈঠকে যেতে পারবেন না। এতে রাজ্যের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার।

এছাড়াও দুর্গা কার্নিভাল থেকে শুরু করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা, বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের মনোভাবে বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন রাজভবনের প্রধান ব্যক্তি। রাজ্য বনাম রাজ্যপালের এই সম্পর্কের কথা তুলে ধরে এবার রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা গেল সেই ভারতী ঘোষ এবং মুকুল রায়কে। তারা দাবি করলেন, সামনের নির্বাচনে তৃণমূল বলে আর কিছু থাকবে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, এদিন হায়দ্রাবাদ যাওয়ার পথে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, “রাজ্যপালের সঙ্গে দুর্ব্যবহার চলছে। এটা সংবিধানের উপর আক্রমণ। রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তার সঙ্গে রাজ্য সরকার যে ব্যবহার করছে, তা সংবিধানকে অপমান করার সমান। এই রাজ্যে আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই।” পাশাপাশি মুকুল রায়ের সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ বলেন, “রাজ্যে আইনের কাঠামো ভেঙে পড়েছে। মানুষ এখন বিধানসভা নির্বাচনের অপেক্ষা করছেন। নির্বাচন এলে তৃণমূল বলে আর কিছু থাকবে না। সংবিধান ভেঙে দিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

এতদিন মুকুল রায় তৃণমূলকে নিয়ে নানা কটাক্ষ করলেও এবার তার সুরে সুর মিলিয়ে ভারতী ঘোষও আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে বলে জানিয়ে দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলের একাংশ কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেছে, এবার হয়ত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সিঁদুরে মেঘ দেখতে পারে।

কেননা একদিক থেকে প্রশাসনিক ব্যক্তি হিসেবে ভারতী ঘোষ এতদিন তৃণমূলকে অনেক সহযোগিতা করেছেন, অন্যদিকে রাজনৈতিক দিক থেকে মুকুল রায়ের বুদ্ধিমত্তায় তৃণমূল চলেছে। ফলে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এতদিন তৃণমূলকে সাহায্য করলেও এখন তারা বিজেপিতে চলে আসায় তারা যেভাবে সেই তৃণমূলকে বিপন্ন করে দেওয়ার ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাতে তাদের সেই মনোভাবেই সীলমোহর পড়তে পারে বলে দাবি সমালোচক মহলের।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোটের ফল শেষ কথা বলবে। তাই এই গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক তরজা হিসেবে ধরে নিয়ে মুকুল রায় এবং ভারতী ঘোষের কথাগুলো বাস্তবের সঙ্গে মেলে কি না, সেদিকেই নজর থাকবে সকল রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!