এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > খাল কেটে কুমির নিয়ে আসাদের একজোট করলেই বিধানসভার বাজিমাত! হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রীর নিদান

খাল কেটে কুমির নিয়ে আসাদের একজোট করলেই বিধানসভার বাজিমাত! হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রীর নিদান

 

উত্তরবঙ্গের মধ্যে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ছিল কোচবিহার জেলা। মদনমোহন ঠাকুরের আশীর্বাদ নিয়ে প্রতিবারই তৃণমূল নেতারা এখানে তাদের জয় সহজ করে নিয়েছিলেন। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে সেই মদনমোহন ঠাকুরের আশীর্বাদ পাননি তৃণমূল নেতারা। লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া পরেশ অধিকারী সেনাপতি ছিলেন তৎকালীন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পরেশবাবুকে নিয়ে জেলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত নিয়ে চষে বেরিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু তাও জয় আসেনি। জয় পেয়ে গেছেন প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা বর্তমান বিজেপির নিশীথ প্রামানিক। আর তৃণমূল এখানে জয় না পাওয়ার পর থেকে যতটা না তৃণমূলের ভাগ্য খারাপ হয়, তার থেকে বেশি ভাগ্য খারাপ হতে থাকে সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের একের পর এক রোষানলে পড়তে শুরু করেন তিনি। দ্রুত উত্থান ঘটতে শুরু করে তার বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত পার্থপ্রতিম রায়ের।

পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে যায় যে জেলায় তিলেতিলে সংগঠন গড়ে তোলা রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে জেলা সভাপতির পদ থেকেও সরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মন্ত্রকও কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছিল। আর এহেন একটা পরিস্থিতিতে হঠাৎই হৃদরোগের যন্ত্রণা অনুভব করেন সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

সম্প্রতি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই তার চিকিৎসা হয়। অবশেষে কিছুটা হলেও সুস্থ হয়ে উঠলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর সুস্থ হওয়ার পরেই রবিবার ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। যেখানে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে হারার কথা তুলে ধরে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য খাল কেটে কুমির আনা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন রবিবাবু বলেন, “ঠাকুর মদনমোহনের আশীর্বাদ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতা এবং আশীর্বাদে আমি দ্রুত সুস্থ হতে পেরেছি। আমি খুব শীঘ্রই আপনাদের মধ্যে ফিরে আসছি। আপনাদের আশীর্বাদ এবং ভালোবাসা রয়েছে।” আর এরপরই রাজ্য রাজনীতির বিভিন্ন জ্বলন্ত ইস্যু সম্পর্কে নিজের কথা ফেসবুক লাইভ এর মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে তুলে ধরেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলার নটা আসনেই তৃণমূল যাতে জয়যুক্ত হয়, সেই ব্যাপারে সকলকে টার্গেট গ্রহণ করার কথা বলেন তিনি। আর এরপরই বিগত লোকসভা নির্বাচনে বামেদের ভোট বিজেপিতে যাওয়ার জন্যই যে দলেরে এই হার হয়েছে, তা উল্লেখ করেন কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। তিনি বলেন, “লোকসভা ভোটে বামপন্থীরা এবং কংগ্রেসিরা তাদের পুরো ভোটটাই বিজেপিতে শিফ্ট করিয়েছিল। গ্রেটার কোচবিহার সহ আরও কিছু সংগঠন তাদের ভোট, যারা ভোট বয়কট করতেন, তাদের সমস্ত ভোট বিজেপিতে শিফ্ট করিয়েছিল। কিসের ভিত্তিতে দিয়েছিল! তার পরিবর্তে কি পেয়েছিল! সেই কথা বলতে চাই না। আমি শুধু বলতে চাই তারা এখন পস্তাচ্ছেন। তারা খাল কেটে কুমির নিয়ে এসেছিলেন। এই কুমিরকে তাড়াতে সবাইকে এখন একজোট হতে হবে।”

অর্থাৎ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ “কুমির” বলতে বিজেপিকেই বুঝিয়েছেন। কিন্তু তিনি এখন একজোট হওয়ার কথা বললেও নির্বাচনের আগে কেন তারা এক ছিলেন না! কেন তখন তাদের মধ্যে ঐক্যের অভাব দেখা গিয়েছিল! তাহলে কি এর জন্য তৎকালীন জেলা সভাপতি হিসেবে রবিবাবুর দায় বর্তায় না? এখন তা নিয়েই প্রশ্ন করতে শুরু করেছে সমালোচক মহলের একাংশ।

সব মিলিয়ে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে পরাজয়ের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নানা সম্প্রদায় এবং বিজেপি-সিপিএমের সমঝোতাকে দায়ী করলেও তাদের দলে যে ঐক্যের অভাব ছিল, তা কার্যত তার বার্তা দেওয়াতেই স্পষ্ট হয়ে গেল বলে দাবি বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!