এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বিধানসভা ভোটে মুখ পুড়েছে বিজেপির, পর্যবেক্ষক পদ হাতছাড়া হতে চলেছে এই কেন্দ্রীয় নেতার? জল্পনা তুঙ্গে

বিধানসভা ভোটে মুখ পুড়েছে বিজেপির, পর্যবেক্ষক পদ হাতছাড়া হতে চলেছে এই কেন্দ্রীয় নেতার? জল্পনা তুঙ্গে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   বাংলায় যদি বিজেপি সাফল্য পেত এবং ক্ষমতা দখল করত, তাহলে সবার আগে এই কৃতিত্ব যিনি পেতেন, তার নামটা অবশ্যই বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক তথা কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর গেরুয়া শিবির অনেকটাই প্রভাব বিস্তার করেছে রাজ্যে। তবে বিজেপির অন্যান্য নেতা, নেত্রীদের মতো তিনিও আশা রেখেছিলেন, এবার বাংলায় পরিবর্তন হবে।

এক্ষেত্রে বিজেপিই সরকারে বসবে বলে বিভিন্ন সময় দাবি করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে রাজ্যের সংগঠন দেখভাল থেকে শুরু করে দলকে সাফল্য পাওয়ার দায়িত্বে যে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছিলেন, তিনি কার্যত ডাহা ফেল বলেই মনে করছেন একাংশ। দলের নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, নির্বাচনে গেরুয়া হাওয়া উঠলেও, ভোটবাক্সে তা ফিকে হয়ে গিয়েছে।

কোনোরকমে 77 টি আসন পেয়ে বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এই পরিস্থিতিতে বাংলার সংগঠন দেখভাল করা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন‌। ইতিমধ্যেই গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, বাংলার সংগঠনে ব্যাপক রদবদল করতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। যার অন্যতম অঙ্গ হিসেবে বাংলার পর্যবেক্ষক হিসেবে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে মধ্যপ্রদেশের এই বিজেপি নেতাকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপি এবার রাজ্যে বহু চেষ্টা করেও ক্ষমতা দখল না করতে পারার পরই দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলের প্রবীণ নেতা তথাগত রায় এই ব্যাপারে বিস্ফোরক মন্তব্য করে দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ বিজেপির যে সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের সকলের দিকে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। এমনকি সেলিব্রিটিদের প্রার্থী করার নিয়েও তার কটাক্ষ কার্যত অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে।

অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, অন্য দল থেকে নেতারা না এনে যদি নিজের দলের পুরোনো নেতাকর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া হত, তাহলে বিজেপি আরও অনেক ভালো ফল করতে পারত। কিন্তু তা না করে অন্য দল থেকে নেতা এনে পুরনো নেতাদের কম গুরুত্ব দেওয়াতেই দলের এই ভরাডুবি। আর এর পেছনে যে দায়িত্বে থাকা নেতারা কিছুটা হলেও দায়ী, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ।

আর সেই কারণেই বিরোধী দলের জায়গা দখল করা ভারতীয় জনতা পার্টিকে আরও বেশি করে শক্তিশালী করতে বিধানসভা নির্বাচনকে সাফল্যের মুখ দেখাতে না পারা পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে বাংলা থেকে সরিয়ে দিতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে মনে করা হচ্ছে। যে জায়গায় রাজ্যসভার সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব বা তরুন চুঘকের মত হেভিওয়েট নেতাকে নিয়ে আসা হতে পারে বলে খবর।

একাংশ বলছেন, এবার বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমনকি মোদী মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা নেত্রীরা বাংলায় পড়েছিলেন, তাতে একটা জিনিস নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, বিজেপি এবার বাংলা দখল করতে কতটা উদ্যত। এক্ষেত্রে রাজ্য নেতাদের রিপোর্ট নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে জনমত রয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

তবে রাজ্য এবং কেন্দ্রের মাঝে সেতুবন্ধন করা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কিন্তু ফলাফল বিজেপির উল্টো দিকে যাওয়ার পরেই সেই কৈলাস বিজয়বর্গীয়র রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাহলে কি বাংলার পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করার সময় ফুরিয়ে এলো কৈলাস বিজয়বর্গীয়র? এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও কোনো নির্দেশ আসেনি।”

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাজ্যের পর্যবেক্ষক হওয়ার পর হয়ত বা বিজেপির পাল্লা ভারি হয়েছে। কিন্তু ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে বলে 2021 এর ফলাফল সামনে আসার পর দলের একাংশ অভিযোগ করতে শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে অন্য দল থেকে নেতা নিয়ে আসার ব্যাপারে কৈলাস বিজয়বর্গীয় একটা বড় মাপের সমর্থন ছিল বলেই দাবি করা হচ্ছে। তাই সেই অন্য দল থেকে আসা নেতাদের ভিড় যে বিধানসভা নির্বাচনে দলকে অনেকটা ডুবিয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ। আর এই সমস্ত কিছুর মাঝে নতুন রুপে সংগঠনের মধ্যে দিয়ে বিজেপি নতুন করে বাংলার দিকে নজর দিতে চায় বলে মনে করা হচ্ছে।

যার প্রথম পদক্ষেপ হবে রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে সরিয়ে দেওয়া বলে দাবি করছেন সমালোচক মহলের একাংশ। তবে এই ব্যাপারে গুঞ্জন তৈরি হলেও, এখনও পর্যন্ত বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!