করোনার দাপটে কার্যত দিশেহারা গোটা বিশ্ব। আর এবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত বাংলার বুকে আছড়ে পড়েছিল ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমফান। এই ঝড়ের দাপটে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে আর্তনাদ করে উঠেছিলেন ক্ষয়ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে। এতটাই এর প্রভাব ছিল যে তিনি স্বয়ংদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে গতকাল রাত্রেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় – আজ বাংলার ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী অবস্থা খতিয়ে দেখতে বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এবার সমস্ত জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলার মাটিতে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ সকাল ১০:৩০ টায় তাঁর কলকাতা পৌঁছনোর কথা ছিল, কিন্তু একটু দেরিতেই পৌঁছান তিনি। তাঁকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যেই বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।এরপর এরপরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হেলিকপ্টারে সাইক্লোন বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। পরবর্তীকালে, বসিরহাটে প্রশাসনিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যসচিব।

এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সব ঘুরে দেখেছি। বাংলার এই কঠিন সময়ে বাংলার পাশে থাকব। বাংলা যাতে আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তার জন্য ভারত সরকার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।’

এরপর প্রায় একঘণ্টা দশ মিনিটের বৈঠক করেন তারপর বসিরহাট কলেজ থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী। বাংলা থেকে সোজা ওড়িশা যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর।এদিন তিনি আমফান বিধ্বস্ত বাংলার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিন তিনি বলেন, ” ঘূর্ণিঝড়ে বাংলা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা দেখে আমি ব্যথিত। কেন্দ্র থেকে একটি দল পাঠানো হবে। কৃষি, বিদ্যুৎ পরিষেবা খতিয়ে দেখবে তারা। এই সময় গোটা দেশ বাংলার পাশে আছে। আপাতত এক হাজার কোটি টাকা আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে। যদি দেখা যায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি, তাহলে আরও অর্থ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে নিহতদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য করতে হবে।” যদিও এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।