প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- 2014 সালের পর 2019 সালে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের তাকে সেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বাদ দেওয়া হয়। আর তারপর থেকেই বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয় বাংলার রাজনৈতিক মহলে। সেভাবে বিজেপির হয়ে সক্রিয় থাকতে দেখা যায় না তাকে। অবশেষে আজ শনিবার একটি ফেসবুক পোস্টের মধ্যে দিয়ে বিজেপি ত্যাগ করার কথা জানিয়ে দিলেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। যাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। হঠাৎ করে কেন বিজেপি ত্যাগ করার কথা জানিয়ে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়? তাহলে কি তিনি ভবিষ্যতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে চলেছেন? ইতিমধ্যেই তার ফেসবুক পোস্টের পর এই সমস্ত প্রশ্ন ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছে রাজনীতির অন্দরমহলে।

সূত্রের খবর, কিছুক্ষণ আগেই নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। যেখানে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি রাজনীতিতেও যে তিনি থাকতে চাইছেন না, সেই কথাও নিজের পোস্টের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেন বিশিষ্ট এই সঙ্গীতশিল্পী। এদিন নিজের ফেসবুক পোস্টের মধ্যে দিয়ে বাবুল সুপ্রিয় লেখেন, “সবার কথা সব শুনলাম। বাবা-মা স্ত্রী-কন্যা দুই একজন প্রিয় বন্ধু-বান্ধব সবটুকু শুনে বুঝে অনুভব করেই বলি, চললাম। বেশকিছু সময় তো থাকলাম। কিছু মন রাখলাম, কিছু ভাঙলাম। কোথাও আপনাদের হয়ত আমার কাজে খুশি করলাম। কোথাও নিরাশা, হতাশ করলাম। মূল্যায়ন আপনারাই করবেন। আমি আমার মনে ওঠা সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরেই বলছি, আমার মত করেই বলছি, চললাম। সোশ্যাল ওয়ার্ক করতে গেলে রাজনীতিতে না থেকেও করা যায়। নিজেকে একটু গুছিয়ে নিই আগে তারপর। হ্যাঁ, সাংসদ পদ থেকেও আমি ইস্তফা দিচ্ছি।” পাশাপাশি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও যে তিনি চিরকৃতজ্ঞ, সেই কথাও নিজের ফেসবুক পোস্টের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।

অনেকে বলছেন, বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে যে রাজ্য নেতৃত্বের যথেষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা অনেকদিন আগে থেকেই প্রকাশ্যে এসেছিল। বেশ কয়েক মাস আগে একটি সভায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র কথা কাটাকাটি প্রকাশ্যে আসে। আর সম্প্রতি তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে বাদ দেওয়ার পরেই তিনি আর রাজনীতিতে সেভাবে সক্রিয় থাকবেন না বলেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অনেকে আবার বলতে শুরু করেছিলেন, বাবুল সুপ্রিয় খুব তাড়াতাড়ি গেরুয়া শিবির ত্যাগ করে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে নাম লেখাতে পারেন।

আর এই পরিস্থিতিতে সেই জল্পনাতেই সীলমোহর দিয়ে বিজেপি ত্যাগ করার পাশাপাশি চললাম বলে সাংসদ পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে দিলেন এই সংগীতশিল্পী। তাহলে কি অতীতের মতো আবার নিজের জীবন হিসেবে সঙ্গীতকেই বেছে নিতে চলেছেন বাবুল সুপ্রিয়? নাকি বর্তমান পরিস্থিতিতে বিতর্ককে দূরীভূত করার জন্য তিনি কোনো রকম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবে না বলে জানিয়ে দিলেন? পরবর্তীতে কি তাকে আবার অন্য কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে দেখা যেতে পারে? ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠতে শুরু করেছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, ফেসবুক পোস্টের পর রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার পরবর্তী সিদ্ধান্ত হিসেবে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বাবুলবাবু, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।