প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিজেপির রাজ্য স্তরের নেতারা মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করেন, “জয় শ্রীরাম” শুনলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এমনকি লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়কাল থেকে শুরু করে কিছুদিন আগেই নেতাজী জন্ম জয়ন্তী উৎসবে সেই “জয় শ্রীরাম” স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে রীতিমত সরকারি অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য বয়কট করেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্বাভাবিক ভাবেই এরপর থেকেই সেই “জয় শ্রীরাম” স্লোগান নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হয়। আর এবার কোচবিহারে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করতে এসে সেই স্লোগান নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাগ সম্পর্কে মন্তব্য করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সূত্রের খবর, এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে অমিত শাহ বলেন, “জয় শ্রীরাম এখানে বলবে না তো কি পাকিস্থানে বলবে? জয় শ্রীরামে আপনার অপমান লাগে কেন? আপনার অপমান লাগে একটা বিশেষ সম্প্রদায়কে ভোটব্যাংকে খুশি করার জন্য। গোটা দেশ “জয় শ্রীরাম” বলতে গর্ববোধ করে। আর জয় শ্রীরাম শুনলে মমতা দিদির অস্বস্তিবোধ হয়।” অর্থ্যাৎ এতদিন বিজেপির রাজ্য স্তরের নেতারা এই অভিযোগ করলেও, এবার সরাসরি অমিত শাহ রাজ্যে এসে সেই জয় শ্রীরাম নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে রীতিমত শোরগোল তুলে দিলেন।

এক্ষেত্রে বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গলায় এই ধরনের মন্তব্য শুনতে পাওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে পড়বেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেকে বলছেন, বিজেপি এবার হিন্দু ভোটকে নিজেদের দিকে রাখতে চাইছে। আর সেই কারণেই বারবার তারা প্রমাণ করতে মরিয়া যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল রামের নাম শুনলে সহ্য করতে পারছেন না।

এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হিন্দু ভোটকে নিজেদের দিকে আনতেই বিজেপি বারবার মেরুকরণের তাস খেলছে বলে অভিযোগ একাংশের। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে এসে রীতিমত সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামনামে কেন এত রাগ করছেন, তা ফাঁস করে দিলেন অমিত শাহ। পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, বিজেপি তথা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্যের তৃণমূল সরকার একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে বাড়তি তোষন করছে।

যার ফলে বিরোধীদের সেই অভিযোগে বারংবার অস্বস্তির মুখে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। সামনে নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে রাজ্যের ক্ষমতা যেনতেন প্রকারেণ দখল করতে রীতিমত তৎপর গেরুয়া শিবির। মাঝেমধ্যেই রাজ্যে আসতে দেখা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহ জেপি নাড্ডার মত বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের।

আর এদিন কোচবিহারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষিপ্ত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে রাজ্যের হিন্দুদের সংগঠিত করে সেই ভোটব্যাংকে মজবুত করার চেষ্টা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। সব মিলিয়ে অমিত শাহের এই ধরনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল নেত্রীর পক্ষ থেকে পাল্টা কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।