প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   নন্দীগ্রামের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী জয়লাভ করার পর থেকেই সেই ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে সম্প্রতি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মামলা দায়ের করার পর যে বিচারপতির এজলাসে সেই মামলা যায়, সেই কৌশিক চন্দকে নিয়ে আপত্তি তুলতে শুরু করেন মামলকারী। যা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন, এইভাবে বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় কি? তবে তা সত্ত্বেও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করে এই মামলার বেঞ্চ যাতে পরিবর্তন করা হয়, তার কথা তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার আইনজীবীর যুক্তি ছিল, যে বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে এই নন্দীগ্রাম মামলা গিয়েছে, সেই কৌশিক চন্দ অতীতে বিজেপির হয়ে অনেক মামলা লড়েছেন। তাই তিনি এই মামলার বিচার দিলে, তাতে নিরপেক্ষতা নাও বজায় থাকতে পারে। আর সেই কারণেই বেঞ্চ পরিবর্তন নিয়ে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে। অবশেষে এই ব্যাপারে রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যেখানে কৌশিক চন্দ সরে গেলেন নন্দীগ্রাম মামলার বিচারপতি থেকে। পাশাপাশি আদালতের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করার কারণে বড়সড় চাপে পড়ে গেলেন মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল হাইকোর্টের পক্ষ থেকে।

সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম মামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁর বিচারপতি ছিলেন কৌশিক চন্দ। কিন্তু তার সঙ্গে বিজেপি নেতাদের একাধিক ছবি সামনে এনে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিচারব্যবস্থা প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। তাই এরপরে বেঞ্চ যাতে পরিবর্তন করা হয়, তার জন্য মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে পাল্টা আবেদন জানানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই আবেদনের পরেই নন্দীগ্রাম মামলার ভবিষ্যত এবং চূড়ান্ত রায় প্রকাশ পাবে বলেই মনে করা হয়েছিল। সেই মত করেই বেঞ্চ পরিবর্তন নিয়ে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে কি রায় দেওয়া হয়, তার দিকে নজর ছিল সকলের।

অবশেষে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চের পক্ষ থেকে নেওয়া হল বড় সিদ্ধান্ত। যেখানে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত, নন্দীগ্রাম মামলার বিচারপতি থেকে কার্যত সরে দাঁড়ালেন সেই কৌশিক চন্দ। অর্থাৎ মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন যে ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলেন, সেই ব্যাপারটি হাইকোর্টের এই রায়ের মধ্য দিয়েই সাধিত হল। তবে আদালতের ব্যাপারে যেভাবে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে মামলাকারীকে, এবং বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে ও বিচারপতি সম্পর্কে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, তার কারণে 5 লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অর্থাৎ এক দিক থেকে সাফল্য পেলেও আর একদিক থেকে যে যথেষ্ট চাপে পড়ে গেলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তা বলাই যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কৌশিক চন্দকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই কৌশিক চন্দ নিজেই সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে দিলেন। তবে গোটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সব থেকে বেশি চাপে পড়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দাবি করছেন একাংশ। কেননা আদালত এবং বিচারপতিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য তাকে জরিমানা করা হল। জানা গেছে, যে 5 লক্ষ টাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জরিমানা করা হয়েছে, সেই টাকা পরবর্তীতে করোনা মোকাবিলার কাজে ব্যবহার করা হবে। সব মিলিয়ে বেঞ্চ পরিবর্তন হলেও জরিমানা করার কারণে অস্বস্তি তৈরি হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে এবার নন্দীগ্রাম মামলার চূড়ান্ত রায় নিয়ে কি বলে কলকাতা হাইকোর্ট, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।