প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কিছুদিন আগেই অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলে শুভেন্দু অধিকারী যোগদান করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তবে অধিকারী পরিবার থেকে শুধু তিনি বিজেপিতে যোগদান করলেও, তার পিতা শিশির অধিকারী এবং তার দুই ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী এবং সৌমেন্দু অধিকারী এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসেই রয়েছেন। তবে সম্প্রতি কাঁথি পৌরসভার প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে। আর এরপরই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদ তথা অধিকারী পরিবারের অন্যতম সদস্য দিব্যেন্দু অধিকারীকে।

সৌমেন্দু অধিকারীকে যাতে প্রশাসক পদে ফিরিয়ে আনা হয়, তার জন্য স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়েছেন দিব্যেন্দুবাবু বলে খবর। আর এই পরিস্থিতিতে এবার রাজ্য সরকার এবং দলের সঙ্গে সংঘাত বাড়িয়ে অপসারণ করা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন সেই সৌমেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, আগামী 4 জানুয়ারি এই মামলার শুনানি হতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর পরিবারের দূরত্ব আরও বৃদ্ধি পেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একাংশ বলছেন, সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই শুভেন্দু অধিকারীকে নাম না করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড জানিয়ে দিয়েছিলেন, নিজের পরিবারকে বিজেপিতে যোগদান করাতে অপারগ শুভেন্দু অধিকারী। আর এরপরই পাল্টা সভা থেকে সেই শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিয়েছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি পদ্ম ফুটবে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পরই সেই শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে কাঁথি পৌরসভার প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই রীতিমত বিদ্রোহ তৈরি হয়। তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে শুরু করেন। এমনকি সৌমেন্দু অধিকারীকে যাতে প্রশাসক পদে বসানো হয়, তার জন্য আর্জি জানান তিনি।

শুধু তাই নয়, যদি সৌমেন্দু অধিকারীকে প্রশাসক পদ ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে তিনি এবং তাঁর পিতা শিশির অধিকারী কাঁথি পৌরসভায় যাবেন না বলেও জানিয়ে দেন সৌমেন্দু অধিকারী। আর এই ঘটনার পরই গোটা পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে উঠতে শুরু করেছিল। আর এবার রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘাতকে বাড়িয়ে কাঁথি পৌরসভার প্রশাসক প্রত্যেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সৌমেন্দু অধিকারী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে এখন শুধু আর শুভেন্দু অধিকারী নয়, তার গোটা পরিবারেরই দ্বৈরথ ধীরে ধীরে তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করেছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

তাহলে কি এবার অধিকারী পরিবারের সমস্ত সদস্য ধীরে ধীরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করেছেন! যেভাবে তাকে প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সৌমেন্দু অধিকারী, তাতে তার সঙ্গে যে তৃণমূল কংগ্রেসের যথেষ্ট তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তা বলাই যায়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি সৌমেন্দু অধিকারী গেরুয়া শিবিরের নাম লেখাতে পারেন। আর তার মাঝেই প্রশাসক পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে হাইকোর্টে এই মামলা শোরগোল ফেলে দিল। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, শুনানিতে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে কি জানানো হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।