প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই সারদা থেকে নারদা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সরগরম হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সারদা থেকে নারদায় যে সমস্ত ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন, তারা বিজেপিতে গিয়ে এখন নিজেদের বাঁচাতে চাইছেন। এক্ষেত্রে মুকুল রায় থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাল্টা তৃণমূলকে দুর্নীতিগ্রস্ত দল বলে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বিজেপিতে থাকলেও সেভাবে দলের কোনো কর্মসূচিতে দেখা না পাওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায় ফের সক্রিয় হতে শুরু করেছেন।

সম্প্রতি বিজেপির মিছিলে উপস্থিত থেকে একটি সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা গেছে তাকে। আর শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপির হয়ে ময়দানে নামতে না নামতেই এবার তাকে চাপে ফেলে দিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। যেখানে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তারের দাবি জানালেন তিনি। যে ঘটনায় কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে।

সূত্রের খবর, আজ একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই ব্যাপারে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তিনি বলেন, “আইকোরের হয়ে সওয়াল করেছেন শোভন চ্যাটার্জি। সারদায় এক কোটি টাকা পেয়েছেন কে! বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ শোভন চট্টোপাধ্যায়। সব চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাকে কেন গ্রেফতার করা হবে না! শোভন চ্যাটার্জীর গ্রেপ্তারি চাই।”

স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপির হয়ে সক্রিয়ভাবে ময়দানে নামতে শুরু করেছেন, তখন তার বিরুদ্ধে কুণাল ঘোষের এই ধরনের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন একাংশ। অনেকে বলতে শুরু করেছেন, আসলে বিজেপিতে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি শুরু করার পরেই এবার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে চাপে ফেলতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ধরনের চক্রান্ত করা শুরু হয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনা যে এবার রাজ্য রাজনীতিতে শাসক এবং বিরোধীদলের তরজাকে ক্রমাগত বাড়িয়ে তুলবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

অনেকে কটাক্ষ করে বলতে শুরু করেছেন, এই কুনাল ঘোষ একসময় সারদাকাণ্ডে জেলে থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন‌। সারদা থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যদি কেউ সুবিধা নিয়ে থাকেন, তাহলে তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। কিন্তু সেই কুণাল ঘোষ এখন তৃণমূল কংগ্রেসে আবার সক্রিয়। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র। আর বিজেপিতে যোগদানকারী মুকুল রায় থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করার পর এবার শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করার পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কুণালবাবু।

তবে এতদিন পরে শোভন চট্টোপাধ্যায় যখন বিজেপিতে সক্রিয়ভাবে নিজের কর্মসূচি শুরু করেছেন, তখন কেন কুণালবাবুর মুখ থেকে এই ধরনের মন্তব্য শুনতে পাওয়া গেল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। তাহলে কি শোভন চট্টোপাধ্যায় তাদের কাছে চাপের কারণ! তিনি বিজেপিতে কর্মসূচি শুরু করতেই চাপে পড়ে তার বিরুদ্ধে বোমা ফাটাতে শুরু করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতা! এখন তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, কুণাল ঘোষের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।