এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > বিকাশকে নিয়ে জোর লড়াই বাম-কংগ্রেসের, বাড়ছে তিক্ততা!

বিকাশকে নিয়ে জোর লড়াই বাম-কংগ্রেসের, বাড়ছে তিক্ততা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   34 বছরের বাম শাসনের আমলে তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ করা হয়েছে সেই বাম সরকারের বিরুদ্ধে। সাঁইবাড়ি থেকে শুরু করে মরিচঝাঁপি, কংগ্রেসের নানা কর্মীদের খুন করে সিপিএম মৃত্যুলীলা খেলেছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কিন্তু 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে সেই বামেদের সঙ্গে জোট করতে দেখা গেছে কংগ্রেসকে। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যে সিপিএমের হাতে শত শত কংগ্রেসের নেতা, কর্মীরা প্রাণ দিলেন, সেই সিপিএমের সঙ্গে কি করে জোট করে হাত শিবির, তা নিয়ে নানা মহলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।

তবে তাতে কর্ণপাত না করে 2016 সালের পর আবার 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছিল। কিন্তু সেই লড়াইয়ে কোনো ভাল ফল হয়নি। একটিও প্রতিনিধি রাজ্য বিধানসভায় পাঠাতে পারেনি বাম এবং কংগ্রেস। আর এই পরিস্থিতিতে বিগত বাম সরকারের আমলে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট করতে গিয়ে “কংগ্রেসী গুন্ডা” শব্দ প্রয়োগ করেন সিপিএম নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।

আর এই ঘটনাতেই তীব্র আপত্তি জানাতে শুরু করেছে কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে সিপিএমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। যার পাল্টা জবাব দিয়েছে সিপিএম। স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে। এমনিতেই জোট করে ভালো ফল হয়নি। তার মধ্যে “কংগ্রেসী গুন্ডা” শব্দ প্রয়োগ করে সিপিএম নেতার এই ধরনের ফেসবুক পোস্ট কংগ্রেসের মনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

তাই আগামী দিনে এই জোট বজায় রাখা নিয়ে অনেকের মধ্যে তৈরি হয়েছে সংশয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে যেভাবে সাঁইবাড়ি হত্যাকান্ড নিয়ে সিপিএম এবং কংগ্রেস একে অপরকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে, তাতে রীতিমত চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই “কংগ্রেসী গুন্ডা” শব্দ প্রয়োগ করার কারণে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে ফোন করেছিলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য।

এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি বলেন, “আমি মনে করি না 50 বছরের আগেকার ঘটনা এই মুহূর্তে আলোচনা করার অবকাশ রয়েছে‌। পুরনো কাসুন্দি ঘাটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আর যদি এটাই মাথায় থাকে, তাহলে আমরা জোট করতে গেলাম কেন? অতীতের অনেক বিষাক্ত স্মৃতি তো সকলেরই আছে। সেসব ভুলেই তো নতুন বাংলা গঠন করব বলে জোট করেছিলাম।” এদিকে এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেছে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকেও।

এদিন তিনি বলেন, “অতীতকে অস্বীকার করে কোনো লাভ নেই। অতীত সত্য। এতে মতবিরোধের কোনো জায়গা নেই। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় গিয়েছি, এটা সত্যি কথা। তেমনই সাইবাড়ি নিয়ে বামপন্থীদের মত উল্লেখ করেছি। যদি কংগ্রেসের কেউ আমার পোস্ট নিয়ে দুঃখ পেয়ে থাকেন, তাহলে আমি দুঃখিত। তবে আমার মনে হয়, এমন একটি ঘটনার জন্য বাম কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না।”

এদিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের এই আপত্তিকর পোস্ট নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হলে, সেই ব্যাপারে অস্বস্তি ঢাকতে উদ্যত হয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। এদিন তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কি পোস্ট করেছেন, জানি না। আমরা এখন এই মুহূর্তে বিতর্কে ঢুকতে চাই না। এখন বিতর্কের সময় নয়।” অর্থাৎ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের পোস্ট নিয়ে সিপিএমের কাছে প্রশ্ন করার সাথে সাথেই অস্বস্তি ঢাকতে উদ্যত হল মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অর্থাৎ সিপিএম কোনোমতেই এখন জোট ভাঙার রাস্তায় যেতে চাইছে না। আর সেই কারণে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আপত্তি তুলতেই বিতর্কে ঢোকার সময় এখন নয় বলে জানিয়ে দিতে দেখা গেল বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে সূর্যকান্ত মিশ্রকে। তবে কংগ্রেস এত সহজে হাল ছেড়ে দেবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বাম এবং কংগ্রেসের যে মিল হয় না, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। অতীতে বাম সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় কংগ্রেসের বহু নেতা-কর্মীরা প্রাণ হারিয়েছেন বলে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করতে দেখা যায় কংগ্রেসকে। কিন্তু 2016 সালে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবার জন্য সেই বাম এবং কংগ্রেস জোট করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নানা কথা শুনতে হয়েছিল। দক্ষিণপন্থী দল হিসেবে পরিচিত তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতা-নেত্রী কেন কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে জোট করে দক্ষিণপন্থীদের ভাবাবেগকে বিসর্জন দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন।

তবে সেই সময় তৃণমূল বিরোধিতাতে মজে গিয়ে বিপল্প শক্তি হিসেবে বাম-কংগ্রেস জোটকে তুলে ধরতে শুরু করেছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং বিধান ভবনের নেতারা। কিন্তু ফলাফল কোনোকালেই ভালো হয়নি। ধীরে ধীরে তারা মুছে যেতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য আসন পাওয়ার পরে সাঁইবাড়ি নিয়ে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল কংগ্রেস। যাকে কেন্দ্র করে দুই দলের তরজা এখন কার্যত নজরকাড়া বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলের কাছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!