প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   এবার বিমান লিজ নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আর সেই খবর পেয়েই তড়িঘড়ি এই ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিজেপি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে তাকে এই বিষয়ে আক্রমণ করলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য একটি বিমান লিজ নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে একটি টেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিষয় নিয়ে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে একহাত নিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সতীর্থ তথা বর্তমান প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রধান মুখ শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দুবাবু এই ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করার সাথে সাথেই পাল্টা তৃণমূলের পক্ষ থেকে ধেয়ে এল আক্রমণ। যাকে কেন্দ্র করে কার্যত সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যে পরিবহন দপ্তরের নয় পৃষ্ঠার একটি টেন্ডার প্রকাশিত হয়। যেখানে প্রথম পাতার ছবি টুইট করেন শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটে তিনি লেখেন, “স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রীর জন্য পুষ্পকরথ! হেলিকপ্টারে পাড়ি দেওয়া যায়, এমন দূরত্বে সন্তুষ্ট না হলে এবার 10 আসনের বিমান নেওয়ার তোড়জোড়! লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের জন্য কি সরকারি খরচে এটা ব্যবহার করা যাবে!” বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলায় তৃতীয়বার তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দলকে বিস্তার লাভ করাতে উদ্যোগ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এক্ষেত্রে এখন থেকেই 2024 এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিজেপি বিরোধী জোট গঠন করতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের পক্ষ থেকে বিমান লিজ নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লোকসভা নির্বাচনের কথা তুলে ধরে প্রচারে সুবিধে হওয়ার জন্যই কি এই উদ্দেশ্য, সেই ব্যাপারে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়ে তৃনমূলকে কার্যত চাপে ফেলে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক স্বার্থের কথা তুলে ধরলেও, তাকে কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃনমূলের বর্ষিয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, “অনেক রাজ্যেই একাধিক নিজস্ব বিমান রয়েছে। এটা থাকা রাজ্যের পক্ষে গর্বের বিষয়। আর প্রধানমন্ত্রীর জন্য যে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিমান কেনা হয়, তা নিয়ে আগে বিজেপি কথা বলুক। এই আক্রমণ অত্যন্ত নিম্ন রুচির।”

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে এই ধরনের আক্রমণ করার কারণে যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির কথা তুলে ধরে এই বিমান লিজ নেওয়ার ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তবে এই ঘটনাকে পাল্টা কটাক্ষ করে এই আক্রমণ উন্নত নিম্নরুচির বলে শুভেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সব মিলিয়ে বিমান লিজ নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী তরজায় সরগরম বঙ্গ রাজনীতি।