এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিমল গুরুংকে তৃণমূল বুকে টেনে নিতেই শহীদ অমিতাভ মালিকের মৃত্যু নিয়ে উঠে গেল বড়সড় প্রশ্ন!

বিমল গুরুংকে তৃণমূল বুকে টেনে নিতেই শহীদ অমিতাভ মালিকের মৃত্যু নিয়ে উঠে গেল বড়সড় প্রশ্ন!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কথায় বলে রাজনীতিতে ফুলস্টপ বলে কিছু নেই, সবকিছুই কমা বা সেমিকোলন। রাজনীতিকে কে কখন কার বন্ধু হয়ে ওঠে? কিভাবে হয়ে উঠে প্রতিদ্বন্দ্বি? তার উত্তর মেলা ভার। পরশু দিন অর্থাৎ পঞ্চমীর সন্ধ্যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল মহানগরের রাস্তায়। মহানগরের রাস্তায় উদয় হলেন প্রায় তিন বছর ধরে ফেরার পাহাড়ের নেতা বিমল গুরুং। মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থনের কথা জানাবেন শোনা গেল তার মুখে।

এবার শাসকদলের তিনি হাত ধরেছেন, কিন্তু এই বিমল গুরুং এর নামেই একসময় উঠেছিল একাধিক অভিযোগ। অভিযোগ পাহাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত করেছেন তিনি। তেমনি তাঁর নেতৃত্বেই ২০১৭ সালের ১৩ ই অক্টোবর হত্যা করা হয়েছিল রাজ্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিককে। সেই ঘটনার তিন বছর পর বিমল গুরুংএর মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মৃত পুলিশকর্মী অমিতাভ মালিকের পিতা সৌমেন মালিক, মাতা গঙ্গা মালিক ও তাঁর পরিজন, প্রতিবেশীরা।

প্রসঙ্গত, গত ২০১৭ সালে ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দার্জিলিংয়ের পাহাড়। পাহাড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ব্যাপকভাবে। বিমল গুরুংয়ের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল সেসময়ে। আত্মগোপন করেছিলেন তখন বিমল গুরুং। ২০১৭ সালে তাঁকে ধরতে দার্জিলিংয়ের রঙ্গিত নদীর তীরবর্তী সিংলার জঙ্গলে সিরুবাড়ি এলাকায় চলে যায় পুলিশ বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে বিমল বাহিনীর সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বাধে পুলিশের। যেখানে প্রাণ হারান রাজ্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিক। সেদিনটি ছিল ২০১৭ সালের ১৩ ই অক্টোবর।

এবার ২০২০ সালের ২১ শে অক্টোবর পঞ্চমীর দিন বিমল গুরুংকে হাত ধরতে দেখা গেল রাজ্য শাসকদলের সঙ্গে। তিন বছর ধরে ফেরার হয়ে থাকার বিমল গুরুং পঞ্চমীর দিন জানালেন যে, তিনি অপরাধী নয় এমনকি দেশদ্রোহীও নন তিনি। তাঁর এই বক্তব্য শুনে বিস্মিত হলেন মৃত সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিকের বাবা মধ্যমগ্রামের পাটুলির শরৎকাননের বাসিন্দা সৌমেন মালিক। তিনি প্রশ্ন করলেন, বিমল গুরুং যদি অপরাধী না হন? তাহলে আসল খুনি কে? কেই বা হত্যা করেছে তাঁর পুত্রকে?

প্রসঙ্গত গত ৩ বছর আগে অক্টোবর মাসে পুত্রের অকাল মৃত্যুর কথা দুরদর্শন এর পর্দায় শুনেছিলেন সৌমেন মালিক ও গঙ্গা মালিক। এবার তিন বছর পর পুত্রের হত্যাকারী রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে আঁতাত গড়লেন। মধ্যমগ্রামের আমরা কজন ক্লাবের মাঠে কফিনে আসা মৃত সাব ইন্সপেক্টরের দেহ আঁকড়ে ধরে তার স্ত্রী বিউটি মালিকের কান্নার দৃশ্য এখনো স্মৃতিতে মৃত পুলিশকর্মীর পিতা-মাতার। স্ত্রী বিউটি মালিক সেদিন রাজ্য পুলিশের তৎকালীন ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে জানিয়েছিলেন, ” স্যার আমার সব শেষ। ওর (বিমল গুরুং) মাথায় গুলি করুন।’’ যদিও সম্প্রতি বিউটি মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে যুগলবন্দী হয়ে পাহাড়ে একটি বড়সড় মাস্টার স্ট্রোক খেলার পরিকল্পনা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।দীর্ঘসময় ধরে শক্তিশালী পাহাড়ে গেরুয়া শিবির। গেরুয়া শিবিরকে একটা জোর ধাক্কা দিতেই বিমল গুরুংকে কাছে টানা। পূর্বে বহুবার বিজেপিকে পাহাড়ে টেক্কা দিতে গিয়েও বারবার ব্যর্থ হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু বিমল গুরুং এর সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাত কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না মধ্যমগ্রাম। এক সপ্তাহ আগেই মৃত সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভের মৃত্যুদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গিয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। পুত্রহারা সৌমেন বাবুর আশা ছিল, একদিন না একদিন শাস্তি পাবেই পুত্রের হত্যাকারী । কিন্তু এবার তাকেই রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখে তিনি স্পষ্টতই হতাশ।

প্রসঙ্গত উত্তর ২৪ পরগনার খরিবাড়িতে একটি এক্সপোর্ট- ইমপোর্ট কারখানায় চাকরি করতেন পুত্রহারা সৌমেন বাবু। করোনা সংক্রমণ কালে চাকরি হারিয়েছেন তিনি। এদিকে তাঁর শরীরেও আছে নানা রোগ। এমনি শারীরিক অবস্থা তাঁর স্ত্রী গঙ্গা দেবীরও। পুত্রর শাস্তি না পাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন জানালেন সৌমেন বাবু। এরকম যদি চলতে থাকে, তবে তাদের পক্ষে বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে যাবে, বলে জানালেন তিনি। বস্তুত মৃত পুলিশ কর্মীর হত্যাকারীকে উপযুক্ত শাস্তি না দিয়ে তার সঙ্গে শাসকদলের সখ্যতাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মৃত সাব-ইন্সপেক্টরের পিতা-মাতাসহ তার প্রতিবেশী ও পরিজনেরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!