এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > জেলায় পা রেখেই বিপ্লবের হুংকার, পাল্টা চ্যালেঞ্জ অর্পিতার, সরগরম দক্ষিণ দিনাজপুর

জেলায় পা রেখেই বিপ্লবের হুংকার, পাল্টা চ্যালেঞ্জ অর্পিতার, সরগরম দক্ষিণ দিনাজপুর


এতদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শাসকদলের সর্বেসর্বা ছিলেন তিনিই। জেলায় তৃণমূলের সংগঠন বলতে বিপ্লব মিত্রকেই সব কিছু বুঝতেন কর্মীসমর্থকরা। আর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি এই বিপ্লব মিত্রই কিছুদিন আগে দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের জার্সি পড়ে নেন। শুধু তাই নয়, তার সাথে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ আরও ৯ জন সদস্যকে তিনি বিজেপিতে যোগদান করান। তার ফলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ গেরুয়া শিবিরের দখলে চলে আসে।

এদিকে জেলা তৃণমূলের সর্বেসর্বা বিপ্লব মিত্র দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদানের পড়েই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরে ভাঙ্গনের আশঙ্কা তৈরি হয়। দিল্লি থেকে এই ব্যাপারে নিজের প্রাক্তন দলের উদ্দেশ্যে কার্যত হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায় বিপ্লববাবুকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপরেই সকলের নজর ছিল যে, বিপ্লব মিত্র ঠিক কবে জেলা পরিষদের 10 জন সদস্যকে নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রবেশ করবেন! রাজনৈতিক মহলে যখন এই জল্পনা চলছে, ঠিক তখনই শুক্রবার রাতে দিল্লি থেকে বিমানে করে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামেন বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র। আর তারপরই শনিবার সকালে শিলিগুড়ি থেকে সড়কপথে বিশাল কনভয় নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

এদিকে বিপ্লব মিত্র জেলায় ঢোকার পরই তৃণমূল তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে বলে দাবি করতে শুরু করেন তার অনুগামীরা। তবে দল ছেড়ে যাতে কেউ অন্য কোথাও না যান, তার জন্য গতকাল বালুরঘাট পৌরসভার সুবর্ণতট সভাগৃহে বালুরঘাট পৌরসভার কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধিদের দিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। এদিকে জেলায় পা রেখেই পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে কার্যত সরব হতে দেখা যায় সদ্য তৃণমূল ত্যাগী, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি তথা বর্তমান বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্রকে।

এদিন অর্পিতা ঘোষকে কটাক্ষ করে বিপ্লব মিত্র বলেন, “পুলিশকে সামনে রেখে অর্পিতা ঘোষ দল চালাতে চাইছেন‌। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নেতাকর্মীদের আটকাচ্ছেন। কিন্তু এইভাবে উনি ভাঙ্গন ঠেকাতে পারবেন না। পুলিশও এক সময় সরে যেতে বাধ্য হবে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিজেপি নেতা কর্মীদের ওপর প্রবল অত্যাচার হচ্ছে। আমি আসায় বিজেপির শক্তি অনেকটাই বেড়েছে। তাই এখন পুলিশ অত্যাচার করলে কেউ মুখ বুঝে সহ্য করবেন না।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অর্পিতা ঘোষের সাথে বিরোধের জেরেই কার্যত দলত্যাগ করতে হয়েছে বিপ্লব মিত্রকে। আর তাই বিজেপিতে পা রেখেই সেই অর্পিতা ঘোষের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে দেখা গেল তাকে। তবে একদা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের সংগঠন সাজিয়ে তোলা বিপ্লব মিত্র যখন বিজেপিতে এসে সেই তৃণমূলের সংগঠনকে ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তখন তার এই কথা যে বাস্তবে অনেকটাই ফলপ্রসূ হবে, সেই ব্যাপারে আশঙ্কা করতে শুরু করেছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতাকর্মীরা।

তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ অবশ্য বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্রের এহেন বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। এদিন এই প্রসঙ্গে অর্পিতা ঘোষ বলেন, “দল কর্মীদের নিয়েই চলছে। এতই যদি ওনার ক্ষমতা থাকে তাহলে জেলায় বিজেপির সংগঠন বাড়িয়ে দেখান। জেলা পরিষদের সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তারা কিন্তু তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন। তাই হয় তারা পদত্যাগ করুন, না হলে তারা দলে ফিরে আসুন।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিপ্লব মিত্র যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন তার সাথে মূল লড়াই ছিল অর্পিতা ঘোষের। ফলে সেই অর্পিতা দেবীর জন্যই তিনি দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এটা তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াই নয়, বরঞ্চ বিপ্লব মিত্র বনাম অর্পিতা ঘোষের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সেদিক থেকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক এই লড়াইয়ে অর্পিতা ঘোষ তৃণমূলের, নাকি বিপ্লব মিত্র বিজেপির ভরকেন্দ্রটাকে শক্তিশালী করতে পারেন! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!