এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বিপদের বন্ধু একমাত্র মদন, হঠাৎই ঝড় তুললেন শঙ্কুদেব! আরও অস্বস্তিতে মমতা!

বিপদের বন্ধু একমাত্র মদন, হঠাৎই ঝড় তুললেন শঙ্কুদেব! আরও অস্বস্তিতে মমতা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- একসময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ছিলেন বর্তমানে বিজেপির নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা। সেই সময় শাসক দলের ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। আর বিরোধী দলে থাকার কারণে মাঝেমধ্যেই তৎকালীন শাসকদলের হামলার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাধিক কর্মী সমর্থককে। আর টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে সেই সময় নিজের তৎকালীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো নেতাকে পাশে না পেলেও সকাল হোক বা রাত্রি, সব সময় শঙ্কুদেববাবুর পাশে থাকতেন মদন মিত্র।এসএসকে নিয়ে যাবতীয় জটিলতা, মদন মিত্রের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ থেকে শুরু করে তার একাধিক বক্তব্য নিয়ে যখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে, ঠিক তখনই সেই মদন মিত্রের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুললেন বিজেপি নেতার শঙ্কুদেব পন্ডা। বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদে রাজ্য সভাপতি থাকার সময় বিপদে সব সময় তার পাশে ছিলেন এই মদন মিত্র।

 

আর শঙ্কুবাবুর এই বক্তব্যের পরেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, যখন এসএসকেএমে আহত ব্যাক্তিকে ভর্তি করানোর জন্য সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন মদন মিত্র এবং হাসপাতাল ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবাদে গর্জে উঠছেন, তখন তার দলের শীর্ষ স্তরের কাউকে তিনি পাশে পাচ্ছেন না ঠিকই। তবে যেভাবে তার দলের একজন প্রাক্তন ছাত্রনেতা এবং বর্তমানে আদায় কাচকলায় সম্পর্ক থাকা বিজেপির শঙ্কুবাবু তার পাশে দাঁড়ালেন, তা অন্য বার্তা বহন করছে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।

 

সূত্রের খবর, এদিন মদন মিত্রের পাশে দাঁড়িয়ে একটি ফেসবুক বার্তা দেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা। যেখানে তিনি পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন, মদন মিত্রের সঙ্গে তার বর্তমানে রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। এমনকি তিনি মদন মিত্রের রাজনৈতিক পন্থাকে সমর্থন করেন না। কিন্তু একসময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি থাকার সময় তৎকালীন শাসক দল বামপন্থীদের আক্রমণে শিকার হয়ে অনেক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের গেটে তাদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। আর সেই সময় কোনো তৃণমূল নেতাকে পাশে না পাওয়া গেলেও একমাত্র গভীর রাতে ছুটে এসে সেই সমস্ত আক্রান্ত ছাত্রদের হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন এই মদন মিত্র।

আর বর্তমানে সেই মদনবাবু যেভাবে এসএসকেএমের চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে একাধিক বিষয় নিয়ে গর্জে উঠছেন, তাতে নীতিগতভাবে তার পাশে দাঁড়িয়ে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির শঙ্কু দেব পন্ডা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে এসএসকেএম হাসপাতালে বাইরে দীর্ঘক্ষণ ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। আর তারপরেই গভীর রাতে সেখানে ছুটে যান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। যেখানে গিয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন তিনি।

শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় কামারহাটি তৃণমূল বিধায়ককে। যার ফলে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে যায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকি সাংবাদিক বৈঠকে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু কথা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেন মদন মিত্র। বুঝিয়ে দেন, তিনি কারও ক্রীতদাস নন। আর এরপর থেকেই মদন মিত্র কি তাহলে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বড় পদক্ষেপ নেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যদিও বা মদনবাবু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়বেন না। কারণ তিনি তৃণমূলের প্রথম দিনকার সৈনিক। আর তার এসএসকেএমে যাওয়া নিয়ে বহু বিতর্ক তৈরি হলেও আবার যদি কেউ হাসপাতাল থেকে ফিরে আসেন বা কোনো রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়, তাহলে যে তিনি আবার সেই এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে গর্জে উঠবেন, সেকথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন এই তৃণমূল বিধায়ক। আর এই পরিস্থিতিতে যখন রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় উঠছে, ঠিক তখনই সেই ঝড়কে কার্যত সাইক্লোনে পরিণত করলেন বিজেপির শঙ্কুদের পন্ডা।

একাংশের প্রশ্ন, তাহলে কি ঘুরিয়ে এই গোটা ঘটনায় মদন মিত্রকে সমর্থন করে তার প্রতি সহমর্মিতার বার্তা দিলেন শঙ্কুদেব পন্ডা! কারণ মদন মিত্রের একাধিক মন্তব্যের মধ্যে দিয়েও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, দলে তিনি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নেই। এমনকি তার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিকমতো কোনো বিষয়ে কথা বলেন না বলেও সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরেছেন এই মদন মিত্র। আর এই পরিস্থিতিতে একসময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি থাকা শঙ্কুদেব পন্ডা মদন মিত্রের এসএসকেএম জনিত বক্তব্যকে সমর্থন করে তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপ দ্বিগুণভাবে বাড়িয়ে দিলেন বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

কারণ, আর যাই হোক তৃণমূলের দুর্দিনের সঙ্গে এই মদন মিত্র। ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে তার তুলে দেওয়া প্রশ্ন এমনিতেই চাপে রেখেছে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং নবান্নকে। সেদিক থেকে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব বাবুর মদন মিত্রকে নীতিগত সমর্থন জানিয়ে এই বক্তব্য রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে যেমন প্রকট প্রশ্ন তুলে দিল, ঠিক তেমনই মদন মিত্রকে নিয়ে তৃণমূলের অস্বস্তি আরও তীব্র হলো। তবে শঙ্কুবাবুর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মদন মিত্রের রাজনৈতিক ভবিষ্যতে কোনো নতুন প্রশ্ন যুক্ত হয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে গোটা রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!