এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > কোথাও ভোজালির কোপ, কোথাও বাড়িতে আগুন, কোথাও ব্যাগভর্তি বোমা – হিংসার আগুনে জ্বলছে বীরভূম

কোথাও ভোজালির কোপ, কোথাও বাড়িতে আগুন, কোথাও ব্যাগভর্তি বোমা – হিংসার আগুনে জ্বলছে বীরভূম


নির্বাচনের সময় বীরভূমে অশান্তি হতে পারে – এই দাবি জানিয়ে নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই সেখানে প্রতি বুথে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যায়, তার জন্য বিরোধীরা কমিশনে গিয়ে আর্জি জানানোর পর সেই নির্বাচন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু এবং অবাধে পরিণত করতে গত 29 শে এপ্রিল বীরভূম জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রের প্রায় সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছিল কমিশন‌। তবে বীরভূমের দুটি লোকসভা কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সমাপ্ত হলেও এবার নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসে উত্তপ্ত হয়ে উঠল সেই বীরভূম।

কোথাও ভোজালি দিয়ে কোপের অভিযোগ, তো কোথাও বা বাড়ি ভাঙচুর – ভোট পরবর্তী হিংসায় শাসক বনাম বিরোধীর সংঘর্ষে এখন উত্তপ্ত অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুক। জানা যায়, গত 29 শে এপ্রিল ভোটের দিন বীরভূমের মল্লারপুর 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের মল্লারপুর লেনিন স্মৃতি পাঠাগারের 19 নম্বর বুথ থেকে বিজেপির এজেন্টকে বের করে দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তৃণমূল বনাম বিজেপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক বচসার সৃষ্টি হয়। পরে সেক্টর অফিসারের মধ্যস্থতায় সেই বুথে বিজেপির এজেন্ট বসলেও বিকাশ বাউরি নামে তৃণমূলের এক এজেন্ট বিজেপি কর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।

সূত্রের খবর, এদিন সকাল আটটা নাগাদ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিজেপি কর্মী সেন্টু বাউরি এবং কার্তিক বাউরিকে ভোজালি দিয়ে কোপ মারা হয় বলে জানা গেছে। যেখানে গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকেই প্রথমে মল্লারপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে পরে সেন্টু বাউরিকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে দলীয় কর্মীদেরকে ভোজালির কোপ মারা হয়েছে এই কথা শুনেই বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা সেই অভিযুক্ত তৃণমূলের বিকাশ বাউরির বাড়ি ঘিরে ফেলে। জানা যায়, সেই সময় বাড়িতে বিকাশ এবং তার স্ত্রী থাকলে তারা দরজা এবং জানালা বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ এসে গোটা পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা সেই বিকাশ বাউড়ির বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এদিকে কোনরকমে বিজেপি কর্মীদের হাত থেকে বাঁচতে সেই বিকাশ বাউড়ির বৌ বিজেপি কর্মীদের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দিলে পরিস্থিতি আরও চরম আকার নিতে শুরু করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা বিকাশের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতে যাওয়ার উদ্যোগ নিলে পুলিশ বিকাশ বাবু এবং তার বউকে বাড়ি থেকে বের করার সাথে সাথেই চরম বিক্ষোভ শুরু হয়। অভিযোগ, পুলিশ যখন বিকাশ বাউরি এবং তার বউকে গাড়িতে তুলছিল, ঠিক তখনই সেই গাড়ির কাচে বিজেপি কর্মী টুটুল লেট নামে এক ব্যক্তির হাত আটকে গেলে 50 মিটার তাকে এভাবে ছেচড়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেই আহত বিজেপি কর্মী মল্লারপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বিকাশ বাউরির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে বলেও খবর। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের মেন্টর ধীরেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে বিজেপির কর্মীরা বিকাশের ওপর চড়াও হয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। পরে নিজেরাই নিজেদের হাত কেটে আমাদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে।”

অন্যদিকে তৃণমূল যদি ভাবে মারবে, আর আমরা চুপ করে থাকব, এটা হবে না। মারের বদলা মারই হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির মল্লারপুর 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের অবজারভার সমাপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বীরভূমের নানুর ব্লকে বিজেপির মন্ডল সভাপতি মনোজ সাধু নামে এক ব্যাক্তিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিওবা এই ব্যাপারে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নানুর ব্লক তৃনমূলের সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য।

অন্যদিকে বীরভূমের দুবরাজপুরের কুখুটিয়া গ্রামে তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয়ে পাশে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। তবে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ঘটনা বলে জানিয়ে দিয়েছেন দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ তথা ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য রফিউল খান। সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ নির্বাচন হলেও ভোটের পরেই হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে বীরভূম।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!