এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > বিরোধী দলনেতার দলবদল, শক্তিবৃদ্ধি ঘাসফুলের, ব্যাপক চাপে বিজেপি!

বিরোধী দলনেতার দলবদল, শক্তিবৃদ্ধি ঘাসফুলের, ব্যাপক চাপে বিজেপি!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  এমনিতেই লক্ষ নিয়েও সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। 200 আসনে তারা জয়লাভ করবে বলে দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহের মত বিজেপির একদম শীর্ষস্তরের নেতারা। কিন্তু বাস্তবে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, 77 টি আসনেই থেমে গেছে বিজেপির বিজয়রথ। অন্যদিকে 213 টি আসন পেয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আর তারপর থেকেই বিজেপিতে থাকা নেতা-নেত্রীদের বেসুরো মনোভাব সামনে আসতে শুরু করেছে। ভোটের আগে যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা আবার তৃণমূলে ফিরে আসতে চেয়ে আবেদন করেছেন। অন্যদিকে নীচুতলায় বিজেপি নেতা কর্মীরাও দলবদল করতে শুরু করেছেন। আর এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে বিজেপির বিরোধী দলনেতা যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।

জানা গেছে, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিজেপির বিরোধী দলনেতা অজিত বাউরি এবং কংগ্রেসের একাধিক সদস্য মিলে মোট চারজন সদস্য ঘাসফুল শিবিরের পতাকা নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন। যার ফলে পুরুলিয়াতে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, শনিবার পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিজেপিতে বিরোধী দলনেতা অজিত বাউরি। এছাড়াও ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখান মানিক চাঁদ কুমার, কংগ্রেসের রাজীব সাহু তনুশ্রী বাউরি। এদিন তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। এছাড়াও তৃণমূলের অন্যান্য নেতা নেত্রীরা এই যোগদান পর্বে উপস্থিত ছিলেন।

বলা বাহুল্য, এর ফলে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা 28 থেকে বেরিয়ে 32 – এ এসে দাঁড়াল। পাশাপাশি এই যোগদানের ফলে ভারতীয় জনতা পার্টি যে যথেষ্ট প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর তারা যথেষ্ট চাপে রয়েছে। কিন্তু এবার তাদের বিরোধী দলনেতা সহ সদস্যরা শাসকদলে যোগদান করায় বিজেপি কিভাবে জেলা পরিষদে লড়াই করবে, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল পদ্মফুল শিবিরের অন্দরমহলে।

কিন্তু হঠাৎ করে তারা কেন দলবদল করলেন? কেন তিনি বিজেপি ছেড়ে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে? এদিন এই প্রসঙ্গে অজিত বাউরি বলেন, “প্রয়াত নেতা অটলবিহারি বাজপেয়ির জমানায় বিজেপির যা ছিল, এখন আর তা নেই। বিজেপি আদর্শচ্যুত হওয়ার কারণেই আজ এই অবস্থা। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শরিক হতে আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলাম। তাছাড়া সভাধিপতির নেতৃত্বে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে যেভাবে উন্নয়নের কাজ চলছে, সেই কাজে সামিল হয়েই মানুষের সেবা করতে চাই। আগামী দিনে আরও অনেক বিজেপি নেতা-কর্মী এই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন।”

এদিকে বিজেপির বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার যথেষ্ট উজ্জীবিত ঘাসফুল শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। এদিন তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিধানসভা নির্বাচনে যে সাফল্য এসেছে, সেই সাফল্যের কারণে পুরুলিয়ার বিরোধী শিবিরে ভাঙ্গন ধরল। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্যরা খুব শীঘ্রই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন।” যদিও বা বিরোধী দলনেতার এই দলবদল নিয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারতীয় জনতা পার্টি।

এদিন ই প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের দলে ব্যক্তির মূল্য নেই ফলে যারা তৃণমূলে যোগ দিলেন, তাদের নিয়ে বিজেপি ভাবিত নয়। এদের সঙ্গে আগে থেকেই তৃনমূল কংগ্রেসের যোগাযোগ ছিল।” আর এখানেই প্রশ্ন, বিজেপির জেলা সভাপতি যদি জানতেনই যে, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিরোধী নেতার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, তাহলে কেন তার বিরুদ্ধে আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কেন এখন এই ধরনের কথা বলতে হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনের পরে দিনকে দিন আরও সমস্যার মুখে পড়তে শুরু করেছে। আর তার প্রকৃষ্ট নমুনা দেখা গেল পুরুলিয়া জেলা পরিষদে। তাই এখন থেকেই বিজেপি যদি তাদের ঘর সামলাতে না পারে, তাহলে তৃণমূলের চাপে আরও খান খান হয়ে যেতে পারে গেরুয়া শিবির। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, নিজেদের ঘর সামলাতে বিজেপি কি রণনীতি প্রয়োগ করে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!