এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > বিরোধীদের তরফে তোলা দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলের চেয়ারম্যান, ঘাসফুলে অস্বস্তি!

বিরোধীদের তরফে তোলা দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলের চেয়ারম্যান, ঘাসফুলে অস্বস্তি!

বামেদের সরিয়ে আইনের শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবিধানের শপথ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার বাংলায় সুশাসন ফিরবে। কিন্তু শাসক দলের নেতাদের কাছে ক্ষমতার স্বাদ বরাবরই মধুর থাকে। এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হয়েছে। দল পাল্টেছে, রং পাল্টেছে, নেতারাও পাল্টেছেন। কিন্তু স্বভাবের পরিবর্তন হয়নি। বিগত বাম সরকারের আমলে তৃণমূলের তরফে নেতাদের বিরুদ্ধে করে খাওয়ার রাজনীতির ব্যাপক অভিযোগ করা হয়েছিল।

এমনকি বর্তমানে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগ তুলে সরব হচ্ছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তবে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে শাসকদলের পক্ষ থেকে বারেবারেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। কথায় আছে, সত্য বেশিদিন চাপা থাকে না। আর এবার সেই সত্যের ঢাকনা খুলে দিলেন তৃণমূলের গুসকরা পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান বুর্দ্ধেন্দু রায়। সূত্রের খবর, রাজ্যের অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রের মত রবিবার “বাংলার গর্ব মমতা” কর্মসূচির অংশ হিসেবে গুসকরা বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুরনো কর্মীদের স্বীকৃতি সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

যেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, গুসকরা পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান বুর্দ্ধেন্দু রায় সহ অন্যান্যরা। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দেন গুসকরা তৃণমূলের বিদায়ী চেয়ারম্যান। দলের কাউন্সিলরদের কি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন তিনি, তা প্রকাশ্যে এনে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দেন তিনি। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে গুসকরা পৌরসভার তৃণমূলের বিদায়ী চেয়ারম্যান বলেন, “চেয়ারম্যান হওয়ার পরে আমার ক্ষমতাবলে প্রত্যেক কাউন্সিলারের রিকমেন্ডেশনে একটা করে চাকরি গুসকরা পৌরসভায় দিয়েছিলাম।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর দলের কর্মসূচিতে এভাবে নিজের অজান্তেই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গেছেন সেই বুর্দ্ধেন্দু রায়। একাংশের অভিযোগ, নানা সময় গুসকরা পৌরসভায় স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। আর এবার দলের বিদায়ী চেয়ারম্যানের কথা থেকেই স্পষ্ট যে, দলের কাউন্সিলরদের কোটা দিতে গিয়ে তৃণমূল দুর্নীতি করেছে। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে বিদায়ী চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।

এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের বিদায়ী কাউন্সিলর মনোজ সাউ বলেন, “তৃণমূলের পৌরসভা যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করেছে তাতে দ্বিচারিতা এবং স্বজনপোষণ হয়েছে, এই অভিযোগ আমরা আগেও করেছিলাম। এদিনের পৌরপ্রধানের বক্তব্যে সেটাই প্রমাণ হয়ে গেল।” একইভাবে এই ব্যাপারে বিজেপি নেতা সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, “পৌরসভা যোগ্যতার নিরিখে নিয়োগ না করে স্বজনপোষণ করে কর্মী নিয়োগ করেছে। ফলে মাঝেমধ্যেই বেতন নিয়ে সমস্যা হয়।” কিন্তু তিনি এমন কথা কেন বললেন! তাহলে কি সত্যিই তারা দুর্নীতি করেছেন? এদিন এই প্রসঙ্গে বিদায়ী চেয়ারম্যান বুর্দ্ধেন্দু রায় বলেন, “বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদন করিয়েই এই কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।” আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন।

যদি বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদন করিয়ে কর্মী নিয়োগ করা হয়, তাহলে বিদায়ী চেয়ারম্যান কেন দলের কর্মসূচিতে বললেন যে, কাউন্সিলরদের রেকমেন্ডেশনে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে! তাহলে চেয়ারম্যানের কোন কথা বিশ্বাস করবেন সাধারণ মানুষ! বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য, পৌরসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূলের বিদায়ী চেয়ারম্যানের বক্তব্য নিঃসন্দেহে তৃণমূলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে। তবে পরিস্থিতি যে এতটা বিপাকে চলে যাবে, তা বুঝতে পারেননি বুর্দ্ধেন্দুবাবু নিজেও। তাই আগেভাগে বিতর্কিত মন্তব্য করেও, পরবর্তীতে অন্যান্য নেতাদের মতই তাঁর মন্তব্যে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে দাবি করলেন তিনি। কিন্তু শাক দিয়ে মাছ ঢাকা হলেও, শাকটা কি দিয়ে ঢাকা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!