এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বিস্ফোরক অভিযোগে ঋণখেলাপিদের নিয়ে মোদী সরকারের অস্বস্তি হাজার গুন বাড়িয়ে দিলেন রঘুরাম রাজন

বিস্ফোরক অভিযোগে ঋণখেলাপিদের নিয়ে মোদী সরকারের অস্বস্তি হাজার গুন বাড়িয়ে দিলেন রঘুরাম রাজন


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একটা সময় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে রীতিমতো ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হয় সরকারের। একের পর এক বিতর্কের সূত্রপাত হয়। আর সেই বিতর্কের হাত ধরেই রিজার্ভ ব্যাংকে পরপর দুজন গভর্নর পদত্যাগ করেন। তবে কি কারণে এই পদত্যাগ তার সঠিক কোন কারণ আজ পর্যন্ত শোনা যায়নি। তবে বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন অনুমান করা হলেও পদত্যাগকারী গভর্নরদের পক্ষ থেকে এবং সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই মুখ বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে এবার সময় এসেছে কিছু কথা সামনে আসার। আর সেই উদ্দেশ্যেই উর্জিত প্যাটেল এবার লিখে ফেলেছেন একটি বই।

বইটির নাম- ‘ওভারড্রাফ্ট: সেভিং দ্য ইন্ডিয়া সেভার’।  2016 সালে রিজার্ভ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর রঘুরাম রাজন পদত্যাগ করেন। অনেকেই দাবি করেন, সরকারের সঙ্গে তাঁর খটামটি লাগতেই রঘুরাম রাজন পদত্যাগ করে বসেন। এবং তারপরে রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর পদে আসেন উর্জিত প্যাটেল। উর্জিত প্যাটেল রিজার্ভ ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সরকারের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ শুরু হয়। এবং শেষ পর্যন্ত 2018 সালের ডিসেম্বর মাসে উর্জিত প্যাটেলও রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর এর পদ ছেড়ে দেন।

শুক্রবার উর্জিতের লেখা বইটি প্রকাশ পেয়েছে এবং এই বইয়ের মধ্যেই উর্জিত প্যাটেল রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর পদ ছাড়ার কারণগুলি ব্যাখ্যা করেছেন। আরবিআই এর প্রাক্তন গভর্নর এই বইতে লিখেছেন, সরকারের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ এর প্রধান কারণ ছিল তৎকালীন ঋণখেলাপি আইন। উর্জিত প্যাটেলের দাবি, এই ঋণখেলাপি আইন বলবৎ হলে ব্যাংক জালিয়াতির পরিমাণ অনেকটাই কমত। সেইসময় যখন ঋণখেলাপি আইন সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি হয় আরবিআই এর পক্ষ থেকে, প্রথমদিকে সরকার কোনো আপত্তি নয়া জানালেও পরবর্তীতে আপত্তি ওঠে।

তারপরেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সার্কুলারটি লঘু করা বা প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসতে থাকে আরবিআইয়ের ওপর বা বলা ভাল উর্জিতের ওপর। আর এই চাপ সামলাতে নয়া পেরেই উর্জিত 2018 সালের ডিসেম্বর মাসে পদত্যাগ করেন। ঋণখেলাপি আইন আসলে কি ছিল সে সম্পর্কে নিজের বইতে প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর স্বচ্ছ ধারণা দিয়েছেন। ঋণখেলাপ সংক্রান্ত আরবিআই একটি সার্কুলার জারি করে যেখানে বলা হয়, যে সমস্ত ঋণগ্রহীতা সময়মতো নিজেদের ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারবেনা, বিভিন্ন ব্যাংক তাঁদের নামের একটি তালিকা তৈরি করবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এবং ঋণখেলাপি হিসেবে তাঁদের শনাক্ত করার কাজ শুরু হবে। এরপর দেউলিয়া ঘোষণা করা হবে তাঁদের। সে সময় ঋণখেলাপি সংস্থার যখন নিলাম হবে তখন প্রতিষ্ঠাতারা যাতে ওই সংস্থার শেয়ার আর কিনতে না পারেন তা নিশ্চিত করা হত এই সার্কুলারের দ্বারা। উর্জিত প্যাটেল পদত্যাগ করার পর রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর পদে আসেন শক্তিকান্ত দাস। এবং তিনি রিজার্ভ ব্যাংকের ঋণখেলাপি সার্কুলারটি অনেকটাই লঘু করে দেন। কিস্তি শোধ করতে না পারলে ঋণগ্রহীতার নাম যে আলাদা করে শনাক্ত করা হবেনা তাও তিনি জানিয়ে দেন।

এমনকি দেউলিয়া ঘোষণা করার নির্ধারিত সময়সীমাও তুলে দেওয়া হয় নতুন সার্কুলারে। অন্যদিকে ওয়াকিবহাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উর্জিত প্যাটেলের সঙ্গে সরকারের বিবাদের আরো একটি কারণ ছিল। আর তা হলো, ভোটের আগে আরবিআইতে গচ্ছিত টাকার একটি অংশ সরকার দাবি করে উন্নয়নের কাজে লাগাবে বলে। কিন্তু সে সময় তৎকালীন গভর্নর উর্জিত প্যাটেল তীব্র আপত্তি জানায় এবং সেখান থেকেই শুরু হয় গন্ডগোল। যদিও পরে শক্তিকান্ত দাস 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই রিজার্ভ ব্যাংক গভর্নরের পদে আসেন।

এবং তিনি এসেই রিজার্ভ ব্যাংকের অর্থ সরকারকে উন্নয়নমূলক খাতে ব্যবহার করার অনুমতি দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, উর্জিতের এই বই নিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই আলোড়ন উঠবে দেশজুড়ে। মনে করা হচ্ছে এই বইটির মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর কতটা সরকার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন। এমনকি দলের স্বার্থে দেশের মানুষের টাকা দিতেও কোনো কার্পণ্য বোধ করেননা রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর। আপাতত উর্জিত প্যাটেলের নতুন বই নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে এই বই বিতর্কের রেশ যে অনেক দূর গড়াবে, সে ব্যাপারে একমত সবাই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!