বিভিন্ন ইস্যুতে এবার সরকারবিরোধী সমালোচনা করলেন সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপাল কলকাতা বর্ধমান মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য November 17, 2019 রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বন্দ্ব বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনীতির ময়দানে মুখ্য চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের মধ্যে মতভেদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন আগে যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে প্রথম মতভেদ প্রকাশ্যে আসে। এরপর একের পর এক ঘটনায় রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকাশ্য হয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কালী পূজার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে রাজ্যপালের সস্ত্রীক মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে উপস্থিত হওয়ায় রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল এবার বুঝি দ্বন্দ্বের অবসান হলো। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ হয়েছে। পরবর্তীকালে একের পর এক ঘটনায় আবারও রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের দ্বন্দ্বের প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যপালের সিঙ্গুর যাওয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সে প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যপাল জানান, সিঙ্গুরে তিনি হঠাৎ যাননি, সম্পূর্ণ প্রশাসনিক নিয়ম মেনেই তিনি সিঙ্গুরে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু সেখানে যেতেই রাজ্য রাজনীতি মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হওয়ায় রাজ্যপাল অত্যন্ত অবাক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল আরো বলেন, তিনি সংবিধান মেনে সমস্ত কাজ করছেন। সংবিধানের বাইরে যেদিন তিনি কোন কাজ করবেন, সেদিন তাকে অনৈতিক কাজ করার দায়ে অভিযোগ জানালে তিনি কিছু মনে করবেন না। অন্যদিকে, সম্প্রতি রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের কাছে হেলিকপ্টার চাওয়ায় তা না পেয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। ফারাক্কা যাওয়ার উদ্দেশ্যে হেলিকপ্টার না মেলায় রাজ্যপাল সড়ক পথেই ফারাক্কা যান। বর্ধমান সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নিয়ে তারপর তিনি ফারাক্কার রাস্তা ধরেন। ফারাক্কা যাওয়ার আগে তিনি বর্ধমানে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এবং সেখানেই তিনি রাজ্য সরকারের আচরণ নিয়ে তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে তিনি হেলিকপ্টার এর জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের কাছে। কিন্তু তার আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। আর এরপরেই তিনি বলেন, যেহেতু তিনি কথা দিয়েছিলেন যাওয়ার জন্য, তাই সড়ক পথে যেতে গেলে রাত তিনটের সময় রওনা হতে হলেও তিনি পিছপা হবেন না। এদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চলতে থাকা ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের অধিকার সর্বাগ্রে। রাজ্য সরকারের অধিকার রাজ্যপালের তুলনায় কম। রাজ্যপাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। দীর্ঘদিন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নির্বাচন না হওয়ার কারণে পরিবেশ ক্রমশ খারাপ হয়েছে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার পরিবেশ আরো ভালো হওয়া উচিত। শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়, তা তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন। সম্প্রতি দিল্লির জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূর্তি ভাঙার ঘটনায় রাজ্যপাল বলেন, রাষ্ট্রের সম্মানীয় ব্যক্তিদের কখনো কোনো ভাবেই অপমান করা উচিত নয়। রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে নিত্যদিন যেভাবে বাকবিতণ্ডা বেড়ে চলেছে, তাতে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনকে যথেষ্টই নাস্তানাবুদ করছেন। কখনো কটাক্ষ, কখনো মাঠে নেমে সরাসরি বিরোধিতা, আবার কখনো সৌজন্যে দেখাচ্ছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের এহেন আচরণে তৃণমূল সরকার কোন দিকে যাবে তা ভেবে পাচ্ছে না, বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, এবার সরাসরি রাজ্যপালের বিরোধিতায় নামতে চলেছে তৃণমূল সরকার। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -