এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও, একের পর এক পুজো হাইজ্যাক তৃণমূলের

বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও, একের পর এক পুজো হাইজ্যাক তৃণমূলের

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক। লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দলের তকমা পেয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূল বনাম বিজেপির দ্বৈরথ লক্ষ্য করে বঙ্গবাসী। মাঝেমধ্যেই বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হত, কেন্দ্রের কোনো প্রকল্প রাজ্যে এলেই তাতে ক্রেডিট নিতে রাজ্যর নেতারা কেন্দ্রের কাউকে সেইখানে অংশগ্রহণ না করিয়ে নিজেরা তড়িঘড়ি সেই প্রকল্পের উদ্বোধন করে সাধারণ মানুষের মনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।

আর এবার বিজেপির অভিযোগকে কিছুটা সত্যি করে বিজেপি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পুজো উদ্বোধন করার কথা থাকলেও তা নিজেদের বাগে নিয়ে এসে উদ্বোধন করল শাসকদলের নেতারা। বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বাংলা ও বাঙালির সবথেকে প্রিয় উৎসব দুর্গোৎসবকে হাতিয়ার করে বাঙালির মনে-প্রাণে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে সচেষ্ট হয় রাজ্যের শাসক বিরোধী দুই রাজনৈতিক দলই।

তৃণমূল না বিজেপি! কোন দলের নেতা-নেত্রীদের কাছে বেশি পুজো উদ্বোধন করার অফার আসে! তা নিয়ে রীতিমত কম্পিটিশন শুরু হয়ে যায়। আর এবার অভিযোগ উঠলো বিজেপি নেত্রী তথা রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর উদ্বোধনের তালিকায় থাকা ডানকুনির দুটো পুজো হাইজ্যাক করে নিয়ে তা উদ্বোধন করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, বুধবার রাতে এখানকার একটি পুজোর উদ্বোধন করে দেয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এরপরই বিজেপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, বিশেষ বৈঠক থাকার কারণে দেবশ্রী চৌধুরী আর আসতে পারছেন না। এদিকে এই ঘটনার পরই বিন্দুমাত্র দেরী না করে সেই দেবশ্রী চৌধুরীর হাত দিয়ে উদ্বোধন করার জন্য দুটো পুজোমণ্ডপ ঠিক করা থাকলেও তা রাতারাতি বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করে দেয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

বস্তুত, ডানকুনি সপ্তর্ষি ক্লাব, দক্ষিণ সুভাষপল্লী অ্যাথলেটিক ক্লাব এবং নবজাগরণ ক্লাবের পূজো এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর দিয়ে করাতে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তড়িঘড়ি বুধবার দক্ষিণ সুভাষপল্লীর পুজো তৃণমূলের পক্ষ থেকে উদ্বোধন করে দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার সপ্তর্ষি ক্লাবের পূজো ফের তৃণমূল নেতারা উদ্বোধন করেন। আর শারদ উৎসবের এই উৎসরিত মুহূর্তে বিজেপি মন্ত্রীর পুজো উদ্বোধন করার কথা থাকলেও সেই পুজো তৃণমূল উদ্বোধন করে বিজেপিকে পিছনের সারিতে ফেলে দিতে চাইল বলেই মনে করছে বিশ্লেষকদের একাংশ।

তবে এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক-বিরোধী দুই দলের মধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এদিন এই প্রসঙ্গে শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি শ্যামল দাস বলেন, “জবরদখলটাই তো তৃণমূলের সংস্কৃতি। ওরা পেশি শক্তির ব্যবহার করে পুজো ছিনতাই করেছে। আর আমাদের মন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ প্রয়োজনে ডেকে নেওয়ায় তিনি আসেননি। তবে নবমীতে তিনি অস্ত্রপুজোতে আসবেন।”

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে এই দাবি করা হলেও তা নিয়ে পাল্টা তাদের খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল। এদিন এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ তথা তৃণমূল নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “দখলটখল কিছু নয়। ওই ক্লাবগুলোর সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপি পূজামণ্ডপে রাজনীতি করতে চেয়েছিল। আমি সেই রাজনীতির চেষ্টা বন্ধ করেছি। একটি ক্লাবের পূজো বুধবার রাতে ও একটি বৃহস্পতিবার করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে ওরা আর মন্ত্রীকে আনার কথা বলছে না।”

তবে পুজো উদ্বোধন নিয়ে তৃণমূল বনাম বিজেপির এই দ্বন্দ্ব দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে রাজনীতি কখনও এক সারিতে বসতে চায় না। কিন্তু যেভাবে বাংলা ও বাঙালির সবথেকে প্রিয় উৎসব শারদউৎসবকে পাখির চোখ করে শাসক-বিরোধী দুই রাজনৈতিক দলই কে বেশি পুজো উদ্বোধন করবে! তা নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে, তা সত্যিই অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!