এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > এই সরকারি কর্মীদের আন্দোলনে এবার বিধানসভায় একযোগে মোশন আনতে চলেছে বিজেপি-কংগ্রেস, জানুন বিস্তারিত

এই সরকারি কর্মীদের আন্দোলনে এবার বিধানসভায় একযোগে মোশন আনতে চলেছে বিজেপি-কংগ্রেস, জানুন বিস্তারিত


গতকাল হাওড়া ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন হলে অনুষ্ঠিত হল পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা ঐক্য মঞ্চের কনভেনশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র, কংগ্রেসের অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের জাতীয় আহ্বায়িকা চন্দ্ররেখা পাণ্ডে, সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীল, পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা ঐক্য মঞ্চের প্রধান উপদেষ্টা সুবীর সাহা, পূরণ প্রসাদ ও তপন রায়।

এছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন, জয়ন্তী চক্রবর্তী, ব্রজ মান্না, বিশাখা দাস, রিনা সরকার। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত ভাতা বাড়ার দুমাসের মধ্যে সেই ভাতার পরিমান কমে যাওয়ায় তীব্র সঙ্কটে পড়েন রাজ্যের ২ লক্ষ ৩০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহকারীরা। গত ২৩ শে আগস্ট, স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের ‘অ্যাডিশনাল অনারিয়াম’ ১,০০০ টাকা করে বাড়ানো হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী গত অক্টোবর মাসের বেতনে এই বর্ধিত ভাতার সুবিধাও পান তাঁরা।

কিন্তু হঠাৎ করেই গত ১ লা নভেম্বর, রাজ্যের জয়েন্ট সেক্রেটারি অভিজিৎ মিত্র এক নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন যেখানে জানানো হয়েছে রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ‘অ্যাডিশনাল অনারিয়াম’ ১,০০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪০০ টাকা করা হল এবং তা সহায়িকাদের ক্ষেত্রে ১,০০০ টাকা কমিয়ে ৭০০ টাকা করা হল। সরকারি চাকরিতে একবার বেতন বা ভাতা বৃদ্ধি করলে তা কমানোর কোন আইন নেই – যদি না কোন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে, কোনরকম আইনের পারে না করেই প্রথমে ভাতা বৃদ্ধি করে, একমাস তা প্রদান করেও পরে কমিয়ে দেওয়া হল – যা কার্যত নজিরবিহীন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকালের কনভেনশনে সিদ্ধান্ত হয়-
১. অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ৬০০ টাকা এবং সহায়িকাদের ৩০০ টাকা ‘অ্যাডিশনাল অনারিয়াম’ হ্রাস করার কালা আদেশনামা প্রত্যাহার করতে হবে
২. প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটি সুব্যবস্থা করতে হবে
৩. অবসরের পর অনারিয়ামের অর্ধেক পেনশনের সুব্যবস্থা করতে হবে
৪. সুপারভাইজার পদের ৭৫% পদ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে
৫. গ্রূপ-ডি পদের৫০% পদ সহায়িকা দের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে

একইসঙ্গে, এই প্রস্তাবগুলি রাজ্যের সমস্ত মাননীয়/মাননীয়া বিধায়ক এবং সাংসদের সহযোগিতা নিয়ে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও প্রস্তাব নেওয়া হয় I একইসঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা ঐক্য মঞ্চের প্রধান উপদেষ্টা সুবীরবাবু জানান, বিভিন্ন আদর্শের সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা সংগঠনের কাছে আমাদের অনুরোধ এই দাবিগুলি আদায়ের জন্য আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত কাম্য I

সুবীরবাবু আরও জানান যে, রাজ্যের সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের কাছে অনুরোধ যে যার সংগঠন করেও নিজের দাবী আদায়ের জন্য এই অরাজনৈতিক মঞ্চে যোগদান করুন I সকল বন্ধুকে অনুরোধ আমাদের রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই বার্তাটি সকলকে শেয়ার করুন এবং এই বঞ্চিত মা দিদি বোনেদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন I

কনভেনশনে বক্তব্য রাখছেন আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র।

অন্যদিকে, আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র জানান, রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রতি এই বঞ্চনার প্রতিবাদে তিনি বিধানসভায় মোশন আনবেন। এ ব্যাপারে তিনি কনভেনশনে উপস্থিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীলকে অনুরোধ করেন, যেন তিনি এই ব্যাপারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষকে বিধানসভায় সমবেতভাবে মোশন আনার জন্য অনুরোধ করেন। অসিতবাবুর বক্তব্য, কেন্দ্রের লড়াই আলাদা, রাজ্যের লড়াই আলাদা। তাই, রাজ্য সরকারের এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে একযোগে কংগ্রেসে-বিজেপির প্রতিবাদ জানাতে ও বিধানসভার তা নিয়ে আলোচনা করতে তিনি প্রস্তুত।

অন্যদিকে, মাননীয় বিধায়কের এই প্রস্তাবে তৎক্ষণাৎ সম্মতি দিয়ে দেবাশিসবাবু স্পষ্ট জানান, তিনি এই ব্যাপারে অবশ্যই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কথা বলবেন। যতদূর তাঁর জানা আছে, দিলীপবাবুও এই ব্যাপারে বিধানসভায় মোশন আনার ব্যাপারে সহমত। এর জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগঠনের তরফে তাঁকে দেওয়া হলেই – তিনি এই আবেদন দিলীপবাবুর কাছে পৌঁছে দেবেন। একইসাথে তিনি জানান, কেন্দ্র অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করলে রাজ্য সরকারও তা বৃদ্ধি করে।

এরপরেই দেবাশিসবাবু জানান, এ বারের কেন্দ্র তা বৃদ্ধি করার পর রাজ্য সরকার প্রথমে বাড়িয়েছিল। কিন্তু, পরে তা এইভাবে কমিয়ে দেওয়া – নজিরবিহীন! কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন শিক্ষার পাশাপাশি দেশের শিশুপুষ্টির অন্যতম বড় স্তম্ভ এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা। অথচ, তাঁরাই এই রাজ্যে সবথেকে বঞ্চিত। চাকরি জীবনে পারিশ্রমিক বাড়িয়ে তা কমিয়ে দেয় হয় – হাতে পান নগন্য টাকা, যা দিয়ে আজকের দিনে জীবনযাপন করা দুঃসহ। তার উপরে, নেই অবসরকালীন কোনো সুযোগ-সুবিধা। তাই, দলমত নির্বিশেষে সকলের উচিত এগিয়ে এঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং এই অসহায় অবস্থার কথা সরকারের কানে যথাযথভাবে পৌঁছে দেওয়া।

কনভেনশনে বক্তব্য রাখছেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীল।
কনভেনশনে বক্তব্য রাখছেন পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা ঐক্য মঞ্চের প্রধান উপদেষ্টা সুবীর সাহা।
আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!