এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপির বৈঠকে দিল্লিতে তুলকালাম! ব্যাকফুটে দিলীপ-সুব্রত? বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের?

বিজেপির বৈঠকে দিল্লিতে তুলকালাম! ব্যাকফুটে দিলীপ-সুব্রত? বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের?


 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –বাংলার সংগঠনকে চাঙ্গা করার জন্য দিল্লিতে চলছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির বৈঠক। প্রথম থেকেই এই বৈঠকে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। যে মুকুল রায় তৃণমূল ভাঙালেন এবং বিজেপিকে লোকসভায় 18 টি আসন পাইয়ে দিতে মরণপণ চেষ্টা করলেন, সেই তিনিই বৈঠকের মাঝপথে চলে এসেছিলেন কলকাতায়, বেড়েছিল জল্পনা! নানা মহল থেকে খবর পাওয়া গিয়েছিল, বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব সেই বৈঠকে বাংলায় বিজেপি কত আসন পাবে তা নিয়ে একটি তথ্য পেশ করে।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নাকি সেই বৈঠকে দাবি করেছিলেন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ১৯০ থেকে ২০০ আসন জিতে ক্ষমতায় আসবে ভারতীয় জনতা পার্টি। গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই গুঞ্জন, এই সংখ্যা মানতে নারাজ ছিলেন বঙ্গ রাজনীতির ‘চাণক্য’ মুকুল রায়! তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ব্যাপারটা অত সহজ নয়। বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে হলে আরও অনেক পরিশ্রম করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই মুকুলবাবুর এই কথা তেমন ভাবে হজম করতে পারেননি রাজ্য বিজেপির নেতারা।

গেরুয়া শিবিরের কেউ সরকারিভাবে এই তথ্য মানতে রাজি না থাকলেও। রাজনৈতিক মহলে তীব্র গুঞ্জন – এই নিয়ে তীব্র বিতর্কের সূত্রপাত হয়। আর তাই, ক্ষুব্ধ ও অপমানিত মুকুল রায় আর সেই বৈঠকে থাকার প্রয়োজনীয়তা মনে করেননি! তিনি বৈঠকের মাঝেই চলে এসেছিলেন কলকাতায়! আর তখন থেকেই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল, তাহলে কি মুকুলবাবু এবার বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছেন? বা বলা ভালো, মুকুল রায়ের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়তে বাড়তে – পাহাড় প্রমান ফাটলের আকার নিয়েছে?

যদিও বা প্রথম থেকেই মুকুল রায় জানিয়েছেন যে, চোখের সমস্যার কারণে তিনি কলকাতায় ফিরে এসেছেন। এর সঙ্গে দলের দূরত্ব হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে মুকুল রায়ের সঙ্গে বিজেপির দিলীপ ঘোষের যে একটা তীব্র দ্বন্দ্ব চলছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ সূত্র মারফত খবর, এবার বিজেপির সেই কেন্দ্রীয় বৈঠকে দিলীপ ঘোষের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিলেন বাংলা বিজেপির একাধিক সাংসদ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভ উগরে দিলেন একাধিক শীর্ষ নেতা!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সরকারিভাবে এই নিয়ে কেউ একটিও শব্দ খরচ করতে নারাজ! কিন্তু, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিজেপি হেভিওয়েট নেতার বক্তব্য, গত পরশু হওয়া এক বৈঠকে দিলীপ ঘোষ ও সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের উওপর নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ্যেই উগরে দেন শমীক ভট্টাচার্য, অর্জুন সিংহ, সব্যসাচী দত্তরা। এমনিতেই মুকুল রায়ের কলকাতায় ফিরে আসা নিয়ে ক্ষোভের পারদ চড়ছিল। তা এতটাই উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় যে পরবর্তীকালে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, স্বপন দাশগুপ্ত বা বাবুল সুপ্রিয় দিল্লিতে থেকেও আর দিলীপবাবু-সুব্রতবাবুর বৈঠকে যোগ দেন নি।

এদিকে, আরও গুঞ্জন বিজেপির ওই দুই শীর্ষ নেতার অস্বস্তি আরও কয়েকগুন বেড়ে যায়, যখন লকেট চট্টোপাধ্যায় বা রূপা গাঙ্গুলির মত হেভিওয়েট সাংসদ সরাসরি অভিযোগ করে বসেন যে, তাঁদের নাকি কোনো কাজই করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি, বিজেপির সদ্য ঘোষিত হওয়া রাজ্য কমিটির একাধিক হেভিওয়েট নেতাও নাকি অভিযোগ জানিয়েছেন যে, তাঁরা নামেই পদ পেয়েছেন। কিন্তু, তাঁরা কাজ করার জায়গা বা স্বাধীনতা পাচ্ছেন না। সবথেকে বড় কথা, এই হাই-ভোল্টেজ বিক্ষোভের কথা সরাসরি পৌঁছেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কানেও।

আশ্চর্যজনকভাবে যে দিলীপ ঘোষের উপর ভরসা করে বিজেপি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবে বলে মনে করা হয়েছিল, সেই দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বাংলার একাধিক নেতা নেত্রী থেকে শুরু করে সাংসদরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করায় এখন দিলীপবাবু এবং তার গোষ্ঠী কার্যত অস্বস্তিতে পড়লেন বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে এতদিন বিজেপির রাজ্য নেতারা যে রিপোর্ট কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন তাতে, জানা গেছে সব ঠিক আছে! কিন্তু, সব সাংসদ ও রাজ্য নেতাদের বৈঠকের পরে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে – বঙ্গ-বিজেপিতে গণ-বিস্ফোরণ ঘটে গেছে!

ফলে নড়েচড়ে বসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। বিভিন্ন মহলের তরফে খবর পাওয়া যাচ্ছে, অর্জুন সিংহ থেকে শুরু করে সৌমিত্র খাঁয়ের মত বিজেপি সাংসদরা দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানানোয় এবার বাংলার সংগঠনের ব্যাপারে বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে নেতা-নেত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পদ হারাতে পারেন একাধিক হেভিওয়েট বিজেপি নেতারা বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ তো আরও একধাপ এগিয়ে জানিয়ে দিচ্ছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সামগ্রিক ঘটনায় যেরকম চটেছেন, তাতে নাকি খোলনোলচেই বদলে যেতে পারে বঙ্গ-বিজেপির!

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লির এই চরম উত্তপ্ত বৈঠকের প্রভাব বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণে পড়তে বাধ্য। কেননা, রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দলের সাংসদরা ও রাজ্যে পদাধিকারীরা একযোগে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন – বিজেপির ক্ষেত্রে এই ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন! ফলে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে সমগ্র ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার কড়া পদক্ষেপ নেবেন সে ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল! কিন্তু কি হবে সেই পদক্ষেপ? বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর একাধিক নেতার বক্তব্য, আর একটা সপ্তাহ অপেক্ষা করুন না! সব চিত্র পরিষ্কার হয়ে যাবে!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!