প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ব্যঙ্গচিত্র এর কথা নিশ্চয়ই অনেকেই শুনেছেন। রাজনীতি থেকে শুরু করে সমাজনীতি এমনকি জাতীয়তাবাদের অঙ্গিনাতেও ব্যঙ্গচিত্রের অনেক নিদর্শন পাওয়া যায়। তবে সম্প্রতি সেই ব্যঙ্গচিত্রে বাংলার রাজনীতি উঠে আসবে, সেটা সম্ভবত অনেকেই অনুমান করেননি।

সম্প্রতি বীরভূমের ইলামবাজারে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এমনই একটি পোস্টারে বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই পোস্টারের দেখা গেছে এক রাক্ষসীর ছবি। আর পোস্টারের গায়ে লেখা রয়েছে, “হাঃ হাঃ হাঃ হিঃ হিঃ হিঃ। আমি পশ্চিমবঙ্গের সব লোক খেয়ে ফেলবো।”

বস্তুত, এই পোস্টার এবং পোস্টারে উল্লেখিত শব্দগুলি যে বর্তমান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে, সেটা আলাদা করে বলে দিতে হয় না। সেইখানে এই সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করতে বিজেপির তরফে এই পোস্টার সম্পর্কে “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করেই এই পোস্টার” একথা বলা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আর বিজেপির তরফ থেকে এই পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রীকে রাক্ষসীর সাথে তুলনা করার পাল্টা দিতে মুখ খুলতে দেখা গেছে তৃণমূল কর্মীদেরও।সেখানে পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রীকে রাক্ষসীর সাথে তুলনা করার কারণ হিসাবে ইলামবাজার ব্লকের বিজেপি সম্পাদক দীপঙ্কর জোর জানান, “দিদি যেদিন থেকে ক্ষমতায় বসেছে সেদিন থেকে আমাদের সাধারণ মানুষের টাকা, নারদা সারদা কেলেঙ্কারি থেকে আরম্ভ করে একশ দিনের টাকার কেলেঙ্কারি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কেলেঙ্কারি থেকে আরম্ভ করে আম্ফান কেলেঙ্কারি।”

তাঁর কথায়, আমফানের জন্য কেন্দ্র থেকে দেওয়া টাকা যারা প্রাপ্য তারা না পেয়ে অন্যায় ভাবে তৃণমূলের কর্মীরা পেয়েছে। সেই জন্যই তাঁরা দলীয়ভাবে এই প্রচার চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। তবে এই পোস্টারের পাল্টা হিসেবে তৃণমূল নেতা দুলাল রায় বলেন, “ওই পোস্টারে যে রাক্ষসীর ছবি রয়েছে ওটা মুখ্যমন্ত্রীর নয়, আসলে ওটা বিজেপির নেতানেত্রীদেরই”।

তাঁর কথায়, বিজেপি নিজেরাই নিজেদের দলীয় নেতানেত্রীদের ছবি তুলে ধরেছে। ওরাই যে রাক্ষসী তাই এই পোস্টারের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে বলেই অভিমত জানিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে আগামী নির্বাচনে এই চেহারা দেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষ ভোট দেবেন বলেও মন্তব্য করতে শোনা গেছে তাঁকে।

অন্যদিকে এই পোস্টার ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেখানে অনেক বিশ্লেষকের মতেই, দিন দিন রাজনীতির শালীনতা হারাচ্ছে। সেখানে কাউকে কটাক্ষ করতে গেলে যে একটা সামান্য শালীনতা বজায় রাখতে হয়, সেটাই এখন মানুষের মধ্যে নেই বলেই মনে করছেন অনেকে। সেইসঙ্গে শুধু শাসক বা বিরোধী নয়, সকলের মধ্যেই সেই শালীনতা হারানোর ছবি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলেই মতামত দিয়েছেন তাঁরা।