এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > নদীয়াতে ক্রমে ভেঙে টুকরো-টুকরো হচ্ছে তৃণমূল, শক্তিবৃদ্ধি গেরুয়া শিবিরের

নদীয়াতে ক্রমে ভেঙে টুকরো-টুকরো হচ্ছে তৃণমূল, শক্তিবৃদ্ধি গেরুয়া শিবিরের


গত বৃহস্পতিবার রানাঘাটে বিজেপির নদীয়া দক্ষিণ জেলা কার্যালয়ে, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে বিভিন্ন দল থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক বিজেপিতে যোগ দিলেন। সম্মেলনের নাম ছিল যোগদান মেলা।গেরুয়া শিবিরের দাবি প্রায় পাঁচ হাজার নেতা কর্মী ও সমর্থক এ দিন তাদের দলে যোগদান করেছেন। প্রায় ২ হাজার কর্মী সমর্থক নিয়ে রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি প্রদীপ সরকার তৃণমূল ছেড়ে এদিন বিজেপিতে যোগ দিলেন।

ওই একই ব্লকের কালীনারায়নপুর পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান শংকর বিশ্বাস ও উপপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ বিশ্বাসও এদিন শাসক দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে এসেছেন। তবে শুধু শাসকদলই নয়, এদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সিপিএম থেকেও বলে জানা গেছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ভাস্কর কুমার দাস এদিন বিজেপিতে যোগদান করেন। রানাঘাট ২ নম্বর চক্রের প্রাথমিক শিক্ষক কংগ্রেস সংগঠনের কয়েকজনও যোগদান করেছেন বিজেপিতে।

গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেই রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি প্রদীপ সরকার অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে এই ব্লকের অধীনস্থ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারি প্রকল্পের ঘর নিয়ে চরম দুর্নীতি হয়েছে। আমরা এতদিন শাসক দলে থেকে এই অন্যায় ও দুর্নীতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু দলের নেতারা তা গ্রাহ্য করেননি। যেহেতু আমরা প্রতিবাদ করতাম তাই আমাদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও দলের হয়ে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। সেই সমস্ত কারণেই বিজেপিকে বেছে নিয়েছি।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দিলীপবাবুর হাত ধরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মঞ্চে বিজেপিতে যোগদান করেন। এই নিয়ে বিজেপি কর্মীদের একাংশ মঞ্চের পেছন থেকে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। রানাঘাট এক নম্বর ব্লকের বিজেপির পুরোনো এক কর্মী বলেন, এতদিন আমরা যাদের দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছি, যাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই করেছি আজ তারাই দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এটাকে মেনে নেওয়া যায় না। এদিকে, বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নদীয়া জেলা দক্ষিন দলীয় কার্যালয়ে হাজির হন এদিন সকালেই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তিন দফায় জেলা নেতৃত্ব, মন্ডল ও মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। এদিন তিনি ঠিক করে দেন আগামী দিনের কর্মসূচি ও লক্ষ্য। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পরে দিলীপবাবু বলেন, তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে এখনও সততা রয়েছে। অথচ তৃণমূলে থেকে তাঁরা কাজ করতে পারছিলেন না। তাই বিকল্প দল হিসেবে তাঁরা বিজেপিকেই বেছে নিয়েছেন। দলীয় কার্যালয় দখল প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, তৃণমূলের লোকেরাই বিজেপির দলীয় কার্যালয় দখল করেছে।

তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের পার্টি অফিস আছে, চার দেওয়ালে আঁচড় দিলে দেখা যাবে সেখানে লাল বা গেরুয়া রং করা ছিল। পরে সেগুলি নীল-সাদা-সবুজ রং চাপানো হয়েছে। যাঁরা তৃণমূল করতেন তাঁরা নিজেরাই বিজেপি করতে আসছেন। দলের কর্মীরা নিজেরাই পতাকা বদল করে নিচ্ছে। দিলীপবাবু ভোট পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে বলেন, যেখানে খুন সন্ত্রাস কিংবা হিংসা সেখানেই তৃণমূল, বিজেপিকে মিথ্যা দোষারোপ করছে। কৃষ্ণগঞ্জ-এর বিধায়ক খুনের পরেও তাই হয়েছিল। বিজেপি কোন হিংসাকে প্রশ্রয় দেয় না। বিজেপির নাম না করলে তৃণমূলের ঘুম হয় না, ভাত হজম হয় না।

এদিকে দলবদল প্রসঙ্গে রানাঘাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লকের মোট ১০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ছটি পঞ্চায়েত তৃণমূল নিজেদের দখলে এনেছিল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয় লাভ করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েতে দুর্নীতি থাকলে এই ভালো ফল হতো না। তাই বর্তমানে দলবদলকারীরা তৃণমূলের নামে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ আনছে। যারা বিজেপিতে গিয়েছে তারা এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছিল।

তিনি আরও জানান, সেই কারণেই মানুষ তাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছে। ওনারা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়ার পর জেলা নেতারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন। কারণ, যারা দল বদল করেছে, তারা এত দিন দলে থেকে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এই একই বিষয়ে রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক রমা বিশ্বাস বলেন, এতদিন বলা হতো সিপিএম-এর কোন অস্তিত্ব নেই। তাই হঠাৎ করে সিপিএমের লোক বিজেপিতে যোগ দিয়েছে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের কোনো দলীয় কর্মী বা সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেয়নি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!