হেভিওয়েট মন্ত্রীর খাসতালুকের পঞ্চায়েতেও এবার ফুটল পদ্ম, শোরগোল রাজ্য-রাজনীতিতে মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য July 14, 2019 লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপির নেতারা স্লোগান তুলেছিলেন – উনিশে হাফ আর একুশে সাফ! অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূলের আসন ২১ টি নামিয়ে আনা হবে আর তারপরেই বিধানসভা নির্বাচনে নবান্নের দখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে যাবে গেরুয়া শিবিরের কাছে। তৃণমূল সমর্থকরা সেই স্লোগান শুনে হেসেছিলেন, কেননা তাঁদের চোখে তখন স্বপ্ন ৪২ এ ৪২ করে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন তাঁদের প্রিয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, গত ২৩ শে মে লোকসভার ফলাফল বেরোলেই দেখা গেছে, তৃণমূলের সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে! উল্টে বিজেপি ১৮ টি আসন দখল করে, মাত্র ৪ আসন বেশি পাওয়া তৃণমূলের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। আর রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর বিজেপির এই উত্থানে কিছুটা হলেও অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলের। এমনকি ফলাফলের পর তৃণমূলের সেই অস্বস্তিকে বাড়িয়ে দিয়ে দিকে দিকে বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পৌরসভা এবং বিভিন্ন বিধানসভার বিধায়কদেরও নিজেদের ছাতার তলায় আনতে শুরু করেছে বিজেপি। কিন্তু সম্প্রতি কাঁচরাপাড়া এবং হালিশহর পৌরসভায় যে সমস্ত তৃণমূলের কাউন্সিলর বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা ফের তৃণমূলে ফিরে আসলেন। যাতে কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু এবার ফের তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে রাজ্যের শাসকদলের হেভিওয়েট মন্ত্রীর এলাকা মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে রঘুনাথগঞ্জ১ নম্বর ব্লকের জামুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করল গেরুয়া শিবির। জানা যায়, এই জামুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত রাজ্যের শ্রমদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে এই রঘুনাথগঞ্জ ১ নম্বর ব্লক থেকে ১৬ হাজারেরও বেশি লিড পেয়ে তৃণমূলের খলিলুর রহমান জয়লাভ করলেও কেন এইভাবে এখানকার পঞ্চায়েত দখল করল বিজেপি! তা নিয়েই এখন উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। জানা যায়, এই পঞ্চায়েতের মোট ১৬ জন সদস্যের মধ্যে প্রধান, উপপ্রধান সহ নয়জন সদস্য তৃণমূল ছেড়ে শনিবার বহরমপুর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে এসে বিজেপিতে যোগদান করেন। আর সেখানেই তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মুর্শিদাবাদ জেলা বিজেপির সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ ও সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির। কিন্তু যেখানে সাংসদ তৃণমূলের, সেখানে এই পঞ্চায়েতে কেন তৃণমূলের সদস্যরা বিজেপিতে যোগদান করলেন! বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছুদিন আগেই রঘুনাথগঞ্জ ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি পদে পরিবর্তন আনে তৃণমূল। আর দলের এই সিদ্ধান্ত ঠিকমত মেনে নিতে পারেননি তৃণমূলের এই সদস্যরা। আর তাই তারা এদিন গেরুয়া শিবিরের পতাকা নিজেদের হাতে তুলে নিলেন। কিন্তু, তা সত্ত্বেও রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীর খাসতালুক, বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চল, যা তৃণমূলের গড় বলে মনে করা হচ্ছিল, সেখানে তৃণমূলের এই ভাঙন অস্বস্তি বাড়াবেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিন তৃণমূলের সদস্যদের নিজেদের দলে যোগদান করিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা বিজেপির সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, “এই পঞ্চায়েত দিয়ে আমাদের বিজয়রথ শুরু হল। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই জেলার আরও বহু গ্রাম পঞ্চায়েত আমাদের দখলে আসবে।” তবে যখন রাজ্যের সমস্ত জায়গায় বিজেপিতে যাওয়া কাউন্সিলররা তৃণমূলে ফিরতে শুরু করেছেন, ঠিক তখনই মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা বিজেপিতে যাওয়ায় এখন প্রবল অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। অন্যদিকে, একসময় কংগ্রেস ও আরএসপির গড় বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদে এইভাবেই গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করেই ধীরে ধীরে গোটা জেলা জুড়ে তৃণমূলের পতাকা ছেয়ে গিয়েছিল। স্থানীয়দের বক্তব্য – ইতিহাসের প্রত্যাবর্তন ঘটে বলে শুনেছি, হয় কিনা চাক্ষুষ করতে আগ্রহী হয়ে রইলাম। আপনার মতামত জানান -