এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ‘বিজেপি হিন্দুদের ভোট নেবে, আর ও মুসলিমদের ভোট নেবে। আর আমি কি কাচকলা খাব?’ দাবি মমতার

‘বিজেপি হিন্দুদের ভোট নেবে, আর ও মুসলিমদের ভোট নেবে। আর আমি কি কাচকলা খাব?’ দাবি মমতার


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের আগে এখন রীতিমত অংক কষতে শুরু করেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন জায়গায় জল্পনা তৈরি হয়েছে, হায়দ্রাবাদের রাজনৈতিক দল এআইএমআইএম এবার বাংলায় প্রার্থী দেবে। আর যদি তারা প্রার্থী দেয়, তাহলে বেশ কিছু আসনে তৃণমূল কংগ্রেসকে চরম সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে যদি এই রাজনৈতিক দল প্রার্থী দেয়, তাহলে ভোট কাটাকুটিতে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এই সংখ্যালঘু ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের বাংলায় আগমন নিয়ে চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে ঘাসফুল শিবিরের ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হায়দ্রাবাদের এই রাজনৈতিক দলটি বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চাইছে। আর এই পরিস্থিতিতে এবার একদিকে বিজেপি এবং আর একদিকে সেই রাজনৈতিক দলের নাম না করে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এদিন জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের কর্মীসভায় উপস্থিত হন তৃণমূল নেত্রী। আর সেখানে এই ব্যাপারে মন্তব্য করতে দেখা যায় তাকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ করার জন্য একটা হায়দ্রাবাদের পার্টি ডেকে এনেছে। সেই পাটিটা এখানে কয়েকটাকে জোগাড় করেছে। বাংলার ভালো সংখ্যালঘু ভাই-বোনরা ওদের সঙ্গে নেই। বিজেপি ওদের টাকা দেয়। আর বিজেপির টাকায় বিহারে তো দেখেছেন, ওরা কি করেছে। হিন্দুদের এলাকায় গিয়ে খুব গালাগালি দেবে হিন্দুদের। তাহলে কি হবে, হিন্দুদের ভোট বিজেপি পাবে। আর মুসলমানদের এলাকায় গিয়ে এত ভাল ভাল কথা বলবে, যাতে মুসলমানদের ভোট পায়। অর্থাৎ বিজেপি হিন্দুদের ভোট নেবে আর ওরা মুসলিমদের ভোট নেবে। আর আমি কি কাঁচাকলা খাব!”

স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে এখন নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। একাংশ বলছেন, তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই রাজনৈতিক দলকে এতদিন গুরুত্ব দেওয়া না হলেও, তারা যদি বাংলায় প্রার্থী দেয়, তাহলে যে ব্যাপক সমস্যা হতে পারে, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে গেল। তৃণমূল নেত্রী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কার্যত স্পষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, এই রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিলে সংখ্যালঘু ভোটের যে শক্ত সমর্থন রয়েছে তৃণমূলের দিকে, তা অনেকটাই বিচ্যুত হয়ে যেতে পারে।

তবে এদিন এই প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতা বলেন, “বিহার ভোটের ফলাফল বিচার করলে দেখা যাবে, মিম নিয়ে যতটা বেলুন ফোলানো হয়েছে, ব্যাপারটি কিন্তু ততটা নয়। তারা ভোট কেটে বিজেপিকে কোথাও জেতাতে বা হারাতে পারেনি। কিন্তু সব রাজ্যের প্রেক্ষাপট এক নয়।”এদিকে এই ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “মনে রাখতে হবে, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় সংখ্যালঘুরা কিন্তু সেখানকার শাসকদলের মুসলিম নেতাদের হাতেই অত্যাচারিত।” এদিকে এই ব্যাপারে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে দেখা গেছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে।

তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে তৃণমূল উদ্বেগে রয়েছে। আর সেই কারণেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমার মনে হয়েছে সবটাই সাজানো এবং পূর্ব পরিকল্পিত। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ত সংখ্যালঘুদের দেখাতে চেয়েছেন, বিজেপির ওপর হামলা করতে তারাই পারেন। আর কেউ নয়। এর টার্গেট অডিয়েন্স কারা সেটাও বোঝা যাচ্ছে।” তবে যে রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা যে কথাই বলুন না কেন, এই গোটা ঘটনা নিয়ে এবং মিমের বাংলায় আগমন নিয়ে তৃণমূল নেত্রী যে ব্যাপকভাবে চিন্তিত, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অনেকে বলছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে চারটি আসন বেশি পাওয়ার পেছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি সংখ্যালঘুদের সমর্থন প্রধান কারণ। আর তারপরেই লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে একটি সম্প্রদায় সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিতর্কিত বক্তব্য পরিবেশন করতে দেখা গেছে। যেখানে তিনি বলেছেন, “যে গরু দুধ দেয় তার লাথি খেতে তিনি প্রস্তুত।”

স্বাভাবিকভাবেই তার এই মন্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি হয়। বর্তমানে সংখ্যালুঘুদের ভোট নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে ব্যাপক অংক কষাকষি শুরু হয়েছে। কেননা হায়দ্রাবাদের এই রাজনৈতিক দল যদি প্রার্থী দেয়, সেক্ষেত্রে অনেক আসনে তারা জিততে না পারলেও, অনেকটাই ভোট কাটবে। আর তারা যদি ভোট কেটে নেয়, তাহলে তৃণমূলের দখলে থাকা সংখ্যালঘু ভোট বিভক্ত হয়ে যেতে পারে।

যার ফলে সেই আসনে শেষ হাসি হাসতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এখানেই একদিকে বিজেপি এবং একদিকে সেই হায়দ্রাবাদের রাজনৈতিক দলটিকে খোঁচা দিয়ে তারা কি কাচকলা খাবেন! এমনটাই মন্তব্য করতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যা নিঃসন্দেহে শোরগোল সৃষ্টি করেছে গোটা বাংলা জুড়ে। সবমিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!