প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2014 সালের লোকসভা নির্বাচন হোক, কিংবা 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন, প্রতিবারই নির্বাচনের আগে বিজেপির পক্ষ থেকে স্লোগান তোলা হয়েছিল, “আবকি বার মোদি সরকার”। বর্তমান পরিস্থিতিতে 2024 পাখির চোখ করে কেন্দ্রে বিজেপি বিজেপি বিরোধী মহাজোট গঠনের চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। আর দিল্লিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পা রাখার সাথে সাথেই তাকে প্রধানমন্ত্রী মুখ করে এগিয়ে যেতে শুরু করল তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের নেতা কর্মীরা।

ইতিমধ্যেই বিজেপি ঠিক যে কায়দায় 2014 এবং 2019 সালের আগে স্লোগান তুলে কেন্দ্রের ক্ষমতার মসনদে বসার রাস্তা পাকা করেছিল, সেই একই স্লোগান তুলতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম করে যেখানে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের নেতাকর্মীরা। “আবকি বার দিদি সরকার” বলে প্রচার করতে শুরু করেছে। যাকে কেন্দ্র করে নতুন জল্পনা বাসা বাঁধতে শুরু করেছে জাতীয় রাজনীতিতে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপিকে আটকে দিয়ে তৃতীয়বার বাংলার ক্ষমতা দখল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তির জায়গা করে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে অন্যান্য বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তৃণমূল নেত্রী প্রধান শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তৃতীয়বারের জন্য যে পশ্চিমবঙ্গে এত বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করতে পারবে, তা অনেকেই কল্পনা করতে পারেননি। নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহরা বাংলার ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত ছিলেন। কিন্তু তাদের সেই জনপ্রিয়তাকে রুখে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বাংলার মানুষ তৃতীয়বারের জন্য ভরসা রেখেছেন।

আর বাংলায় ক্ষমতা দখল করার পরেই এখন তৃণমূল নেত্রী নজর দিয়েছেন সর্বভারতীয় রাজনীতির দিকে। দিল্লিতে পৌঁছে বিরোধী মহাজোট তৈরীর জন্য তিনি প্রস্তুতি নেবেন বলে খবর। আর এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে “আবকি বার মোদী সরকার” বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে আগামী দিনে বিজেপিকে সরাতে বিজেপির একসময়কার শ্লোগান ব্যবহার করে মোদীর জায়গায় “দিদি” বসিয়ে তৃণমূলের গুরুত্ব বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অনেকে বলতে শুরু করেছেন, বিজেপি বিরোধী মহাজোট তৈরি হলে আগামী দিনে অনেক রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারে। সেদিক থেকে অনেকেই প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার থাকতে পারেন, বা নেতৃত্বের জায়গায় পৌঁছে যেতে পারেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিতেই তাকে শিখন্ডী করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আগেভাগেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে দাঁড় করানোর চেষ্টা গ্রহণ করা হল।

যাতে পরবর্তীতে সেই বিরোধী মহাজোটে প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে অন্য কোনো রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা দাবিদার হতে না পারেন, তার জন্যই তৃণমূলের পক্ষ থেকে “আব কি বার দিদি সরকার” বলে বিরোধী জোটের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাধান্য যাতে বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা করার কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এক্ষেত্রে একদিকে যেমন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার চেষ্টা করে বিজেপিকে চাপে ফেলা হল, ঠিক তেমনই নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আরও বৃদ্ধি করতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাস্টারস্ট্রোক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।