প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর থেকেই রাজ্যজুড়ে গেরুয়া শিবির সরব হয় রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে। এমনকি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে তুলোধোনা করে। হাইকোর্টের তরফ থেকেও ভর্ৎসনা করা হয় রাজ্য সরকারকে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে ক্রমাগত সরব হতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। কিন্তু এতকিছুর পরেও পরিস্থিতি যে মোটেই বদলায়নি তা আবারও বোঝা গেল বাগনানের ঘটনায়। কার্যত স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করলেন একদল তৃণমূল কর্মী। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার স্বামী সক্রিয় বিজেপি কর্মী।

ইতিমধ্যেই অবশ্য বাগনান থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের। ঘটনাটি ঘটেছে আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের বাগনান থানার বাইনান এলাকায়। সূত্রের খবর, নির্যাতিত মহিলা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। কিছুদিন আগেই তাঁর স্ট্রোক হয়ে যায় এবং তিনি কথা বলতে পারতেন না। তাঁর স্বামী বিশেষ কাজে শনিবার রাতে কলকাতায় গিয়েছিলেন। সে রাতে তিনি বাড়ি ফেরেননি। তারপর মহিলার বড় ছেলেও বাড়িতে ছিল না সেইসময়। মনে করা হচ্ছে, দুষ্কৃতীরা সব খবর আগে থেকেই রেখেছিল। রাতে ওই মহিলার ডাক নাম ধরে অভিযুক্তরা ডাকাডাকি শুরু করেন। মহিলা ভাবেন, তাঁর স্বামী ফিরে এসেছে। তাই তিনি দরজা খুলে দেন। আর তারপরেই ঝাঁপিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা।

নির্যাতিতা মহিলাকে মোটরবাইক চাপা অবস্থায় সকালে আবিষ্কার করেন মহিলার ছোট ছেলে। তারপর সে তাঁর বাবাকে ফোন করে সব কথা জানায়। এরপর মহিলাকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যদিকে কথা বলতে না পারলেও আকার-ইঙ্গিতে নির্যাতিতা মহিলা অভিযোগে যা বলেছেন, তারই ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত সাহিদ মল্লিক এবং জয়নাল মল্লিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই দুই অভিযুক্তকে ছ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সোমবার উলুবেরিয়া আদালতের পক্ষ থেকে।

অন্যদিকে মহিলার স্বামীর অভিযোগ, এবারের নির্বাচনে উক্ত বুথ থেকে বিজেপি লিড পাওয়ার জন্য তৃণমূল আক্রোশ প্রকাশ করতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীকে নির্যাতন করেছে। কার্যত এই ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবার অত্যন্ত আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন, এলাকায় বিজেপি হেরে যাওয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুৎসা করা শুরু হয়েছে। তবে গণধর্ষণের ঘটনায় যদি দলের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে তাঁকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবেনা বলে জানিয়েছেন তিনি। কার্যত এই ঘটনায় তীব্র অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে তৃণমূল শিবিরেও। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই তৃণমূল এবং বিজেপির রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে।