বিজেপিকে কড়া আক্রমণ, তবুও বাম বিরোধী মমতার ভূমিকা নিয়ে ধন্দ! বাড়ছে গুঞ্জন! তৃণমূল বামফ্রন্ট বিজেপি রাজনীতি রাজ্য July 22, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 1993 সালের একুশে জুলাই তৎকালীন বাম সরকারের পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন 13 জন যুব কংগ্রেস কর্মী। পরবর্তীতে যতবার একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচি হয়েছে, ততবার সেখান থেকে বামেদের কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু 2021 এর একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল মঞ্চ থেকে একবারের জন্যেও সিপিএমকে আক্রমণ করতে দেখা গেল না তাকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম বাম বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামেদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে এই ঘটনাকে ইস্যু করে প্রতিবার এই একুশে জুলাইকে তাদের নিজেদের বাৎসরিক কর্মসূচি বলে প্রতিষ্ঠিত করতেন। কিন্তু যে বাম বিরোধিতার কথা তুলে ধরে প্রতিবার একুশে জুলাইয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে হুংকার ছাড়তে দেখা যায় বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, তার হঠাৎ এত পরিবর্তন কেন? অনেকে বলছেন, রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি সদা পরিবর্তনশীল। বর্তমান পরিস্থিতিতে সিপিএম কার্যত সাইনবোর্ডে পরিণত হয়ে গিয়েছে। একসময় রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্টের এখন বিধানসভায় কোনো প্রতিনিধি নেই। তাই এই পরিস্থিতিতে সেই সিপিএমকে একুশে জুলাইয়ের শহীদ দিবস থেকে আক্রমণ না করে প্রধান আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিজেপিকেই বেছে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপিকে আক্রমণ করছেন, তখন তার অতীতের বক্তব্য কিছুটা হলেও মিস করতে দেখা যাচ্ছে দলের অনেক নেতা কর্মীদের। এক্ষেত্রে অনেকেই বলছেন, তৃণমূলের প্রধান শক্তি হচ্ছে বাম বিরোধিতা। এই বাম বিরোধিতার মধ্যে দিয়েই রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে ঘাসফুল শিবির। সেদিক থেকে বিজেপিকে বর্তমান শত্রু হিসেবে কটাক্ষ করা হলেও, সিপিএমকে আক্রমণ না করার কারণে সেই উদ্দীপনা অনেকেই পাচ্ছিলেন না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বুধবার করোনা পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়ালি তৃণমূলের শহীদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য থেকে শুরু করে জাতীয় ক্ষেত্রে বিজেপির নানা কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে একহাত নিতে দেখা যায় তাকে। তবে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবার একুশে জুলাই থেকে বামেদের বিরুদ্ধে কোনও না কোনো মন্তব্য করেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় এবারের একুশে জুলাইয়ে কোনোরূপ সিপিএম বিরোধিতার কথা না থাকায়, রাজনৈতিক মহল কিছুটা হলেও আশ্চর্য হতে শুরু করেছেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে অনেকে আবার বলছেন, এর জন্য আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন, এখন সিপিএমকে আক্রমণ করলে বৃথা সময় নষ্ট হবে। রাজ্যে তাদের সংগঠন বলে কিছু নেই। তাই এই পরিস্থিতিতে জাতীয় স্তরে যাতে সিপিএমের মতো বিজেপি বিরোধী দলকে পাশে পাওয়া যায়, তার জন্যই সিপিএমের বিরুদ্ধে একটি মন্তব্য না করে বারবার জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে তাকে। অর্থাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্ষেত্রে দুটি কৌশল প্রয়োগ করার চেষ্টা করলেন। একদিকে তিনি যেমন সিপিএমের বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য না করে বুঝিয়ে দিলেন যে, সিপিএম রাজ্যে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছে, ঠিক তেমনই সিপিএমের বিরোধিতা না করে জাতীয় স্তরে সিপিএমের সঙ্গে জোটে শামিল হয়ে যাতে বিজেপিকে সরানো যায়, সেই বার্তা বাম নেতৃত্বকে দেওয়ার চেষ্টা করলেন বলেই মনে করছেন একাংশ। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৌশলগতভাবে যে সিপিএমের বিরোধিতা করা থেকে সরে এসেছেন এবং বামেদের বিরুদ্ধে একটিও মন্তব্য করেননি, সেই ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। কেননা যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হয়েছে বাম বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে, তিনি যদি উপলব্ধি করতেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সিপিএমের বিরোধিতা করা উচিত, তাহলে তিনি অবশ্যই সেই বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটতেন। কিন্তু তা না করে সম্পূর্ণরূপে বিজেপির বিরোধিতা করে নিজের নয়া রাজনৈতিক লাইন বেছে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাংশ বলছেন, রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষ এক থাকে না। সেদিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে এখন বিজেপিকে বেছে নিয়েছেন। রাজ্য বিধানসভায় কার্যত শূন্য হয়ে যাওয়া বামেদের যদি তিনি একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে আক্রমণ করতেন, তাহলে আদতে লাভের লাভ কিছুই হত না। তাই লাভ, ক্ষতির অংক কষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সুদুরপ্রসারী রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ দেখতে গিয়েই প্রধান আক্রমণের মুখে ফেলেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিকে। পাশাপাশি আগামী দিনে জাতীয় স্তরে বিজেপিকে চাপে ফেলতে বিজেপি বিরোধী সিপিএমকেও যাতে পাশে পাওয়া যায়, তার জন্য সুকৌশলে একটি বাক্যও সিপিএমের জন্য প্রয়োগ না করে কার্যত তাদের মন রাখার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল নেত্রী বলেই মনে করছেন একাংশ। আপনার মতামত জানান -