বিজেপিকে সরালেও, ধনকারকে সরানোর লড়াইয়ে জিততে পারবেন মমতা? ব্যর্থ হওয়ার ইঙ্গিতে জল্পনা! কলকাতা তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য May 19, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের সময়ে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের বর্তমান রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। আইন-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে শিক্ষা, বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করে প্রায় প্রতিদিন রাজ্য সরকারের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধতে দেখা যেত রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের। তবে তৃতীয় বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই দ্বন্দ্ব যেন আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআই পদক্ষেপ গ্রহণ করে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং শাসক দলের এক বিধায়ক সহ এক প্রাক্তন নেতা এবং রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের পদক্ষেপ ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে ঘাসফুল শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাজ্যপাল বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে। বলা ভালো, এখন রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টিকে আক্রমণ করা অপেক্ষা সবথেকে বেশি তৃণমূলের পক্ষ থেকে আক্রমণ করা হচ্ছে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জাগদীপ ধনকারকে। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল এখন চেষ্টা করছে রাজ্যপালের পদ থেকে জাগদীপ ধনকারকে অপসারণ করার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে যে, এখন বিধানসভার অলিন্দেও রাজ্যপালকে বয়কট করার কথা চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করেছে শাসকদল। কিন্তু সত্যিই কি সম্ভব রাজ্যপাল হিসেবে জাগদীপ ধনকারকে অপসারণ করার? একজন সাংবিধানিক প্রধানকে অপসারণ করতে গেলে যে সমস্ত পদ্ধতি পালন করতে হয়, তা কি করা সম্ভব তৃণমূল সরকারের পক্ষে? একাংশ বলছেন, পদ্ধতি তো দূরের কথা। সাংবিধানিক প্রধানকে এভাবে অপসারণ করা যায় না। এটা রীতিবিরুদ্ধ। তাই কোনো মতেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই কাজ হলে তা সফলতা পাবে না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই রাজ্যপাল পদ মূলত বিভিন্ন রাজ্য পরিচালনা এবং তদারকি করার জন্যই তৈরি হয়েছে। সরকার যাতে নিজের ইচ্ছেমতো সমস্ত কিছু করতে না পারে, তার জন্য সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাল পদের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু মাঝেমধ্যে এই রাজ্যপাল পদ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা অতীতে কবে হয়েছিল, তা মনে করতে পারছেন না কেউই। একাংশ বলছেন, বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল কে হবেন, তা সম্পূর্ণরূপে ঠিক করে কেন্দ্রীয় সরকার। মূলত নিয়োগ হওয়ার পাঁচ বছর পর্যন্ত সেই রাজ্যপাল পদের কার্যভার রয়েছে। এক্ষেত্রে জাগদীপ ধনকার আরও বেশ কিছুদিন রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে থাকবেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখন রাজ্যপাল হিসেবে জাগদীপ ধনকারকে অপসারণের জন্য কেন্দ্র বা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা হলেও, তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সংবিধানে যে বেশ কিছু বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যায় না, তার স্পষ্ট উল্লেখ করা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, লোকসভা, রাজ্যসভা এবং রাজ্যপাল। অর্থাৎ 2024 সাল পর্যন্ত রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে মেয়াদ রয়েছে জগদীপ ধনকরের। তবে তার পরবর্তী সময়কালে যদি কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে যে, জাগদীপ ধনকারকে সরিয়ে নেওয়া হবে, তাহলে তারা তা করতেই পারে। কিন্তু যদি কেন্দ্রীয় সরকার আবারও দ্বিতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে জাগদীপ ধনকারকে রেখে দেয়, তাহলে তা যে তৃণমূল সরকারের কাছে, আরও অস্বস্তির কারণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে এই লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত। কেননা ইতিমধ্যেই তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকে রাজ্যপালের পদের জাগদীপ ধনকারকে অপসারণের জন্য একটি চিঠি লিখেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ দুজনেই বিজেপির নেতা। সেদিক থেকে তারা নিজেদের পছন্দমত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল নিয়োগ করেছেন, এটা বলাই যায়। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই রাজ্যপাল যখন তৃণমূলের অভিযোগ অনুযায়ী শাসকদলের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিচ্ছে, তখন তৃণমূলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেই রাজ্যপাল হিসেবে জাগদীপ ধনকারকে এখান থেকে অত সহজে অপসারণ করে নেবেন কেন্দ্রীয় সরকার বা রাষ্ট্রপতি, তা মানতে নারাজ কেউই। তাই এই পরিস্থিতিতে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে পরাজিত করে তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসে প্রথম লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যপালের অস্বস্তি যে তার গলার মধ্যে কাঁটা হয়ে ফুটেছে, তা প্রতিমুহূর্তে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর দলের হেভিওয়েট নেতা এবং মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই রাজ্যপালকে সরানোর জন্য এখন কার্যত সবরকম চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে রাজ্যপালকে অপসারণ করার জন্য তৃণমূলের এই লড়াইয়ের পাল্লা যে পরাজিত হওয়ার দিকেই বেশি ভারী, সেই বিষয়ে নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল। এখন তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করে রাজ্যপালকে অপসারণের জন্য তৃণমূল কোনো কিছু করতে পারে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -