এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > হঠাৎ ইস্তফা বঙ্গ-বিজেপির হেভিওয়েট নেত্রীর! তীব্র জল্পনা শুরু রাজনৈতিক মহলে!

হঠাৎ ইস্তফা বঙ্গ-বিজেপির হেভিওয়েট নেত্রীর! তীব্র জল্পনা শুরু রাজনৈতিক মহলে!

অনেকদিন ধরেই জটিলতা চলছে। অবশেষে নিজের চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ই-মেইল মারফত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বৈশাখীদেবী। বস্তুত, মধ্য কলকাতার যে মহাবিদ্যালয়ে বৈশাখীদেবী অধ্যাপনার কাজ করতেন, সেখানে পরিচালন সমিতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা হিসেবে তিনি ছিলেন পরিচালক সমিতির সম্পাদক।

কিন্তু গত 2018 সালে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই ভাবে আর সেখানে কোনো পরিচালন সমিতি গঠন হয়নি। জানা যায়, সম্প্রতি এই ব্যাপার নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরেও অচলাবস্থা কাটেনি। এদিকে একসময় তৃণমূলের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী ছিলেন তিনি।

তাই শোভনবাবুর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সাথে সাথে তিনিও বিজেপিতে যোগ দেন। তারপরে কলেজে তাকে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সম্প্রতি সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দাবি করতে থাকেন, এবার এই দুই জুটি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করবেন। কিন্তু তেমন কোনো সম্ভাবনা এখনও সত্যি হয়নি।

তবে নিজের কলেজের সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে বারবার পার্থ চ্যাটার্জির অফিসে আসতে দেখা যায় সেই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অবশেষে এদিন নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী। এদিন এই প্রসঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় হয়ত চেষ্টা করেছিলেন কলেজের সমস্যা মেটানোর। কিন্তু তারপরেও যখন মিটছে না, তখন আমার মনে হয়েছে যে আমি না সরে যাওয়া পর্যন্ত হয়ত সমস্যা মিটবে না। তাই ইস্তফা দিয়ে দিলাম।”

তিনি আরও জানান, “অচলাবস্থার কারণে বেতন আটকে ছিল, কলেজের তহবিল আটকে ছিল। কলেজটা চালু রাখার জন্য বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে গিয়ে খরচ করতে হচ্ছিল।” কিন্তু তিনি হঠাৎ ইস্তফা দিয়ে দিলেন, এর পেছনে কি কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে? বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, থাকলেও সেই কারণ থাকতে পারে। কেননা রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত হয়েছে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। যেখানে তিনটিতেই হেরে গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এরপরই কার্যত দলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রাসঙ্গিক করার চেষ্টা করছে বিজেপি নেতৃত্ব। পৌরসভা নির্বাচন করে শোভনবাবুর হাত ধরে এই কলকাতা পৌরসভা দখল করতে চাইছে তারা। আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতৃত্ব শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বৈঠকের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তাই সেদিক থেকে কলেজের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ফের কি বিজেপি ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়!

এখন তা নিয়েও চলছে জোর জল্পনা। যদিও বা এই ব্যাপারে রাজনৈতিক কোনো কারন মানতে নারাজ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কলেজ প্রশাসনের শীর্ষ থেকেই কাজ করতে পারছিলাম না। এমন হেনস্থা মুখে ফেলা হচ্ছিল যে, দিনের পর দিন ছুটি নিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছিলাম। তাহলে শুধুমাত্র একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে ওই কলেজে ঢুকতে গেলে আমাকে কি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে, ভাবতে পারছেন!”

তিনি জানান, “কলেজে পড়ানোটা আমার স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্নের জীবনটা থেমে যাচ্ছে বলে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমার আর কিছু করার ছিল না।” সব মিলিয়ে অবশেষে জল্পনাকে বৃদ্ধি করে চাকরি জীবন থেকে ইস্তফা দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে কি এবার সক্রিয় রাজনীতির ময়দানেই তাঁকে বেশি করে দেখা যাবে? দেখা যাবে রাজ্যজুড়ে গেরুয়া ঝড় তুলতে? রাজনৈতিক মহলের কাছে এটাই এখন অন্যতম বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!