সঙ্কটকালেও এলাকায় দেখা নেই হেভিওয়েট বিজেপি সাংসদের! দলের মধ্যেই উঠে গেল বড়সড় প্রশ্ন উত্তরবঙ্গ তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য August 4, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার পটভূমিতেও রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ির খেলা অব্যাহত রেখেছে। একের বিরুদ্ধে অপরের অহরহ চলছে বাদ – প্রতিবাদ, অভিযোগ, সমালোচনার গোলা বর্ষণ। এই পরিস্থিতিতে কোচবিহার জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জেলার সাংসদ নিশীথ প্রামানিকের বিরুদ্ধে উঠে এলো অনুপস্থিতির অভিযোগ।অভিযোগ করা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতে কোচবিহারে সেভাবে দেখতে পাওয়া যায়নি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে। দেশ ব্যাপী কড়া লকডাউন পর্বে তিনি যেমন প্রায় অদৃশ্য ছিলেন, ঠিক তেমনি আছেন তিনি চলতি আনলক পর্বেও। সংবাদসূত্রে জানা গেছে, নিশীথ প্রামাণিক বেশ কিছুদিন ধরেই দিল্লিতে বসবাস করছেন। অযোধ্যায় যাবার তাঁর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে করেছিলেন। এরপর অমিত শাহের করোনা রিপোর্ট পসিটিভ আসায়, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি হোম আইসোলেশন আছেন। তাই এরমধ্যে তিনি নিজের লোকসভা অঞ্চলে আসতে পারছেন না। কিন্তু শাসকদল সহ সমস্তদল যখন নিজের জনসমর্থন মজবুত করতে করোনা অবহে বারবার ছুটে যাচ্ছেন মানুষের কাছে, তখন নিশীথ প্রামানিকের এই অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়েছে যে, এলাকার মানুষ সমস্ত কিছু দেখছে, তাই মানুষই এ বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করবে। যদিও এ প্রসঙ্গে নিশীথ প্রামানিক জানিয়েছেন যে, মানুষের কাজ করতে গেলে সবসময় সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন হয় না। নিজের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে গতকাল সোমবার টেলিফোনের মাধ্যমে নিশীথ প্রামানিক দিল্লি থেকে জানিয়েছেন, “আমি ১০-১২ দিন আগে দিল্লি এসেছি। গত শুক্রবার অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওঁর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পরে তিনি কোভিড পজিটিভ হওয়ায় আমি নিজেকে আইসোলেট করে রেখেছি। এদিন টেস্ট করিয়েছি। সাতদিন পরে ফের টেস্ট করাব। এসব তুঘলকি লকডাউন না করে টানা লকডাউন দরকার। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আমাকে কি লকডাউন ভেঙে ঘুরে বেড়াতে হবে? কী কারণে দেখা দিতে হবে? আমরাও মানুষের পাশে আছি। কাজ করছি। রেশন ব্যবস্থা ও অন্যভাবে লকডাউন পর্বে মানুষরে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। এ সময় নিজেকে সুরক্ষিত রেখে, অন্যরাও যাতে সুরক্ষিত থাকে সেই বিষয়টি ভাবার সময় এসেছে। শারীরিকভাবে উপস্থিত না হয়েও মানুষের কাজ করা যায়।” সাংসদ নিশীথ প্রামানিকের দীর্ঘ অনুপস্থিতি সম্পর্কে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেছেন যে, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিজেপির কোনও জনপ্রতিনিধিকেই সেভাবে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপির সাংসদরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করছেন কিনা, মানুষই তার বিচার করবেন। নিশীথবাবু দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত আছেন । জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর তাঁকে কোনদিনও তিনি মানুষের পাশে সেভাবে দাঁড়াননি। এটা একটা চরম দুর্ভাগ্য জনগণের । মানুষ সুশাসনের আসায় যাঁকে ভোট দিয়ে দিল্লি পাঠালো, মানুষের বিপদের সময় তিনি মানুষের পাশে কোথায়? বরং ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি ভাইরাল করতেই তিনি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। মানুষের হিতের জন্য কোন কর্মসূচি গ্রহণ করতে তাকে দেখা যায়নি। এভাবে সাংসদ নিশীথ প্রামানিক কে নিয়ে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হতে জেলা গিয়েছে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালোতি রাভা রায়কে। এ প্রসঙ্গে মালোতি দেবী জানিয়েছেন যে, লকডাউনের সময়ে নিশীথ প্রামানিক যেদিন চাল বিলি করতে বেরিয়েছিলেন, সেদিন তাকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। লকডাউনের সময় তিনি নিজের বাড়িতেই ছিলেন। তবে, সাংসদকে সর্বদাই কিছু বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয়, যা নিশীথ বাবু মেনেওছেন। লকডাউন শিথিল হবার পর থেকে তাঁকে একাধিক কর্মসূচিতে যোগদান করতে দেখা গিয়েছিল। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত থাকেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন। আপনার মতামত জানান -