এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মুখ্যমন্ত্রী মাত্র এক ঘণ্টার জন্য দায়িত্ব ছাড়লেই বাংলায় করোনা পরিস্থিতি বদলে দেবে কেন্দ্র?

মুখ্যমন্ত্রী মাত্র এক ঘণ্টার জন্য দায়িত্ব ছাড়লেই বাংলায় করোনা পরিস্থিতি বদলে দেবে কেন্দ্র?


একদিকে করোনা এবং অন্যদিকে ভয়াবহ দূর্যোগ আমপান। এই দুইয়ের মোকাবিলা করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনকে। বিরোধীদের তরফে করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার একেবারেই ব্যর্থ বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, ততই রাজ্যের পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে যাচ্ছে। আর এমতাবস্থায় একদিকে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসায় সম্প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একেবারে এত শ্রমিক ফিরে আসায় পরিস্থিতি আরও হাতের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়ে দেন যে, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন প্রয়োজনে সরকার ভেঙে দিয়ে তারা দায়িত্ব নিক। কিন্তু তখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে বলেছেন যে, নির্বাচিত সরকার ভাঙব কি করে!

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, ঠিক তখনই করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একঘন্টা সরে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল ভারতীয় জনতা পার্টি। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ঘন্টার জন্য মুখ্যমন্ত্রী চেয়ার ছেড়ে দিলে কিভাবে বাংলার করোনা পরিস্থিতি সামলাতে হয়, তা কেন্দ্র দেখিয়ে দেবে বলে জানিয়ে দিলেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ায় দ্বিতীয় মোদি সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যান এই হেভিওয়েট বিজেপি নেতা। আর সেখানেই সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। সায়ন্তনবাবু বলেন, “দিদি করোনা সামলাতে কেন্দ্রকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলছেন। আমি ক্যামেরার সামনে বলছি, মুখ্যমন্ত্রী এক ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করুন। এক ঘণ্টার মধ্যে দায়িত্ব নিয়ে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি করে কেন্দ্র দেখাবে। তারপর উনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসুন।”

আর সায়ন্তনবাবুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্য এমন চ্যালেঞ্জিং মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন যে, অমিত শাহ বলেছেন, নির্বাচিত সরকার কি করে ভাঙ্গা হবে, সেখানে বাংলার বিজেপি নেতা হিসেবে সায়ন্তনবাবুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছোড়া এই চ্যালেঞ্জ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একাংশ বলছেন, তাহলে কি শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই সায়ন্তনবাবু এই ধরনের মন্তব্য করলেন! নাকি এই মন্তব্য তার ব্যক্তিগত? বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে চাপে ফেলতেই এই বিজেপি নেতা এই ধরনের মন্তব্য করেছেন। এখন এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার চ্যালেঞ্জ কতটা গ্রহণ করে, তার দিকে অবশ্যই নজর থাকবে সকলের। এদিন পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হতেও দেখা গেছে সায়ন্তন বসুকে।

তিনি বলেন, “তেলিনিপাড়ায় বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের মানুষ আছে। যাদের অনেকের মধ্যেই করোনা পজেটিভ আশঙ্কা করা হয়েছিল। তাদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে আইন-শৃংখলার অবনতি হয়। বিজেপির কার্যকর্তা যারা সামলাতে গিয়েছিলেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ কমিউনাল স্ট্র্যাটেজি নিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে যতক্ষণ না কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে, ততক্ষণ আমরা চন্দননগর পুলিশ কমিশনার বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পার্লামেন্ট খোলার পর আমরা ওদের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠাব। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে।” এদিকে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবকেও এদিন কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন সায়ন্তন বসু।

তিনি বলেন, “উত্তরপাড়ার তৃণমূলের গুন্ডা আমাকে বলেছিলেন যে, হুগলিতে ঢুকতে দেবেন না। কিন্তু আমি আজ হুগলিতে এসে প্রমাণ করে দিয়েছি যে, বিজেপিকে এভাবে আটকানো যাবে না।” এদিকে সায়ন্তন বসু তৃণমূলকে কটাক্ষ করে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেও এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও, তার পাল্টা তাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “ওনাদের কোনো কাজ নেই। মোদির ড্রাম বাজানো ছাড়া কিছুই জানেন না। আজও ট্রেন ঢুকেছে। আমরা সব সময় যে এই সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে আছি, তা মানুষ ভালোভাবে জানেন। হুগলি কেন, সারা রাজ্য জানে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের পাশে আছেন।” আর তৃণমূল-বিজেপি তরজার মাঝে এখন দেখার বিষয়, সায়ন্তন বসু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন, তা কতটা গ্রহণ করে সরকারপক্ষ। যার দিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!