এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের চিন্তা বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের ক্লাবের অন্দরমহলেও এবার থাবা বসাচ্ছে বিজেপি!

তৃণমূলের চিন্তা বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের ক্লাবের অন্দরমহলেও এবার থাবা বসাচ্ছে বিজেপি!

মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকেই বাংলার কৃষ্টি-সভ্যতা-সংস্কৃতি ‘ফিরিয়ে’ আনার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই ব্যাপারে তাঁর অন্যতম লক্ষ ছিল বাংলার ক্লাবগুলিকে নিয়ে। মাঝেমাঝেই পাড়ার ক্লাবগুলিকে বড়সড় অনুদান থেকে শুরু করে কলকাতার তিন প্রধানের জন্য কোটি টাকার অনুদান সবই হয়েছে তাঁর আমলে। তিনি ক্রীড়াক্ষেত্রে ‘উন্নয়নের’ কথা বলে ওই অনুদান দিলেও, তারমধ্যে ‘ভোটের রাজনীতিই’ দেখেছে বিরোধীরা।

তবে, ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়া, বিশেষ করে কলকাতার তিন প্রধানের সঙ্গে কোটি কোটি সমর্থকের আবেগ জড়িয়ে থাকায়, তা নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাহায্য করেছে বলে একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন বঙ্গ রাজনীতির অনেক পোড়খাওয়া বিশেষজ্ঞই। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর সেই সাধের ক্লাবেও বোধহয় তাঁর একাধিপত্যের দিন শেষ হতে চলল। কেননা, এবার কলকাতা ময়দানের ক্লাবের সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতা দেখাতে শুরু করল গেরুয়া শিবির।

ইতিমধ্যেই টলি জগতে পা রেখেছে গেরুয়া শিবির। আর এবার ক্রীড়াক্ষেত্রেও পদার্পণ করল তারা। সূত্রের খবর, কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন দুই ক্লাব মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলকে দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলানোর দাবি তুলে এবার ময়দানে নামল তারা। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই জল্পনা ছড়ায়, কলকাতার এই দুই প্রধান দলকে দেশের সর্বোচ্চ লিগ থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। আর তাই এবার এই ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই দুই প্রধান দলের কর্তারা আবেদন করেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা যখন এই ব্যাপারে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে আবেদন করতে উদ্যোগী, ঠিক তখনই শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার এক ক্লাবে মোহনবাগানের সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসু, অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত, ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার এবং সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন দাসগুপ্তর সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। জানা যায়, এই বৈঠকের মূল আয়োজক ছিলেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী কল্যান চৌবে।

এদিকে বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে কলকাতার দুই নামী ফুটবল ক্লাবের এই বৈঠকের পরই শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি এবার ক্রীড়াক্ষেত্রেও বিজেপি তাদের প্রভাব বাড়াতে শুরু করল! এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন, “বাংলা এবং ফুটবল সমর্থক। দুই ক্লাবের যুক্তি আছে। তারা যাতে শীর্ষ লিগে খেলতে পারে, তার জন্য যা করার করব। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলেছি।”

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে এহেন উদ্যোগ নেওয়া হলে তা নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “খেলার মাঠে রাজনীতির সংস্কৃতি নেই। দুই প্রধান যখন যে সাহায্য চেয়েছে, করেছি। খবর আছে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই গিয়েছিলেন।” কিন্তু এভাবে ক্লাবের ভিতরে রাজনীতি হওয়া কি ঠিক! এদিন এই প্রসঙ্গে এই বৈঠকের মূল উদ্যোক্তা বিজেপির কল্যাণ চৌবে মুখ খোলেন।

তিনি বলেন, “দুই প্রধানে বহুদিন খেলেছি। একটা আবেগ আছে। সেই ক্লাবগুলোর সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে, আর সেটা দেখেই কৈলাশজি এবং দিল্লির নেতৃত্বকে বলেছিলাম ব্যাপারটা দেখতে।” তবে বিজেপি নেতাদের এইভাবে ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক খুব একটা ভালো চোখে নিচ্ছেন না প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য। এদিন তিনি বলেন, “ক্লাবের আবেগকে সামনে রেখে কিছু কর্তা নিজেদের স্বার্থে বিজেপির দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের উচিত ছিল, বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বা ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা।”

কলকাতা ফুটবলে এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘গ্রিপ’ কতটা মজবুত তা মানসবাবুর বক্তব্যেই স্পষ্ট বলে অভিমত সংশ্লিষ্ট মহলের। তবে নানা মুনির নানা মত থাকলেও, ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান ক্লাবের কর্তারা যখন তাঁদের ক্লাবকে সর্বোচ্চ লিগে খেলানোর দাবি জানিয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হচ্ছেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা সেই দুই ক্লাবের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন, তাতে ক্রীড়াক্ষেত্রেও যে বিজেপি বঙ্গে প্রভাব বাড়াতে শুরু করল, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!