এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > দল থাক বা না থাক যেনতেন প্রকারেণ পদ ধরে রাখতে মরিয়া অনেকেই! বিস্ফোরক নেতা অস্বস্তিতে বিজেপি

দল থাক বা না থাক যেনতেন প্রকারেণ পদ ধরে রাখতে মরিয়া অনেকেই! বিস্ফোরক নেতা অস্বস্তিতে বিজেপি

বিজেপি স্বপ্ন দেখেছিল, 2021 এ তারা বাংলায় ক্ষমতা দখল করবে। কিন্তু মুখে ক্ষমতা দখলের কথা বললেও, কাজে শুধুই নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে গেরুয়া শিবির। যত দিন যাচ্ছে, ততই ভারতীয় জনতা পার্টির ভেতরকার মতানৈক্য বাইরে বেরিয়ে আসছে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে মন্ডল সভাপতি গঠনে এখন জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে।

2019 এর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে ফুটে গিয়েছে পদ্মফুল। জয়লাভ করেছেন বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী। তবে সম্প্রতি মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেই উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিজেপির দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করছে। আর এবার জেলা বিজেপির হেভিওয়েট নেতার ফেসবুক পোস্ট রীতিমতো বিতর্ক বাড়িয়ে দিল। যা নিয়ে এখন ঘুম উড়ছে বিজেপি নেতৃত্বের।

সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট করেছেন। যেখানে দলের বিরুদ্ধে পরোক্ষে তিনি তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। যা নিয়েই এখন তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় সুরজিৎবাবু লিখেছেন, “যত ভালই কার্যকর্তা হোন না কেন, পয়সা না থাকলে কেউ আপনাকে নেতা মানবে না এই বাংলায়। বর্তমান বাংলায় আমরা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দলকে শেষ করে দিচ্ছি।”

আবার অন্য কোথাও লিখেছেন, “আজকাল আমরা আর কার্যকর্তা নই, ব্যক্তিবিশেষের লোক হয়ে দাঁড়িয়েছি। টিএমসি মুক্ত বাংলা আমাদের স্বপ্ন নয়। আমাদের স্বপ্ন শুধু আমি কত বড় পদ পেলাম বা পাব।” আর জেলা বিজেপি নেতার এহেন মন্তব্যকে দল বিরোধী মন্তব্য বলেই ধরছে রাজনৈতিক মহল। তাহলে কি বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে? আর তার কারণেই উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির এই হেভিওয়েট নেতা পরোক্ষে দলের নেতৃত্বকে এহেন কথা শোনালেন! তিনি বুঝিয়ে দিলেন যে, এখন দল নয়, ব্যক্তিই বড়?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু কেন তিনি এরকম মন্তব্য করলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে সেই সুরজিৎ সেন বলেন, “দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে কয়েকটি জায়গায় আমি ছিলাম। কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি দলের কর্মকর্তারা বলছেন একে নয়, ওকে ধরুন। ওকে ধরে আমার এই লাভ হবে। ওকে সংগঠনের পথে নিয়ে আসবেন না। কারণ তার কাছে টাকা নেই। তিনি লোককে চা খাওয়াতে পারবেন না। আমরা এখন দলের থেকে পদটাকেই বড় করে দেখছি। কার্যত দল একাধিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে।”

তিনি “দলের কেউ তাদের পছন্দ করুন বা না করুন, যেনতেন প্রকারেণ পদ ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে আছেন অনেকেই। আমি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আঘাত দিতে এই পোস্ট করিনি। এর ফলে দল আমার প্রতি যে ব্যবস্থা নেবে তাও জানি। আমি থাকি বা না থাকি, কিন্তু যে প্রশ্নগুলো তুলে দিয়ে গেলাম, তা আগামীদিনেও রয়ে যাবে।” এদিকে সুরজিৎ সেনের আশঙ্কাকে সত্যি করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা গেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের গলায়।

এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি নির্মল দাম বলেন, “একজন জেলাস্তরের নেতা হয়ে তাঁর এসব লেখা ঠিক হয়নি। যার কাছ থেকে এই আচরণ দল আশা করে না। এই ধরনের আচরণ শৃঙ্খলাভঙ্গের মধ্যেই পড়ে। এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হবে। পরে প্রয়োজন হলে শোকজ করা হবে। দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। সংগঠনের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিলে তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার দরকার নেই। দলের মধ্যে আলোচনা করেই সমস্যার সমাধান করা যায়।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাহস করে উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির নেতা সুরজিৎ সেন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই কথাগুলো বলে ফেলেছেন। তবে প্রকাশ্যে তিনি এই কথাগুলো বলায় উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্ব যে চরম বিপাকে পড়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় সকলেই। এখন শিক্ষা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে সক্ষম হয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!