বিজেপি-বাম-কংগ্রেস – সবাই একযোগে জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীতেই সুষ্ঠু ভোট, রাজ্য পুলিশে দুষ্কৃতী দাপট! কলকাতা জাতীয় রাজ্য April 12, 2019 আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের প্রতিটি বুথেই যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করানো যায়, তার জন্য প্রথম থেকেই কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্যের সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তবে সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলেও বেশিরভাগ বুথেই সেই বাহিনী দিয়েই এই ভোটপর্ব সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল কমিশন। তবে গতকাল কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে যেসব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না, এবার সেই সমস্ত বুথে বিশৃংখলার অভিযোগ তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হল রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এই রাজ্যের প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচন কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র দিয়ে শুরু হলে মোটের ওপর সেখানে ভোট শান্তিপূর্ণ হলেও বেশ কিছু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকায় সেখানে শাসকদলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট করানোর অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। অন্যদিকে সকাল থেকেই কোচবিহারের বিভিন্ন বুথে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। আর সেখানেই তিনি অভিযোগ জানান যে, “কিছু কিছু বুথে যেমন ইভিএম খারাপ দেখা যাচ্ছে, ঠিক তেমনই বিএসএফ জওয়ানরা বুথের ভেতরে ঢুকে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছেন।” তবে এদিনের নির্বাচন শেষে যে সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বানিয়ে ছিল না, সেই সমস্ত বুথে পুনঃনির্বাচনের দাবি তুলে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে ধর্নায় বসতে দেখা গেছে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককে। এদিন যখন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন চলছে, ঠিক তখনই কমিশনে এসে এই নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ জানাতে দেখা গেছে কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন তিনি বলেন, “যেসব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, সেখানে নির্বিঘ্নে ভোট হচ্ছে। আর যেখানে রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ রয়েছে, সেখানে বহিরাগতরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সাধারণ ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তাই পরবর্তী দফার নির্বাচনগুলিতে সব বুথেই যেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়।” এদিকে কংগ্রেসের পাশাপাশি এদিন বেলা আড়াইটার সময় নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে আসেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও শিশির বাজোড়িয়া। নির্বাচন কমিশনকে তারা ঠিক কি বললেন? এদিন এই প্রসঙ্গে কমিশনের দপ্তর থেকে বেরিয়ে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “700 টি বুথে গোলমাল হয়েছে। দিনহাটায় 40 টি বুথে ভোটই হয়নি। তাই এই অব্যাস্থার কথা আমরা কমিশনকে জানিয়েছি।” অন্যদিকে এদিন কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী গোবিন্দ রায়ের গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা নিয়েও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানান সিপিএমের রবীন দেব এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এহেন অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন ঠিক কী বলছে? সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার কোচবিহার আলিপুরদুয়ার লোকসভা নির্বাচন সমাপ্ত হওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাব বলেন, “দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া প্রথম দফার ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। আমরা যে সমস্ত অভিযোগ পেয়েছি, সঙ্গে সঙ্গে সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেশকিছু ইভিএম ভাঙ্গা এবং ইভিএমে মক- পোল অভিযোগ ছিল। এই বিষয়টি আগামীকাল পর্যবেক্ষকের সামনে স্কুটিনি হবে। পর্যবেক্ষকরাই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” এদিকে বুথের ভেতরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ঢুকে পড়া সম্পর্কে বিএসএফের আইজিকে জানানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকেও সতর্ক করা হয়েছে। এমনকি এদিনের লোকসভা ভোটে সব মিলিয়ে তিনটি এফআইআরের ভিত্তিতে মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের এডিজি আইন-শৃঙ্খলা সিদ্ধিনাথ গুপ্তা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যের সমস্ত বিরোধী দলের একটাই দাবি প্রতিবুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা। আর সেই মতো রাজ্যের প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভোট সমাপ্ত হওয়ার পরেও যে বুথগুলোতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না সেখানে শাসকদলের প্ররোচনায় ছাপ্পা ভোট হয়েছে – এই অভিযোগ তুলে পরবর্তী দফাগুলোতে যাতে প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যায় তার জন্য কমিশনের কাছে আর্জি জানালেন সেই বিরোধী দলগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত বিরোধীদের এই দাবিকে কমিশন আদৌ মান্যতা দেয় কিনা এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -