এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিজেপি-বাম-কংগ্রেসকে একসঙ্গে বাংলা থেকে বিদায়ের কথা কর্মীদের জানালেন তৃণমূল নেত্রী

বিজেপি-বাম-কংগ্রেসকে একসঙ্গে বাংলা থেকে বিদায়ের কথা কর্মীদের জানালেন তৃণমূল নেত্রী

 

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে 42 এ 42 এর শ্লোগান তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিরোধীদের দাপটে 42 টি আসন দখল করা তো দুরস্ত, উল্টে 22 টি আসনেই আটকে যেতে হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। যেখানে দক্ষিণবঙ্গে তৃণমূল কিছুটা ভালো ফল করলেও উত্তরবঙ্গে একটি আসনও দখল করতে পারেনি তারা। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের গড় বলে পরিচিত হলেও এবার সেখানে ফুটে গিয়েছে পদ্মফুল।

আর এই পরিস্থিতিতে ভোট পরবর্তী ফলাফল পর্যালোচনায় নিজেদের খারাপ দিকগুলো যেমন উঠে এসেছে, ঠিক তেমনই বাম এবং কংগ্রেসের ভোট বিজেপিতে যাওয়ার জন্যই তৃণমূলের এই ফল বলে দাবি করেছে একাংশ। আর এই পরিস্থিতিতে কোচবিহারে এসে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, সোমবার বেলা চারটার নাগাদ কোচবিহার রাজবাড়ি সংলগ্ন স্টেডিয়াম ময়দানে হেলিকপ্টার থেকে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখান থেকেই দলীয় কর্মী সভায় যোগ দিতে নেতাজি সুভাষ ইনডোর স্টেডিয়ামে পৌঁছে যান তিনি। আর এই কর্মীসভা থেকেই সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে জগাই, মাধাই এবং বিদায় বলেন কটাক্ষ করেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান।

এদিন তিনি বলেন, “আমি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বলেছিলাম, বাংলায় সিপিএম, কংগ্রেস আর বিজেপির হল, জগাই মাধাই আর গদাই। তাই এই জগাই, মাধাই এবং গদাইকে এবার একসঙ্গে বিদায় দিতে হবে। এটা আপনাদের চ্যালেঞ্জ।” আর তিন রাজনৈতিক দলকে কটাক্ষ করে এনআরসি থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গুলোকে বিক্রি করে দেওয়া নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে পরিচিত কোচবিহারের মানুষের ভাবাবেগ নিজেদের দখলে আনতে এনআরসি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আজকে যারা বড় বড় কথা বলছেন, তাদের বোঝা উচিত, উদ্বাস্তুদের দীর্ঘদিনের যে আন্দোলন, নিঃশর্তে জমির দলিল দিতে হবে, সেটা আমি করে দিয়েছিলাম। অন্য কেউ করেনি। এর জন্য আমাকে অনেকে মার খেতে হয়েছিল। আমাদের সরকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনির তার অধিকার দিয়ে দেবে। তারাই তো নাগরিক। নতুন করে অধিকার পাওয়ার কি আছে! এনআরসির বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে আসব। ওটা কি! আর একটা খুড়োর কল। আমি বলছি, বাংলায় আপনারা সবাই সিটিজেন। আপনারা সবাই নাগরিক। আপনাদের সকলের অধিকার আছে।”

এরপর বিলগ্নীকরন নীতিকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি করে দিচ্ছে, রেল বিক্রি করে দিচ্ছে, বিএসএনএল বিক্রি করে দিচ্ছে, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি করে দিচ্ছে। 45 টি সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছে। কোনোদিন শুনেছেন, এয়ার ইন্ডিয়া, যা ইন্ডিয়ার নামের সঙ্গে যুক্ত, সেই এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি হয়ে যাচ্ছে! বিএসএনএলের বেসরকারিকরণ করছে। তাহলে বাকি কি থাকল কমরেড!”

এদিকে এদিন যেমন বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক তেমনই নিজের দলের গোষ্ঠী কোন্দল কমাতেও একগুচ্ছ বার্তা দেন তিনি। কোচবিহারে নেতায়-নেতায় দ্বন্দ্ব কমাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের দলে কোনো গ্রুপ নেই। থাকবেও না। একটাই গ্রুপ, তৃণমূল কংগ্রেস, জোড়া ফুল, তেরেঙ্গা ঝান্ডা। আর কোনো গ্রুপ নেই। তৃণমূল কংগ্রেসে নেতা বড় নয়, কর্মীরা বড়। কর্মীরাই সম্পদ। আমাদের দল কর্মীদের উপরে নির্ভর করে চলবে। আমাদের প্রত্যেকটা এমএলএ, এমপি, যারা আছেন আমাদের কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের সদস্য, শাখা সংগঠন সবাই একসাথে কাজ করছেন। এই কাজটা যদি ছয় মাস আগে করতেন, তাহলে বিজেপির গুন্ডারা এত আসন জিতে নিতে পারত না। আগামী দিন চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। স্বপ্ন দেখতে শিখতে হবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোচবিহারের মাটিতে পা রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন দলের মধ্যে একতার ছবি দেখলেও লোকসভা নির্বাচনের সময় এখানকার নেতাদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল, তা তৃণমূলকে ভরাডুবির দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। আর অতীতের সেই কথা তুলে ধরে বিজেপির কুকীর্তির কথা বলে বাম কংগ্রেস এবং সিপিএমকে জগাই, মাধাই, গদাই বলে অভিহিত করে বিদায়ের ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তবে কোচবিহারে যেভাবে বিজেপি জাঁকিয়ে বসেছে, তাতে তৃণমূল নেত্রীর এই বিদায়ের ডাক আদৌ কতটা কাজে দেবে! নাকি বিরোধীদের আরও বেশি করে স্বাগত জানাবে! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!