এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > হেভিওয়েট বিজেপি সাংসদের গনআন্দোলনের জেরে এবার কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার হুমকি খনি সংস্থার

হেভিওয়েট বিজেপি সাংসদের গনআন্দোলনের জেরে এবার কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার হুমকি খনি সংস্থার


কয়লা নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ কয়লা খাদানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল বিরোধীদলগুলো। সরকারের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ করতে দেখা যায় ভারতীয় জনতা পার্টিকে। আর এবার সাংসদ সৌমিত্র খার নেতৃত্বে ফের ব্যাহত হয় কয়লা উত্তোলনের কাজ। আর এলাকাবাসীর আন্দোলনের জেরে উৎপাদন শুরু হয়নি বড়জোড়া ট্রান্সদামোদর কয়লা খনিতে।

কয়েক মাস আগেই বাগুলিতে নর্থ খোলামুখ কোলিয়ারিতে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছে পিডিসিএল। কিন্তু প্রথম থেকেই বিভিন্ন দাবিতে শাসক বনাম বিরোধী বিক্ষোভ পাল্টা বিক্ষোভ ইত্যাদি আন্দোলনের জেরে বারবার ব্যাঘাত ঘটেছে কয়লা উত্তোলনের কাজে।

সূত্রের খবর, সোমবার সকালে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের নেতৃত্বে গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে দেয় বিক্ষুব্ধরা। আর এই আন্দোলনের জেরে কয়লা খনির কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। আন্দোলনের কর্মসূচিতে বিভিন্ন দাবিদাওয়া ছিল। যেমন, স্থানীয়দের কাজে নিয়োগ। কিন্তু ক্ষতিপূরণের নির্দিষ্ট প্যাকেজ ঘোষণার পরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছে কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থা।

এদিনের এই অবস্থান বিক্ষোভে সাংসদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বড়জোড়া ব্লকের নেতা সুজিত অগস্থি, শ্যামাপদ রায় সহ প্রায় আড়াই হাজার কর্মী সমর্থক। অন্যদিকে কোলিয়ারি ভূমি ও বাস্তুহারাদের একাংশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই বিক্ষোভ বিশাল আকৃতি ধারণ করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের থেকে যে সমস্ত অদক্ষ কর্মীদের দরকার পড়বে তা নেব, সেই প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। জেলা প্রশাসন সেই তালিকা তৈরি করলেই আমরা প্রয়োজন মতো সেখানে লোক নিয়োগ করব। কিন্তু আমাদের 40 জন প্রয়োজন আর 500 জন লোক যদি দাবি তোলে, তাহলে সেই দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। যে সমস্ত রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা চলছে তা যদি বন্ধ না হয়, তাহলে আমাদের কাছে কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

 

 

 

কারণ যেভাবে আমাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত 23 আগস্ট বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বাগুলি, লহরাবনি, হিন্দুডাঙ্গা, মনোহর প্রভৃতি গ্রামীণ এলাকার ক্ষেতমজুরদেরকে নিয়ে কোলিয়ারিতে গিয়ে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখিয়ে ডেপুটেশন দিয়েছেন।

এই ডেপুটেশনের দাবি ছিল, কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ। একদিকে পুনর্বাসন ব্লাস্টিংয়ের কারণে এলাকার যে সমস্ত বাড়িতে ফাটল ধরেছে, তাদের ক্ষতিপূরণ, বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন ইত্যাদি একগুচ্ছ দাবিদাওয়া, অন্যদিকে স্থানীয় বেকারদের কাজে নিযুক্ত করা এবং গ্রামের কর্মকারপাড়াটিকে অধিগ্রহণ করে তাদের পুনর্বাসন ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ব্যবস্থা করা ইত্যাদিও তাদের মধ্যে ছিল।

 

জানা যায়, এদিন বিজেপি সাংসদ পিডিসিএল কতৃপক্ষকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেন, 15 দিনের মধ্যে দাবিগুলির নিষ্পত্তি না হলে তিনি নিজে গণঅবস্থানে বসবেন। আর এরপরই জেলা প্রশাসন রীতিমতো বৈঠক করে ক্ষতিপূরণের জন্য নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

পাশাপাশি বাগুলিতে 40 জনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু প্রশাসনের দেওয়া এই বর্ধিত দামে কিছুতেই রাজি নন চাষিরা। বাগুলি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম মন্ডল এবং শশাঙ্ক মন্ডল বলেন, “ট্রান্স দামোদর কোলিয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমি তিন ফসলি। ওরা একর প্রতি জমির প্রকৃত মূল্য দাবি করেছেন 40 লক্ষ টাকা। আমাদের জমি এক ফসলি। তাই আমরা কৃষি জমির দাম একর প্রতি 30 লক্ষ টাকা দাবি করেছি।”

এদিন এই ধর্নায় সামিল হওয়া মনোহর গ্রামের সুপ্রিয়া কর্মকার বলেন, “আমাদের পাড়া একেবারেই কোলিয়ারির মাঝখানে অবস্থিত। চারদিকে ব্লাস্টিং হচ্ছে। ঘরবাড়িতে ফাটল ধরেছে। আমাদের দাবি, কর্মকার পাড়াটিকে অধিগ্রহণ করে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন কতৃপক্ষ।” এদিকে এই গোটা ব্যাপারটা নিয়ে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, “যাদের জমি, বাড়ি গেল, তাদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না। জমির দাম নামমাত্র বাড়িয়ে আসল ক্ষেতমজুরদের নামের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। 12 জনের যে পরিচালন কমিটি রয়েছে, তাতে তৃণমূল নেতাদের কথামত প্রশাসন ক্ষেতমজুর জমি হারা ও বেকারদের ভুয়ো তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সংসদ সদস্যের আরও অভিযোগ, কয়লা পরিবহনে তৃণমূল নেতারা কাটমানি খাচ্ছেন। তাই এদিন গণঅবস্থান করলাম। প্রয়োজনে লাগাতার অবস্থান চলবে।”

তবে ভারতীয় জনতা পার্টির এই অভিযোগের ভিত্তিতে বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখানে বিজেপি নেতারা সিপিএম কায়দায় হার্মাদ বাহিনি তৈরি করে বড়জোড়া শিল্পখনি এলাকায় সুস্থ কর্মসংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চাইছে। বিজেপি নেতারা কোলিয়ারি থেকে তোলা আদায় করছে এবং তোলা আদায়ের জন্য নতুন নতুন কৌশল নিয়েছেন। আমরা ভূমিহারা ক্ষেতমজুর ও স্থানীয় বেকারদের পাশে আগেও ছিলাম, আগামীতেও থাকব। সবকিছু মিলিয়ে কয়লাকে কেন্দ্র করে এখন রাজনীতি যে ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে, সেই বিষয়ে একমত প্রায় সকলেই। আগামী দিনে এই জট কাটিয়ে শিল্পাঞ্চল স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে কিনা, সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!