এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > সন্ত্রাস নিয়ে তীব্র বাকযুদ্ধ বিজেপি সাংসদ ও তৃণমূল বিধায়কের! জিতবেন কে? চর্চা উত্তরবঙ্গে

সন্ত্রাস নিয়ে তীব্র বাকযুদ্ধ বিজেপি সাংসদ ও তৃণমূল বিধায়কের! জিতবেন কে? চর্চা উত্তরবঙ্গে

লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রাক্তন যুবনেতা নিশীথ প্রামাণিক লোকসভায় বিজেপির প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আর বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে নিজের জয় নিশ্চিত করে নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। এদিকে নিশীথ প্রামাণিকের মত যুবনেতা বিজেপি সাংসদ হওয়ার পর থেকেই এই জেলায় তৃণমূলের অস্বস্তি বজায় ছিল।

লোকসভা নির্বাচনের আগে এবং পরে বিভিন্ন সময়ে উত্তপ্ত হতে দেখা যেত কোচবিহার জেলার দিনহাটা বিধানসভার বিভিন্ন এলাকাকে। মূলত ভেটাগুড়ি এলাকায় লাগাতার সন্ত্রাসে আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিল সেখানকার মানুষ। কখনও তৃণমূল, আবার কখনও বা বিজেপি, কারা পঞ্চায়েতের দখল নেবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল সন্ত্রাস। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, বোমা, গুলির নিত্যনৈমিত্তিক আওয়াজ শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন সাধারন মানুষ।

আর এবার অবশেষে ভেটাগুড়িতে শান্তি স্থাপন করতে বোধোদয় হল দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর। বস্তুত, এই ভেটাগুড়িতেই কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি। তাই বিজেপিকে চাপে রাখতে এবং সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে “সন্ত্রাস মুক্ত” করার ডাক দিলেন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি ফেসবুকে উদয়নবাবু লেখেন, “খুব শীঘ্রই ভেটাগুড়িকে সন্ত্রাসমুক্ত করব। কে পাশে থাকবেন, আর কে বিরোধিতা করবেন, তাড়াতাড়ি ঠিক করে ফেলুন।” শুধু তাই নয়, আগামী 6 ডিসেম্বর ভেটাগুড়ি চলোরও ডাক দিয়েছেন দিনহাটার এই তৃণমূল বিধায়ক। আর উদয়নবাবুর এহেন সিদ্ধান্তকে ঘিরেই এবার তার সাথে তীব্র তরজায় জড়িয়ে পড়েছেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “ভেটাগুড়িকে নানাভাবে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই জনপ্রতিনিধিদের উপরে আক্রমণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন বাড়িঘর ভাঙ্গা হচ্ছে। বোমা ফাটানো হচ্ছে। মানুষের মধ্যে একটা ত্রাসের সৃষ্টি করছে। কাজেই সেই এলাকার বিধায়ক হিসেবে আমি চাই, এই জায়গা থেকে মানুষ বেরিয়ে আসুক। একটু দেরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এলাকাকে সন্ত্রাস মুক্ত করতেই হবে।”

তিনি আরও লেখেন, “আমি যাব। কে যাবেন, না যাবেন সেইজন্য আমি বলেছি। কে সমর্থন করবেন, কে বিরোধিতা করবেন সেটা ঠিক করুন। ভেটাগুড়ির মানুষের কাছে গিয়ে দাঁড়াব। কারা সন্ত্রাস করছে, কারা ঠেকাবে, সে সবই প্রমাণ হয়ে যাবে। আমি এতে প্রচুর সাড়া পাচ্ছি।” আর উদয়নবাবু বিজেপি সাংসদের গড়ে এইভাবে সন্ত্রাস মুক্ত করার ডাক দিয়ে আদতে সেই নিশীথ প্রামাণিককেই চাপে ফেলে দিতে চাইছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।

যার পাল্টা জবাব দিয়েছেন সেই কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামানিক। এদিন তিনি বলেন, “ভেটাগুড়িতে এখন কোনো সন্ত্রাস নেই। ভেটাগুড়ি এক নম্বর অঞ্চল তৃণমূলের কবজা থেকে বিজেপির দখলে চলে যাওয়ায় এখন সেখানে তো কোনো সন্ত্রাস হচ্ছে না। তার মানে উনি কি সন্ত্রাস করতে আসতে চান! সন্ত্রাস ওনাদের দল করেছে। ওদের সন্ত্রাস ওনারাই বন্ধ করুন। তাহলেই তো সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “উনি যে অভিযান ভেটাগুড়িতে করতে চাইছেন, এবার সেই অভিযান দিনহাটায় হবে। উনি যেন তা সামাল দেন।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, রাজনৈতিক তরজা চলবে। কিন্তু তৃণমূল বিধায়কের এই ভেটাগুড়ি অভিযান সন্ত্রাসমুক্ত করার অভিযান বলে দাবি করা হলেও আদতে এই অভিযানকে কেন্দ্র করে যদি আবার সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়, তাহলে তা চরম আকার ধারণ করবে বলে মনে করছে একাংশ।

সব মিলিয়ে তৃণমূল বিধায়ক এবং বিজেপি সাংসদের ভেটাগুড়িকে নিয়ে এই তরজা, পাল্টা তরজা দিনহাটাকে ফের অশান্ত করে তোলে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে কার্যত কোনো নাম্বার দিতেই রাজি ছিল না তৃণমূল। কিন্তু লোকসভায় ১৮ আসন ছিনিয়ে নেওয়ার পর – সব হিসেব উল্টে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। সম্প্রতি উপনির্বাচনে জিতে অবশ্য মনোবল ফিরে পেয়েছে শাসকদল। আর তাই তৃণমূল-বিজেপি এই তর্জা আগামীদিনে আরও তীব্র হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!