প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2021 এর আগে পশ্চিমবঙ্গকে যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাড়তি ভাবে গুরুত্ব দিতে চাইছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যেই বঙ্গের বিজেপি নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে নানা বৈঠক হয়েছে। সেখানে ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়েছে, আগামী দিনে তৃনমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে কিভাবে বাংলার ক্ষমতা দখল করা যায়! ইতিমধ্যেই খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, আগামী কালীপুজোর পরই বাংলায় আসতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতারা।

আর তারা বাংলা এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে কি কি কথা বলেন এবং বিজেপি নেতা কর্মীদের কিভাবে উজ্জীবিত করেন, তা অবশ্যই দেখার বিষয় রাজনৈতিক মহলের কাছে। আর এরই মাঝে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কি কোনো বিশেষ অবস্থান নিতে পারে! তা নিয়ে একটি বৈঠকের পর নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অমিত শাহ এখন আর বিজেপির দায়িত্বে নেই। কিন্তু বাংলার দিকে আগাগোড়াই নজর ছিল বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় 18 টি আসন পাওয়ার পর অমিত শাহ বাংলার নেতাদের আরও উৎসাহ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। ফলে পরবর্তী সময় কালে তিনি সর্বভারতীয় সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে গেলেও এবং জেপি নাড্ডা দায়িত্ব পেলেও তিনি যে পশ্চিমবাংলা থেকে চোখ সরাতে চাইছেন না, তা নানা কার্যকলাপে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অমিত শাহ।

সামনেই 2021 এর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। তাই তার আগে এখন বাংলার বিজেপি নেতৃত্বের নিয়ে বৈঠক করে দলের সংগঠনকে আরো চাঙ্গা করার দিকে জোর দিতে চলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একাংশ বলছেন, বিজেপিতে একব্যাক্তি, একপদ রয়েছে। স্বভাবতই যখন যারা যে দায়িত্বে থাকেন, তখন তারা সেই দায়িত্বের দিকেই নজর দেন। কিন্তু অমিত শাহ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে সরে গেলেও, তিনি যেভাবে বাংলা নিয়ে এখন নাক গলাতে শুরু করেছেন, তাতে বাংলা যে বিজেপির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বাংলার আইন শৃংখলা অবনতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চিঠি দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। যেখানে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তীব্র রাজনৈতিক হিংসা চলছে। পাশাপাশি রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের কোনো পরিস্থিতি নেই বলেও দাবি করা হয়েছে বিজেপির তরফে।

অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বাংলার অবস্থা তুলে ধরে বঙ্গ বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বাংলা নিয়ে নতুন কোনো ভাবনা ভাবাতে চাইল। তাহলে কি এবার বাংলার নেতাদের চিঠি পেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলার জন্য বিশেষ কোনো কিছু ভাবতে শুরু করেছেন! এখন তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। অনেকে বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির পক্ষ থেকে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেভাবে বিজেপি এই ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।

সেদিক থেকে বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে যেভাবে বিধানসভা নির্বাচনে 6 মাস বাকি থাকতে না থাকতেই এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হল, তাতে গোটা পরিস্থিতি সেই দিকেই যাচ্ছে বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, “আমরা তো অমিতজিকে আগেই জানিয়েছিলাম পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত হিংসাত্মক এবং এখানে নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই। অমিতজি বৈঠক করলে সেবিষয়ে কথা হতে পারে।”

সূত্রের খবর, আগামী অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বাংলার বিজেপি নেতাদের বৈঠক হতে পারে। যেখানে উপস্থিত থাকতে পারেন বিজেপির সর্বভারতীয় চাণক্য তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এই বৈঠক ঘিরেই এখন ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তাহলে কি এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে বাংলার ব্যাপারে আরও বেশি করে নিজেদের কথা তুলে ধরবেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা! আর সেই বৈঠক থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, আগামী দিনে বাংলা নিয়ে কি ভাবনা রয়েছে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের?

এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, “সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে কথা হবে। বিধানসভা নির্বাচন বেশি দূরে নয়। তার প্রস্তুতি এবং নানা কর্মসূচিও নিয়েও কথা হবে।” আর বাংলার বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই বৈঠক এখন উৎসাহ আবহ তৈরি করছে বঙ্গ বিজেপির নেতা কর্মীদের মধ্যে। সব মিলিয়ে দেখার বিষয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপি রাজ্য নেতাদের বৈঠকে কি উঠে আসে এবং তারপর আগামী কালীপূজার পর অমিত শাহ রাজ্যে এসে তৃণমূলের অস্বস্তি কতটা বাড়িয়ে দেন, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।